ঘরোয়া উপায়ে সাদা স্রাব নিয়ন্ত্রন করুন
- ওমেন্সকর্নার ডেস্ক
- নভেম্বর ২২, ২০১৭
হোয়াইট ডিসচার্জ বা সাদা স্রাবের সমস্যা অনেক সময় আপনাকে দুঃশ্চিন্তায় ফেলে দেয়। সময়মতো চিকিৎসা না করিলে আপনাকে হয়তো কোনো ভয়ংকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে। এই সমস্যার সমাধান আজ আপনাদের দিচ্ছি।
প্রথমেই বলি সাদা স্রাব মানেই খারাপ কিছু এমন কিন্ত নয়। নাক দিয়ে সর্দি পড়ার মতো শরীরের যে কোনও অংশ থেকে সিক্রেশন হতে পারে। তেমনই জরায়ুমুখ বা সার্ভিক্স থেকেও এক রকম সিক্রেশন হয়। একদম জলের মতো। কোনও দুর্গন্ধ থাকে না। সাধারণত দুটো পিরিয়ডের মাঝে ওভ্যুলেশনের সময় এই রকম তরল ডিসচার্জ হতে পারে। এটি স্বাভাবিক ব্যাপার।
কিন্তু জলের মতো না হয়ে অন্য কোনও রঙের স্রাব বেরোলে চিকিৎসার কথা ভাবতে হবে। কারণ জননঅঙ্গের ইনফেকশনের জন্য এরকম স্রাব বেরোয়। একে বলে পেলভিক ইনফ্ল্যামেটরি ডিজিস বা পিআইডি।
এই ইনফেকশন কেন হয় ?
যৌন মেলামেশার কারণে এই ইনফেকশন হয়ে থাকে । শারীরিক মেলামেশার সময় স্বামীর থেকে স্ত্রীর বা স্ত্রীর থেকে স্বামীর ইনফেকশন হতে পারে। অন্য যে কোনও অপারেশনের মতো স্ত্রীরোগের যে কোনও অপারেশনের পর ইনফেকশন হতে পারে। এমনকি গর্ভপাত করালেও বা প্রসবের পরও ইনফেকশনের সম্ভাবনা থাকে।
ইনফেকশনের লক্ষণসমূহ :
১. দুর্গন্ধযুক্ত সাদা, হলুদ, খয়েরি বা সবুজ রঙের স্রাব বেরলে।
২. চুলকানি হলে।
৩. তলপেটে অসম্ভব ব্যথা হলে।
৪. শারীরিক মেলামেশার সময়ে গোপনাঙ্গে ব্যথা হলে।
৫. দুই পিরিয়ডের মাঝখানে ইন্টারকোর্সের সময়ে রক্তপাত হলে।
৬. শরীরে সব মিলিয়ে একটা ভাল না-লাগার অনুভূতি হলে।
৭. জ্বরও আসতে পারে।
ঘরোয়া সমাধানঃ
আমলকী-
তিন গ্রাম আমলকী গুঁড়োর সঙ্গে ছয় গ্রাম মধু এক সঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। অথবা ২০ গ্রাম আমলকী রসের সঙ্গে আধ চা চামচ মধু মিশিয়ে নিন। টানা এক মাস দিনে দু’বার করে এই মিশ্রণ খেলে উপকার পাবেন।
কলা-
রোজ সকালে এক কাপের দুধের মধ্যে এক চমচ মধু মিশিয়ে খান। সঙ্গে একটা কলা। কাঁচকলা সেদ্ধ বা যে কোনও রান্নায় কাঁচকলা দিয়ে খেলেও উপকার পাবেন। দুটো পাকা কলার সঙ্গে তিন টেবিল চামচ মধুর মিশ্রণ বানিয়ে নিন। এই মিশ্রণ দিনে দুই থেকে তিন বার খেলেও কমবে হোয়াইট ডিসচার্জ।
বেদানা-
রস করেই খান বা চিবিয়ে খান, বেদানা দারুণ উপকারী। শুধু ফল নয়। বেদানা পাতাও উপকারী। ৩০টা বেদানা পাতার সঙ্গে গোটা গোলমরিচ মিশিয়ে জলে মেশান। ছেঁকে নিন। টানা তিন সপ্তাহ সকালে এই জল খেলে উপকার পাবেন।
শুকনো আদা গুঁড়ো-
দুই চা চামচ শুকনো আদা গুঁড়ো ২৫০ মিলি জলে ফুটিয়ে নিন। যত ক্ষণ না জল ঘন হয়ে অর্ধেক হয়ে যায়। টানা তিন সপ্তাহ আদা জল খেলে উপকার পাবেন।
তুলসি-
মধু ও তুলসি পাতার রস এক সঙ্গে মিশিয়ে রোজ সকাল-বিকেল টানা দু’সপ্তাহ খান। এক চা চামচ তুলসি পাতার রস, জিরে গুঁড়ো, দুধের দুধে মিশিয়ে তিন সপ্তাহ ধরে খান। মিছরির সঙ্গে তুলসি পাতার রস খেলেও উপকার পাবেন।
ফিটকিরি -
তুলসির মতোই ভাল অ্যান্টিসেপটিক ফিটকিরি । সিকি চামচ ফটকিরি গুঁড়ো জলে মিশিয়ে দিনে দু’বার খেলে ভ্যাজাইনাল ডিসচার্জ কমে যাবে।
ঢেঁড়স-
এক লিটার জলের মধ্যে ২০০ গ্রাম ঢেঁড়স সেদ্ধ করুন। জল ঘন হয়ে অর্ধেক হয়ে আসবে। টানা এক সপ্তাহ দিনে দুই থেকে তিন বার এই জল খান।
ভাতের মাড় -
ভাতের মাড় নিয়মিত খেলেও কমে যায় হোয়াইট ডিসচার্জ। মাড় ভাত খেতে পারেন রোজ। তবে এতে কিন্তু ওজন বাড়ে।
মেথি-
এক চামচ মেথি জলে ভিজিয়ে সারা রাত রেখে দিন। সকালে জল ছেঁকে এর মধ্যে আধ চামচ মধু মিশিয়ে খেয়ে নিন।
পেয়ারা-
এক লিটার জলে কয়েকটা পেয়ারা পাতা ফুটিয়ে জল অর্ধেক করে নিন। ছেঁকে নিন। এই জল দিনে দু’বার খেলে শুধু হোয়াইট ডিসচার্জ নয়, অনেক ইনফেকশনও কমে যাবে।
তথ্য এবং ছবি : গুগল