শীতে শিশুরা যেসব রোগে আক্রান্ত হয় !

  • ওমেন্সকর্নার ডেস্ক
  • নভেম্বর ২৭, ২০১৭

শীত পড়া শুরু হয়ে গেছে । এ সময় অসুস্থ হতে পারে আপনার শিশুও । তাই এ সময় প্রয়োজন আপনার সচেতনতা এবং  শিশুর জন্য বাড়তি যত্ন। শীতের সময় শিশুদের সামান্য সর্দি-কাশি থেকে শুরু করে নিউমোনিয়ার মতো মারাত্মক সমস্যাও হতে পারে। শিশুর  চর্মরোগ হওয়ার আশঙ্কাও বাড়ে শীতকালে।

শ্বাসনালির সমস্যা :

শীত আসলে ঠান্ডা-কাশি-জ্বর হতেই পারে। সামান্য সমস্যাতেই ভয় পাওয়ার কিছু নেই। হালকা জ্বর, কাশি বা নাক থেকে পানি পড়ার সমস্যায় মধু-পানি, লেবু-পানি, আদা বা তুলসী পাতার রস দেওয়া যেতে পারে। এর পাশাপাশি দুই বছর পর্যন্ত বয়সের শিশুদের অবশ্যই বুকের দুধ খাওয়াতে হবে।

কখনো এ ধরনের সমস্যায় অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ানো ঠিক নয়। বাজারে প্রচলিত কাশির সিরাপ সবসময় বাচ্চাদের জন্য নিরাপদ নয়। এ ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

প্রচণ্ড জ্বর ও কাশি এবং অতিরিক্ত শ্বাসকষ্ট হওয়া নিউমোনিয়ার লক্ষণ। এসব সমস্যার পাশাপাশি প্রায়ই দেখা যায়, শিশু তার স্বাভাবিক খাবার খেতে পারছে না। এ ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন। নিউমোনিয়া মারাত্মক আকার ধারণ করলে শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হতে পার। যেসব শিশুর অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্টজনিত অসুবিধা আছে, শীতের সময় তাদের শ্বাসকষ্ট বাড়তে পারে। এ সমস্যা প্রতিরোধে আগে থেকেই চিকিৎসকের পরামর্শমতো ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

এছাড়া শিশুর শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিকের চেয়ে দ্রুত হলে, শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় শিশুর বুকের নিচের অংশ ভেতরের দিকে দেবে যাওয়া এবং শিশুর শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে অস্বাভাবিক কোনো আওয়াজ হলে দ্রুত ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান।

চর্মরোগ:

শীতের সময় স্ক্যাবিস নামক একধরনের চর্মরোগের প্রকোপ বাড়ে। এ রোগে শরীরের যেকোনো স্থানেই চুলকানি হতে পারে। রাতে চুলকানির প্রকোপ বাড়তে পারে। এ ধরনের সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো বাড়ির সব সদস্যের একই সঙ্গে চিকিৎসা নিতে হবে। সঠিক সময়ে এবং সঠিক উপায়ে এ রোগের চিকিৎসা না করানো হলে পরবর্তী সময়ে কিডনি রোগও দেখা দিতে পারে।

নবজাতকের বাড়তি যত্ন:

- এই সময়ে নবজাতক শিশুদের অবশ্যই টুপি পরাতে হবে। এ ছাড়া মোজা পরানোও প্রয়োজন।

- নবজাতক শিশুদের প্রতিদিন গোসল করানোর প্রয়োজন নেই। পূর্ণাঙ্গ বয়সে জন্ম নেওয়া শিশুদের এক দিন অন্তর গোসল করানো উচিত। তবে যেসব শিশু নির্দিষ্ট সময়ের আগেই জন্ম নিয়েছে অথবা যেসব শিশুর ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে কম, তাদের সপ্তাহে এক-দুবারের বেশি গোসল করানো ঠিক নয়।

- নবজাতকের সর্দি হলে তাদের উপযোগী ড্রপ নাকে দেওয়া যেতে পারে। ওষুধের দোকানে নরমাল স্যালাইন ড্রপ পাওয়া যায়। নবজাতকের নাকের দুই পাশেই এক ফোঁটা করে দিয়ে দিন এই ড্রপ। সারা দিনে ৮-১০ বার এভাবে নরমাল স্যালাইন ড্রপ দেওয়া হলেও ক্ষতি নেই। তবে জ্বর হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।

- এ সময়ে শিশুদের ডায়াপার পরালে খেয়াল রাখুন ডায়াপার ভিজে গিয়েছে কি না। ভেজা ডায়াপারের কারণে শিশুর রেশ  উঠতে পারে। দীর্ঘ সময় ভেজা ডায়াপার পরিয়ে রাখার ফলে শিশুর ঠান্ডা লেগে যেতে পারে। মাঝরাতে শিশুকে ডায়াপার পরিয়ে দিলে শেষরাতের দিকেই তা পাল্টে দেওয়া প্রয়োজন।

ডায়রিয়া:

শীতে শিশুর ডায়রিয়ার সমস্যা বেড়ে যায়। এ সময় শিশুকে খাওয়ার স্যালাইন দিন। এ ছাড়া ডাবের পানি, চিড়ার পানি বা ভাতের মাড় দেওয়া যেতে পারে।

- কোনো অবস্থাতেই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুকে বাজারের কোমল পানীয়, প্যাকেটজাত ফলের রস দেওয়া যাবে না। এমনকি বাড়িতেও চিনিমিশ্রিত কোনো পানীয় তৈরি করে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুকে খাওয়ানো যাবে না। এতে ডায়রিয়া আরও বাড়তে পারে।

- ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুকে বাড়িতে গুড় ও লবণ দিয়ে স্যালাইন তৈরি করে খাওয়ানো যাবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে, চিনি কখনোই গুড়ের বিকল্প নয়।

- ডায়রিয়ার মাত্রা বেশি হলে শিশুকে অতিসত্বর হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

- ডায়রিয়ার মাত্রা বেশি বা কম যা-ই হোক না কেন, ডায়রিয়ার পর শিশুকে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শমতো ভিটামিন ‘এ’ খাওয়াতে হবে।

তথ্য এবং ছবি : গুগল 

Leave a Comment