জরায়ু মুখে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কাদের বেশি?
- কবিতা আক্তার
- এপ্রিল ১৬, ২০২৩
নারীরা যেসব ক্যান্সারে বেশি আক্রান্ত হন তার মধ্যে জরায়ু ক্যান্সার অন্যতম। ২০২০ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী আনুমানিক ছয় লাখ চার হাজার নারী জরায়ু ক্যান্সারে ভুগছেন।
যারা কম বয়সে বাচ্চা নেয়, যারা অনিরাপদ সঙ্গম চর্চা করে, শারীরিক সম্পর্কের জন্য যাদের একাধিক সঙ্গী থাকে, শারীরিক সম্পর্কের সময় যারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে না ও যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম এমন নারীদের ক্ষেত্রে এই ভাইরাস ক্যান্সারে রূপান্তরিত করে।
আরো পড়ুনঃ জরায়ু ক্যান্সার প্রতিরোধক টিকা নিয়েছেন কি?
সম্প্রতি একটা গবেষণা পত্রে প্রকাশিত হয়েছে, মানসিক সমস্যা বা স্নায়ুর সঙ্গে যুক্ত মনের রোগে আক্রান্ত নারীদেরও জরায়ু মুখে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি দ্বিগুণ।
সুইডেনের ক্যারোলিনক্সা ইনস্টিটিউট এর গবেষকরা জানান, নারীদের জরায়ু মুখে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমানো যায় নিয়মিত পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে।
১৯৪০-১৯৯৫ সালের মধ্যে জন্মেছে এমন চল্লিশ লাখ নারীর উপর পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত এমন বহু নারীর শরীরে এই ক্যান্সারের লক্ষণ দেখা গিয়েছে।
এই রোগে আক্রান্ত নারী নিয়মিত চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার কথা মনেই রাখতে পারেন না। ব্যক্তিগত ভালো-মন্দের খেয়াল তাদের থাকে না।
আরো পড়ুনঃ জরায়ু ক্যানসারের প্রধান লক্ষণ কী কী?
এছাড়া গবেষকরা আরো দুটি বিষয়ের কথা উল্লেখ করেছেন, যেখান থেকে জরায়ু মুখের ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।
ধূমপান ও জন্মনিয়ন্ত্রণের বড়ি, এই দুটি অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারে ও নারীরা জরায়ু মুখে ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারেন। তবে এই বিষয়ে নিশ্চিত হতে গেলে আরো গবেষণার প্রয়োজন আছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
জরায়ুর মুখের লক্ষণ-
জরায়ু মুখে ক্যান্সারের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো ৭০ ভাগ ক্ষেত্রে এই রোগ অ্যাডভান্সড স্টেজে ধরা পড়ে। প্রথমদিকে এই রোগের কোন লক্ষণ থাকে না।এরপর যখন লক্ষণ প্রকাশ পায় তখন সেটা অ্যাডভান্সড হয়ে যায়। এ কারণে জরায়ু ক্যান্সারকে সাইলেন্ট কিলার বলা হয়ে থাকে।
১. নিম্ন অঙ্গের চারপাশে চাপ লাগা কিংবা ঘনঘন মূত্রত্যাগ করা।
২. গ্যাস, বদ হজম, কোষ্ঠকাঠিন্য। হালকা খাবারের পর পেট ভর্তি লাগা, পেটে অস্বস্তি লাগা ইত্যাদি পেটের কোন সমস্যা খুব বেশি হলে তা জরায়ু ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।
৩. পেটে অতিরিক্ত ব্যথা কিংবা পেট ফুলে থাকা, সঙ্গে বমি বমি ভাব কিংবা বারবার বমি হওয়া। এর ফলে খিদে কমে যায়।
আরো পড়ুনঃ প্যাপ টেস্ট - জরায়ু মুখের ক্যান্সার নির্নয় করে !
৪. অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি পাওয়া বা হঠাৎ করে ওজন কমে যাওয়া।
৫. প্রথমদিকে রোগীর সাদা স্রাব হয়। অনেক সময় গন্ধযুক্ত বা রক্ত মিশ্রিত সাদা স্রাব হয়।
৬. যৌন সম্পর্কের রক্ত যাওয়া জরায়ু ক্যান্সারের এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ। এজন্য সহবাসে কারো রক্ত গেলে দ্রুত ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।
৭. মাসিক অনিয়মিত হওয়া। দুই মাসিকের মাঝে অনিয়মিত রক্তচাপ অথবা মাসিক এত বেশি অনিয়মিত হচ্ছে যে মাসিকের তারিখ সনাক্ত করা যাচ্ছে না।
৮. মেনোপজ হওয়ার পরও যদি কোন নারী রক্তক্ষরণ দেখা যায় তাহলে সেটিও জরায়ু ক্যান্সারের গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ। সেক্ষেত্রে দ্রুত তাকে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।
৯. এছাড়া তলপেটে ব্যথা, ব্যাক পেইন ভাপা ফুলে যাওয়া ও পায়ে পানি আসা জরায়ু ক্যান্সারের অ্যাডভান্সড স্টেজের লক্ষণ।