শিশুরা ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর পর কেঁদে ওঠে কেন?
- ওমেন্স কর্নার
- মার্চ ২০, ২০২৩
শিশু যখন মায়ের গর্ভে থাকে তখন তার শ্বাস কার্য চালানোর জন্য ফুসফুসের প্রয়োজন হয় না। মায়ের দেহ আম্বিলাইক্যাল কর্ড বা নভিরজ্জুর মাধ্যমে অক্সিজেন ও কার্বন ডাই অক্সাইডের আদানপ্রদান হয় এবং প্লাসেন্টার মাধ্যমে ব্যাপন প্রক্রিয়ায়ও কিছুটা প্রয়োজনীয় শ্বাস বায়ু আদান প্রদান হয়। ফলে এই সময় ফুসফুস দুটির আলভিওলাইগুলো চুপসে থাকে।
কিন্তু যখন সন্তান মায়ের দেহ থেকে বাইরে আসে, তখনই নভিরজ্জুটি কেটে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়। ফলে তখনই ফুসফুস দুটির অ্যালভিওলাইগুলোতে বাইরে থেকে প্রচুর পরিমাণে অক্সিজেন প্রবেশ করে। ফলে হঠাৎ আলভিওলাইগুলো ফুলে ওঠায় যে আঘাতের সৃষ্টি হয়, তার কারণেই শিশু কেঁদে ওঠে।
অর্থাৎ সদ্যজাত শিশুর কেঁদে ওঠা একটি ভালো লক্ষণ। এর থেকে স্পষ্ট হয় যে সদ্যজাত শিশুর ফুসফুস দুটি সঠিকভাবে কাজ করছে।
আরো পড়ুন : খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে স্ট্রেস কমান
এখন অনেকসময় দেখা যায় শিশু একবার মাত্র কেঁদে উঠেই থেমে যায় এবং তাঁর হাত পা আরষ্ঠ হয়ে ধীরে ধীরে নীল হয়ে যেতে থাকে।
এর কারণ হলো মানুষের ফুসফুসের আলভিওলাই গুলোর টাইপ ২ এপিথেলিয়াল কোষ থেকে surfactant নামক একপ্রকারের তরল নিঃসৃত হয় । যার রাসায়নিক নাম ডাইপলমিটোইল ফসফাটিডিল কোলিন। এই রাসায়নিকটি আলভিওলাইগুলোর অভ্যন্তরের তলে পৃষ্ঠটান কম করে। ফলে রক্তনালী থেকে জল আলভিওলাইগুলোর অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে পারে না।
কিন্তু সদ্যজাত শিশুর ফুসফুসে এই রাসায়নিকটি তৈরি হয় না। ফলে একবার শ্বাস নেওয়ার পরই যখন আলভিওলাই গুলো বায়ুপূর্ণ হয় তখনই রক্তনালী থেকে পানি প্রবেশ শুরু করে। ফলে আলভিওলাই গুলো পানিপূর্ণ হতে থাকে। এর ফলে ফুসফুসের মাধ্যমে শ্বাস কার্য ব্যাহত হয়। ক্রমশ রক্তে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বাড়তে থাকে। তখন শিশুও ক্রমশ মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যায়। এরকম শিশুকে তৎক্ষণাৎ ভেন্টিলেশনে রাখা প্রয়োজন হয়।
আরো পড়ুন : দীর্ঘদিন পর পর সহবাসে প্রচন্ড ব্যথা হয়, এর কারণ কী?