নবজাতকের জন্য শালদুধের গুরুত্ব!

  • রেজবুল ইসলাম
  • মে ৫, ২০১৮

জন্মের ঠিক পর থেকে শুরুর ২/৩ দিন পর্যন্ত মা তার স্তন থেকে যে দুধ নিঃসরণ করে তাকে শালদুধ বলা হয়। শালদুধ নিয়ে অশিক্ষিত বা অল্পশিক্ষিত জনগোষ্ঠিতে অনেক কুসংস্কার আছে এজন্য অনেক নবজাতকই এমন দূর্লভ, অমূল্য একটি খাদ্য থেকে জন্মের পরপরই বঞ্চিত হয়ে থাকে।

প্রকৃতপক্ষে শালদুধে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান (উচ্চমাত্রার আমিষ, স্নেহ ও শর্করা) ছাড়াও রয়েছে শিশুর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার বেশ কিছু জরুরী উপাদান যার একটি ‘ইমিউনোগ্লোবিউলিন এ’ নামে পরিচিত।

মায়ের দুধের উপকারিতা : শিশুর জন্য মায়ের দুধের উপকারিতা অনেক। তা হলো শালদুধ অত্যন্ত পুষ্টিকর। মায়ের দুধে অ্যান্টিবডি থাকে। তা শালদুধে বিদ্যমান। এ অ্যান্টিবডি শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তার অসুখ-বিসুখ ডায়রিয়া, কান পাকা, সর্দি-কাশি, চুলকানি, নিউমোনিয়া, সেপসিস ইত্যাদি হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়। এ ছাড়া এতে থাকে ব্যাপক ভিটামিন ‘এ’। পরিমাণে কম হলেও এ শালদুধ প্রথম তিন দিনের জন্য যথেষ্ট। জন্মের পর পরই শিশুকে মায়ের বুকে দিলে সে দুধ চুষে খেতে শেখে এবং এতে মায়ের দুধও তাড়াতাড়ি নামে।

শালদুধ শিশুর প্রথম কালো পায়খানা বের হতে সাহায্য করে। তার শরীরে যতটুকু পানির দরকার, তা মায়ের দুধে বিদ্যমান। তাকে মায়ের দুধ খাওয়ালে মা ও শিশুর বন্ধন দৃঢ় হয়। মায়ের দুধ সব সময়ই নিরাপদ। এটি বাসি হওয়া বা সংক্রমিত হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। সব সময় সঠিক তাপমাত্রায় থাকে এবং এ দুধ তৈরি করার প্রয়োজন হয় না। মায়ের দুধ শিশুর চোয়াল এবং দাঁত ও মাড়ি গঠনে সহায়তা করে। মায়ের দুধ দেওয়ার সময় মায়ের শরীরের সঙ্গে লেগে থাকার কারণে শিশু মায়ের উষ্ণতা পায় যা তার জন্য খুব প্রয়োজন। অসুস্থতার সময় দিনে-রাতে ঘন ঘন মায়ের দুধ দিলে সে তাড়াতাড়ি অসুখ থেকে সেরে ওঠে এবং অপুষ্টি থেকে রক্ষা পায়।

মায়ের উপকারিতা : জন্মের পর পরই শিশুকে মা বুকের দুধ পান করালে শিশুর পাশাপাশি মায়েরও অনেক উপকার হয়। যেমন মায়ের জরায়ু দ্রুত সংকুচিত হয় এবং তাড়াতাড়ি আগের অবস্থায় ফিরে আসে। গর্ভফুল তাড়াতাড়ি বের হয় এবং রক্তপাত কমে। এ কারণেই বলে রাখা ভালো, সিজারিয়ান সেকশনের পর শিশুকে দুধ দেওয়ার জন্য মাকে সাহায্য করা উচিত। শিশুকে বুকের দুধ পান করালে মায়ের দুধ বেশি বেশি করে তৈরি হয় এবং মা-ও মানসিক তৃপ্তি পান।

আর/এস 

Leave a Comment