আক্কেল দাঁতের যন্ত্রণায় অস্থির হয়ে গেছেন? জানুন সমাধান
- ওমেন্সকর্নার ডেস্ক
- জুলাই ২, ২০১৮
কম-বেশি সকলেরই আক্কেল দাঁতের যন্ত্রণার সঙ্গে পরিচয় আছে! তাই একথা নিশ্চয় আর বলে দিতে হবে না যে একবার যদি এই যন্ত্রণা শুরু হয়, তখন শুধু দাঁত নয়, সারা মুখমন্ডল, কপাল, এমনকী চোখও কষ্ট হতে শুরু করে, মনে হয় কেউ যেন হাতুড়ি পেটাচ্ছে দাঁতের উপর। কি তাই না! এক্ষেত্রে বেশিরভাগই পেন কিলার খেয়ে কষ্ট লাঘব করার চেষ্টায় লেগে পরেন। আর কিছু মুষ্টিমেয় দুরুদুরু বুকে মাড়ি কেটে দাঁত বার করে নেন।
এখন থেকে আর এসব কিছুই করতে হবে না। জেনে নিন ঘরোয়া সমাধান -
শসা-আলু এবং বাঁধাকোপি: এই তিনটি সবজি আক্কেল দাঁতের যন্ত্রণা কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আসলে এই সবজিগুলির অন্দরে থাকা একাধিক উপকারি উপাদান নিমেষে যন্ত্রণা কমাতে বিশেষ ভূমিকা নিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে ফ্রিজে রাখা শসা, আলু অথবা বাঁধাকোপি অল্প পরিমাণে কেটে নিয়ে আক্কেল দাঁতের উপরে লাগাতে হবে। তাহলেই দেখবেন জাদু! প্রসঙ্গত, এক্ষেত্রে অল্প পরিমণে শসার পেস্ট মুখে লাগালেও কিন্তু দারুন উপকার পাওয়া যায়।
গোলমরিচ: দাঁতের যন্ত্রণা কমাতে গোলমরিচ দারুন কাজে আসে। আসলে এই প্রকৃতিক উপাদানটির অন্দরে উপস্থিত একাধিক উপকারি উপাদান এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এখন প্রশ্ন হল, দাঁতের যন্ত্রণা কমাতে কীভাবে কাজে লাগাতে হবে গোলমরিচকে? এক্ষেত্রে পরিমাণ মতো গোলমরিচ নিয়ে তার সঙ্গে পানি মিশিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে। তারপর সেই পেস্টটি তুলোর সাহায্যে যেখানে যন্ত্রণা হচ্ছে, সেখানে লাগিয়ে রাখতে হবে। এমনটা করলেই দেখবেন কিছু সময়েই কষ্ট কমে গেছে।
টি-ট্রি অয়েল: একটা তুলোতে অল্প করে এই তেলটি নিয়ে দাঁতের উপর ৫ মিনিট লাগিয়ে রাখলেই যন্ত্রণা কমে যাবে। কারণ এতে উপস্থিত অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটারি উপাদান নিমেষে প্রদাহ কমিয়ে ফেলে। ফলে কষ্ট ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে।
রসুন: এবার থেকে যখনই আক্কেল দাঁতের যন্ত্রণা শুরু হবে, তখনই এক কোয়া রসুন নিয়ে চিবুতে শুরু করে দেবেন। নিমেষেই কষ্ট কমে যাবে। কারণ এতে উপস্থিত অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান যে কোনো ধরনের প্রদাহ কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে পুনরায় যাতে এমন কষ্ট না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখে।
