আপনার শিশু কি অতিরিক্ত ঘামে?
- ওমেন্সকর্নার ডেস্ক
- সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৮
ঘাম শরীরের অত্যাবশ্যকীয় একটি প্রক্রিয়া। বরং একেবারে ঘাম না হওয়া কখনো কখনো বড় ধরনের অসুস্থতার লক্ষণ। তবে এর মধ্যেও কারো কারো দেখা যায় অতিরিক্ত ঘাম হচ্ছে। তবে শিশুরা একটু বেশিই ঘামে। গরম ভ্যাপসা আবহাওয়াতে তে সবাই কম বেশি ঘামছে, ঘাম হওয়া খারাপ কিছু নয়। আমাদের শরীরের ভেতরে যে নির্দিষ্ট তাপমাত্রা আছে, ৯৮ দশমিক ৪ থেকে ৯৯ ফারেনহাইট পর্যন্ত থাকতে পারে, তা যখন অতিরিক্ত হয়ে যায় তখন ঘামের মাধ্যমে শরীর থেকে কিছু তাপ দূর করে। আবার এই ঘাম যখন শুকাতে থাকে তখনো শরীরের তাপমাত্রা কমিয়ে দেয়। সুস্থ থাকার জন্য এই তাপমাত্রা রক্ষা করা খুব প্রয়োজনীয়।
শিশুর অতিরিক্ত ঘাম দেখে মা-বাবারা অনেক সময় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। অত্যধিক গরম আর আর্দ্রতা হলো শিশুর অতিরিক্ত ঘামের প্রধান কারন। বর্তমান গরম আবহাওয়ায় বাচ্চারা ছোটাছুটি করলে একটু বেশি ঘামতে পারে। এছাড়া শিশুদের শারীরিক বৃদ্ধি বেশি বলে তাদের ঘামও হয় বেশি। তাছাড়া শিশুরা খেলাধুলা, ছোটাছুটি করলে ঘাম হতে পারে। এমনকি জ্বর হলেও বেশি ঘাম হয়। পরিবেশগত কারণে কিংবা ঘরের আসবাবপত্র, দেওয়াল অথবা বাতাস চলাচলের সুব্যবস্থা না থাকলে শিশু ঘরে বসেও ঘামতে পারে। উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা কিংবা অস্থিরতা থেকেও বাচ্চাদের ঘাম হতে পারে।
তাই আপনার শিশু যদি ঘামে, আশা করা যায় সে সুস্থ আছে যদি না তার অন্য শারীরিক সমস্যা থেকে থাকে। তবে ঘেমে ভিজে যেন শিশুর ঠান্ডা লেগে না যায়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। বারবার ঘাম মুছে পাতলা সুতির কাপড় পরাবেন, যাতে ঘামে ভিজে ঠান্ডা না লাগে। বিশেষ করে গরমের দিনে সবসময় শিশুকে আরামদায়ক সুতির কাপড় পরাতে হবে এবং প্রতিদিন শিশুকে পর্যাপ্ত পানি, স্যালাইন, ডাবের পানি, শরবত ইত্যাদি খাওয়াতে হবে। স্কুলে বাচ্চারা অনেক ছোটাছুটি করে, তাই প্রতিদিন স্কুলে পর্যাপ্ত পানি দিতে ভুলবেন না। শিশু স্কুলে যথেষ্ট পানি পান করেছে কি না তা বোতল খুলে দেখুন। ঘরে বাতাস চলাচলের সুব্যবস্থা রাখুন।
তাছাড়াও বাচ্চাকে অতিরিক্ত গরমে ও রোদে বাইরে খেলতে দেবেন না। গরমের দিনে কোলা-জাতীয় ড্রিংক, বাজারের জুস, চিপস এবং তেলে ভাজা খাবার থেকে শিশুকে দূরে রাখুন। সবকিছুর পরেও আপনার সন্তান ঠান্ডা, ভালো পরিবেশে থেকেও যদি অতিরিক্ত ঘামতে থাকে, সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। কারন নানান ধরনের শারীরিক সমস্যার কারনেও শিশু অতিরিক্ত ঘামতে পারে। যেসব শিশুরা জন্মগত হৃদরোগে ভুগে থাকে কিংবা এই ধরণের সমস্যা থাকে তাদেরও ঘাম বেশি হতে পারে।
থাইরয়েডের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপসহ নানা রোগে আক্রান্ত বাচ্চারা বেশি ঘামতে পারে। অনেক প্রিম্যাচিউর শিশুর মধ্যে ঘাম বেশি হবার প্রবণতা দেখা যায় যদি তাঁদের শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে সমস্যা হয়। তখন অক্সিজেন নিতে শিশুকে অনেক বেশি পরিশ্রম করতে হয় যার ফলে শিশু ঘামে। এই সমস্যা পরবর্তী সময়েও দেখা দিতে পারে। আর তাই শিশুর ঘামকে অবহেলা না করে বাবা-মা কে সতর্ক থাকতে হবে এবং অতিরিক্ত ঘাম হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে জেনে নিতে হবে শিশু কোন স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছে কি না।
সূত্র : গর্ভবতী