বাসার ভেতরেও জুতা পরা জরুরি কেনো?
- ওমেন্স কর্নার
- আগস্ট ১৩, ২০২৪
অধিকাংশ সময় বাড়িতে থাকার সময়টুকু কেউ জুতা ব্যবহার করার প্রয়োজন বোধ করেন না। যার মারাত্মক প্রভাব পড়ে পায়ে। ব্যথা, স্ট্রেন এবং এমনকি স্ট্রেস ফ্র্যাকচারের মত সমস্যা নিয়ে রোগীরা ভিড় করছেন ডাক্তারদের কাছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমানে মানুষের ঘরে বসে কাজের সংখ্যা বেড়ে গেছে। বাসাবাড়িতেও জুতা পরার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।
সম্প্রতি টাইম ম্যাগাজিনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই সকল সমস্যার যে সমাধানের কথা বলা হয়েছে তাহলো- বাসায় জুতা ব্যবহার করা। আপনি বাইরে বের হওয়ার সময় যেমন জুতা পরেন তেমনি বাসায়ও ব্যবহার করতে হবে জুতা।
শক্ত মেঝে পায়ের ক্ষতি করে
বাসায় জুতা না পরার অভ্যাস অনেকেরই। বাড়িতে রান্নাঘরে যাচ্ছেন, বাথরুমে যাচ্ছেন, সিঁড়ি বেয়ে উঠছেন কিন্তু পায়ে নেই জুতা। বাসায় থাকলেও খালি পায়ে এমন কত চলাফেরা হয় তার পরিমাণ সম্পর্কে অনেকেরই ধারণা থাকে না।
নিউ ইয়র্ক সিটির পা ও গোড়ালি বিশেষজ্ঞ জ্যাকি সুতেরা বলেন, ‘শক্ত মেঝে, বিশেষ করে যেখানে কার্পেট জাতীয় কিছু বিছানো থাকে না সেগুলোতে সপ্তাহখানেক হাঁটলেই পায়ের গোড়ালির নিচে ব্যথা শুরু হয়।’ প্রাথমিকভাবে রোগীরা পায়ের গোড়ালি ব্যথা নিয়ে আসেন। তবে বেশির ভাগ রোগীই আসেন হাঁটু, নিতম্ব এবং পিঠে মারাত্মক ব্যথাসহ। সেই সাথে গোড়ালি শক্ত হয়ে যাওয়া, ফুলে যাওয়া এবং ছুরিকাঘাতের মত ব্যথা অনুভবও লক্ষ্য করা যায়। তিনি বলেন, ‘আমাদের মনে রাখা প্রয়োজন আমরা কোনো নরম ঘাসযুক্ত মাঠ বা সৈকতে হাঁটছি না; বরং এটি প্রকৌশলীর তৈরি করা শক্ত একটি মেঝে।’
আঘাতের ঝুঁকি, দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে অথবা বসে কাজ করার পর পায়ের ক্লান্তি দূর করতে ও জীবাণু থেকে রক্ষা পেতে জুতার ব্যবহার জরুরি।
আরো পড়ুন:
পোশাক থেকে সুগন্ধির দাগ তোলার টিপস জেনে নিন
পোশাক থেকে ঘামের দাগ উঠছে না? জেনে নিন করণীয়
বর্ষায় জুতা দুর্গন্ধমুক্ত রাখবেন যেসব উপায়ে
বেশিরভাগ জিন্স নীল হওয়ার কারণ কী?
মেঝেতে বাচ্চাদের খেলনা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে, দৌড়ে চলাচল করতে গিয়ে তার উপর পা পড়ল। অথবা দ্রত রুম থেকে বের হতে গিয়ে ফার্নিচারের কোনায় বেধে গেলো পায়ের আঙুল, আশা করা যায় আপনার তীব্র চিৎকার প্রতিবেশীরা শুনতে পাবেন। এই ধরনের আঘাতগুলি বিশেষত ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য ঝুঁকির কারণ হতে পারে।
এরপরই আসে দীর্ঘসময় দাঁড়িয়ে কাজ করার বিষয়। অনেকের কর্মস্থলে দিনের বেশিরভাগ সময় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। কর্মস্থলে জুতা ছাড়া দাঁড়িয়ে কাজ করার ফলে দ্রুত পায়ে ক্লান্তি চলে আসা এবং প্ল্যান্টার ফ্যাসাইটিসের মতো অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। এছাড়াও জুতার পাশাপাশি একটি অ্যান্টি-ফ্যাটিগ ফ্লোর ম্যাট ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি পায়ের ক্লান্তি উপশম করে এবং চাপ সমানভাবে বিতরণ করতে পারে।
অবশ্যই, সবাইকে সারাদিন দাঁড়িয়ে থাকতে হয় না। যারা দীর্ঘসময় বসে কাজ করেন এবং পা ঝুলিয়ে রাখেন তাদেরও জুতা পরিধানের পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। দীর্ঘসময় বসে থাকার ফলে অনেকে এক পা টান দিয়ে নিজের নিচে নিয়ে বসেন। গোড়ালির চারপাশে এমন টেন্ডন রয়েছে যা প্রসারিত হতে পছন্দ করে না। কয়েক ঘণ্টা শরীরের নিচে এক পা দিয়ে বসে থাকার ফলে টেন্ডোনাইটিস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বাইরের জীবাণু ঘরে না ঢুকাতে চাইলে দুটি পৃথক জুতা রাখুন। বাইরে যাওয়ার সময় একটি জুতা পরে বের হবেন, বাসায় ঢুকে আবার বাসার জন্য রাখা জুতাটা পরে ফেলবেন।
এতটুকু সতর্কতার ফলে আমরা ঝুঁকিপূর্ণ অনেক সমস্যা থেকে রেহাই পেতে পারি।