লবন : দুটো রসুনের কোয়া থেঁতো করে তার সঙ্গে অল্প করে লবন মিশিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে ফেলুন। এবার সেই পেস্টটা ভাল করে আক্কেল দাঁতের উপর লাগিয়ে দিন। আর যদি এমনটা করতে না পারেন তাহলে পেস্টটি ব্রাশে লাগিয়ে দাঁত মেজে নিন। দেখবেন যন্ত্রণা কমে যাবে। প্রসঙ্গত, ১ কাপ গরম পানিতে ১ চামচ লবন মিশিয়ে সেই পানি দিয়ে কুলি করলেও এক্ষেত্রে দরুন আরাম পাওয়া যায়।
হলুদ: এই প্রাকৃতিক উপাদানটির অন্দরে উপস্থিত অ্যান্টিসেপটিক এবং অ্যান্টি-ব্য়াকটেরিয়াস প্রপাটিজ নিমেষে আক্কেল দাঁতের যন্ত্রণা কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। যাদের মাঝে মধ্য়েই দাঁতের যন্ত্রণায় জীবন দুর্বিসহ হয়ে ওঠে, তারা এই ঘরোয়া সমাধানটি কাজে লাগাতে পারেন। এক্ষেত্রে এ কাপ পানিতে ৫ গ্রাম হলুদ গুঁড়ো, ২ টো লবঙ্গ এবং ২ টো শুকনো পেয়ারা পাতা ফেলে পানিটা ফুটিয়ে নিন। এরপর সেই পানি দিয়ে ভাল করে মুখটা ধুয়ে নিন। এইভাবে কয়েকবার কুলকুচি করলেই ফলাফল পাবেন।
পেঁয়াজ: আক্কেল দাঁতকে কাবু করতে পেঁয়াজ দারুন কাজে আসে। এক্ষেত্রে অল্প করে পেঁয়াজ চিবিয়ে নিতে পারেন অথবা আক্কেল দাঁতের উপর রেখে দিলেও দারুন উপকার মেলে। অথবা , পরিমাণ মতো পেঁয়াজ নিয়ে তার থেকে রসটা সংগ্রহ করে নিন। তারপর সেই রসটা আক্কেল দাঁতের উপর ধীরে ধীরে লাগিয়ে দিন। এমনটা করলে দেখবেন চোখের পলকে কষ্ট কমে যাবে।
পিপারমেন্ট তেল: এবার থেকে এমন যন্ত্রণা হলেই কয়েক ফোঁটা পিপারমেন্ট তেল ফেলে দেবেন দাঁতের উপর। তাহলেই কষ্ট এবং ব্যথা একেবারে কমে যাবে। আর যদি হাতের কাছে এই তেল না পান, তাহলে কয়েকটা পিপারমেন্ট পাতা নিয়ে চিবিয়ে নিলেও সমান উপকার মিলবে।
অ্যারেগেনো তেল: যন্ত্রণা কমাতে এই তেলটির কোনও বিকল্প নেই। এটি আক্কেল দাঁতের যন্ত্রণা কমানোর পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, ভিটামিন এবং খনিজের ঘাটতি দূর করতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
পেয়ারা পাতা: আগেকার দিনে দাঁতে ব্যথা হলেই পেয়ারা পাতা চিবোনোর পরামর্শ দিতেন বড়রা। এই সহজ পদ্ধতিটিকে আজকাল আর কেউ কাজে লাগান না। কিন্তু বিশ্বাস করুন, পেয়ারা পাতায় উপস্থিত অ্যানালজেসিকস নামে একটি উপাদান চোখের পলকে যন্ত্রণা তো কমায়ই, সেই সঙ্গে দাঁতের ফাঁকে জমে থাকা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াদেরও মেরে ফেলে। ফলে শুধু আক্কেল দাঁতের সমস্যা নয়, সেই সঙ্গে আরও অনেক দাঁত সম্পর্কিত রোগ সেরে যায়।
লবঙ্গ: প্রাকৃতিক পেনকিলার হিসেবে বেশ সুখ্যাতি রয়েছে লবঙ্গের। তাই তো অক্কেল দাঁতের ব্যথায় এবার থেকে যখন আক্কেল গুড়ুম হওয়ার জোগার হবে, তখন অল্প করে লবঙ্গ নিয়ে দাঁতের ফাঁতে রেখে দেবেন। এমনটা করলেই দেখবেন পলকে কষ্ট কমে যাবে। আসলে এতে উপস্থিত ইউজেনল নামে একটি উপাদান সঙ্গে সঙ্গে ব্যথা জায়গাকে অসার করে দেয়। ফলে যন্ত্রণা অনেক কমে যায়।
সূত্র : গুগল