মা হওয়ার কথা ভাবছেন? তাহলে ডাক্তারদের এই প্রশ্নগুলো করুন
- ওমেন্সকর্নার ডেস্ক
- জুলাই ২, ২০১৮
মা হওয়ার কথা ভাবলে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিতে ভুলবেন না একদম। কারণ একমাত্র তিনিই পারবেন আপনাকে ঠিক মতো গাইড করতে। ফলে মা এবং বাচ্চার কোনও ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা যাবে কমে। বেশ কিছু পরিসংখ্যান ঘেঁটে জানা গেছে এদেশে সিংহভাগ মহিলাই মা হতে চলার সময় কীভাবে নিজেকে আসন্ন পরিবর্তনের জন্য তৈরি করতে হয়, সে সম্পর্কে বুঝে উঠতে পারেন না। ফলে প্রেগন্যান্সির সময় নানাবিধ সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। এই কারণেই তো হবু মায়েদের প্রেগন্যান্সি সংক্রান্ত সব ধরনের বিষয় জেনে নওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা। প্রসঙ্গত, মা হওয়ার কথা ভাবলে প্রথমেই যে প্রশ্নগুলি ডাক্তারকে করা উচিত, সেগুলি হল -
ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট কখন থেকে নিতে হবে: গর্ভাবস্থায় মায়ের শরীরে এত মাত্রায় পরিবর্তন হয় যে নানাবিধ সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়, সেই সঙ্গে পুষ্টির ঘাটতিও দেখা দেয়। তাই তো এই সময় ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট নেওয়া পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। এখন প্রশ্ন হল কখন থেকে ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট নেওয়া উচিত? বিশেষজ্ঞদের মতে মা হওয়ার পরিকল্পনার কথা ভাবছেন, তখন থেকেই ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট এবং ফলিক অ্যাসিড সাপ্লিমেন্ট নেওয়া উচিত এবং যতদিন না ডেলিভারি হচ্ছে, ততদিন এই সাপ্লিমেন্ট খেয়ে যেতে হবে। কী পরিমাণে এই সাপ্লিমেন্টগুলি খেতে হবে সে সম্পর্কে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না।
গর্ভাবস্থায় এক্সারসাইজ করা যাবে কি?
চিকিৎসকদের মতে প্রেগন্যান্সির সময় শরীরকে অ্যাকটিভ রাখাটা একান্ত প্রয়োজন। কারণ এমনটা করলে মা এবং বাচ্চা, উভয়েরই শারীরিক উন্নতি ঘটে। ফলে প্রসবকালে কোনও ধরনের সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। এখন প্রশ্ন হল, এই অবস্থায় সপ্তাহে কত ঘন্টা শরীর চর্চা করা উচিত? আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের রিপোর্ট অনুসারে ভাবী মা যদি হালকা এক্সারসাইজ করেন, তাহলে সপ্তাহে ১৫০ মিনিট এক্সারসাইজ করা যেতে পারে। আর যদি ভিগোরাস এক্সারসাইজ করেন, তাহলে ভুলেও সপ্তাহে ৭৫ মিনিটের বেশি শরীরচর্চা করা চলবে না।
সিগারেট খাওয়া চলবে কি?
একাধিক গবেষণা অনুসারে প্রেগনেন্ট হওয়ার আগে এবং পরে যদি ধূপমান চালাতে থাকেন, তাহলে একদিকে যেমন গর্ভপাতের আশঙ্কা বৃদ্ধি পাবে, তেমনি এটোপিক প্রেগন্যান্সির আশঙ্কাও বৃদ্ধি পাবে। প্রসঙ্গত, বেশ কিছু স্টাডিতে একথা প্রামণিত হয়ে গেছে যে অতিরিক্তি মাত্রায় ধূমপান করলে স্পার্ম কাউন্ট যেমন কমে যায়, তেমনি মাহিলাদেরও মারাত্মক শারীরিক ক্ষতি হয়। ফলে প্রেগন্যান্ট হওয়ার ক্ষেত্রে একাদিক সমস্যা দেখা দেয়। শুধু তাই নয়, একথাও প্রমাণিত হয়ে গেছে যে গর্ভাবস্থায় ধূমপান করলে একাধিক জটিল সমস্যা নিয়ে বাচ্চার জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।
মা হতে গেলে কি ওজন কমাতে হবে?
একেবারেই! কারণ গর্ভাবস্থায় এমনিতেই শরীরের ওজন বৃদ্ধি পায়। তাই মা যদি আগে থেকেই ওবেসিটির সমস্যায় ভুগে থাকেন, তাহলে কিন্তু বিপদ! কারণ সেক্ষেত্রে ভাবী মায়ের উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিসের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। আর এমনটা হলে মায়ের যেমন শারীরিক ক্ষতি হয়, তেমনি বাচ্চার শরীরের উপরও বিরূপ প্রভাব পরে। তাই সুস্থ বাচ্চার জন্ম যদি দিতে চান, তাহলে প্রেগন্যান্ট হওয়ার আগে ওজন কমাতেই হবে।
অল্প বিস্তর অ্যালকোহল সেবন করা চলবে কি?
বিশেষজ্ঞদের মতে গর্ভাবস্থার আগে ও পরে ভাবী মায়েরা যদি মাত্রাতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন করেন, তাহলে মায়ের শরীরে এমন কিছু নেতিবাচক পরিবর্তন হতে শুরু করে যে তার প্রভাবে মা এবং বাচ্চা, উভয়েরই মারাত্মক ক্ষতি হয়, বিশেষত বাচ্চার। তাই তো এই সময় অ্যালকোহলের থেকে দূরে থাকাই ভাল।
মা হওয়ার বয়স: আজকের দিনে মহিলারা কর্মক্ষেত্রে এতটাই সফল যে বেশিরভাগই মা হতে অনেক দেরি করে ফেলেন। তাই তো সিংহভাগ মহিলার মনেই এই প্রশ্ন জাগতে শুরু করে যে বেশি বয়সে মা হওয়ার পরিকল্পনা করলে কি বাচ্চার ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে? গাইনোকোলজিস্টদের মতে ৩০ বছরের মধ্যে মা হওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া উচিত। কারণ এই সময়ে ডিমের সংখ্যা সবথেকে বেশি থাকে। ফলে গর্ভবতী হওয়ার ক্ষেত্রে কোনও সমস্য়া হয় না। কিন্তু ৩০-এর পর সময় যেতে এগুতে থাকে, তত ডিমের সংখ্যা কমতে শুরু করে। ফলে মা হওয়ার ক্ষেত্রে একাদিক সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। এই কারণেই তো ৩০-এর আগে মা হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।
সূত্র : গুগল