গর্ভকালীন অবস্থায় প্লাসেন্টার অবস্থান কেমন হয়?
- ওমেন্সকর্নার ডেস্ক
- অক্টোবর ৬, ২০১৮
গর্ভকালীন সময়ে মায়ের শরীরে প্লাসেন্টা বা গর্ভফুল তৈরি হয়, যা জরায়ুর ভেতরের দেয়ালে লেগে থাকে। মা ও ভ্রূণের যোগাযোগ এই গর্ভফুলের মাধ্যমে হয়। প্লাসেন্টা ধীরে ধীরে বেড়ে উঠা গর্ভের সন্তানকে অক্সিজেন এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর উপাদান সরবরাহ এবং শিশুর রক্ত থেকে বর্জ্য পদার্থ পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। সাধারণত নিষিক্ত ডিম্বাণু জরায়ুর দেয়ালের যে অংশে গেঁথে যায় ঠিক সে জায়গাতেই প্লাসেন্টার গঠন শুরু হয়। বেশিরভাগ গর্ভাবস্থায় প্লাসেন্টা জরায়ুর শীর্ষভাগে অথবা পাশে অবস্থান করে । তবে প্লাসেন্টার গঠন সব মায়েদের একই স্থানে হয়না।
গর্ভাবস্থার ১৮-২০ শপ্তাহের আলট্রাসাউন্ডে প্লাসেন্টার অবস্থান জানা যায়। আল্ট্রাসাউন্ডে প্লাসেন্টার অবস্থান সাধারণত চার ধরনের দেখায় :
অ্যান্টেরিয়র প্লাসেন্টা (Anterior placenta) : প্লাসেন্টা যখন জরায়ুর দেয়ালের সামনের অংশে থাকে।
পোস্টেরিয়র প্লাসেন্টা (Posterior placenta) : প্লাসেন্টা যখন জরায়ুর দেয়ালের পেছনের অংশে থাকে।
ফান্ডাল পজিশন (Fundal position) : প্লাসেন্টা যখন জরায়ুর দেয়ালের উপরের অংশে থাকে।
Right or left lateral position – প্লাসেন্টা যখন জরায়ুর দেয়ালের বাম বা ডান পাশে থাকে।
অ্যান্টেরিয়র প্লাসেন্টা কি?
সাধারণত প্লাসেন্টা জরায়ুর দেয়ালের পেছনের দিকে উপরের অংশে মেরুদণ্ডের (spine) কাছাকাছি থাকে। তবে কখনো কখনো তা জরায়ুর সামনের দেয়ালে লাগানো থাকতে পারে। এ অবস্থাকে বলা হয় অ্যান্টেরিয়র প্লাসেন্টা। এক্ষেত্রে প্লাসেন্টা জরায়ুর সামনের দিকে অর্থাৎ পেটের দিকে থাকে এবং গর্ভের শিশু তার পেছনে থাকে।
অ্যান্টেরিয়র প্লাসেন্টার কারণে কি কোন সমস্যা হতে পারে?
অ্যান্টেরিয়র প্লাসেন্টার কারণে বাচ্চার তেমন কোন সমস্যা হয়না। প্লাসেন্টার অবস্থানের কারণে বাচ্চার প্রয়োজনীয় পুষ্টির কোন ঘাটতি হয় না। তবে এ ধরনের অবস্থানের কারণে মায়ের কিছু কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে, যেমন-
বাচ্চার নড়াচড়া বুঝতে সমস্যা হয়ঃ অ্যান্টেরিয়র প্লাসেন্টার ক্ষেত্রে প্লাসেন্টা মায়ের পেটের এবং বাচ্চার মধ্যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। এটি বাচ্চার সামনে কুশনের মত অবস্থান করে ফলে বাচ্চার নড়াচড়া এবং লাথি তেমন একটা টের পাওয়া যায়না। যাদের অ্যান্টেরিয়র প্লাসেন্টা থাকে তারা সাধারণত অন্যদের তুলনায় দেরীতে বাচ্চার নড়াচড়া টের পান বা টের পেলেও অন্যদের মতো অতটা তীব্রভাবে অনুভব করতে পারেন না। অ্যান্টেরিয়র প্লাসেন্টার ক্ষেত্রে দ্বিতীয় ট্রাইমেস্টারেও বাচ্চার নড়াচড়া বুঝতে না পারা বা কম পাওয়া স্বাভাবিক। তবে ২৪ সপ্তাহের মধ্যে কোন নড়াচড়া টের না পেলে দ্রুত বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া উচিৎ।
বাচ্চার হার্টবিট বুঝতে সমস্যা হয়ঃ অ্যান্টেরিয়র প্লাসেন্টা যেহেতু মায়ের পেট এবং বাচ্চার মাঝখানে অবস্থান করে তাই এ ধরনের ক্ষেত্রে ডাক্তারের পক্ষে বাচ্চার হার্টবিট পরীক্ষা করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তবে অ্যান্টেরিয়র প্লাসেন্টার কারণে আল্ট্রাসাউন্ডে কোন সমস্যা হয়না। এছাড়াও অ্যান্টেরিয়র প্লাসেন্টার কারণে amniocentesis ( এমনিওটিক ফ্লুইড পরীক্ষার মাদ্ধমে বাচ্চার ডাউন সিন্ড্রোম এবং অন্যান্য জন্মগত ত্রুটিনির্ণয়ের পরীক্ষা) করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।
সূত্র : গুগল