কিডনির পাথর হয়েছে তা কীভাবে বুঝবেন?

  • ওমেন্সকর্নার ডেস্ক
  • অক্টোবর ১২, ২০১৮

ধীরে ধীরে রোগ বাড়তে থাকে। লক্ষণ প্রকাশ পাওয়া সত্ত্বেও রোগ ধরা পড়তে দেরি হয়ে যায়। শেষমেশ যখন ধরা পড়ে, তখন চূড়ান্ত অবস্থা। কিছুই আর করার থাকে না। আবার কিডনি জটিল অবস্থায় না পৌঁছলে অনেক ক্ষেত্রেই আগাম লক্ষণ দেখা যায় না। নিচের দুই থেকে তিনটি লক্ষণ যদি একসঙ্গে মিলে যায়, চেপে না রেখে ডাক্তারের কাছে যান।

কিডনিতে পাথর হলে অনেক সময় দেখা যায় কোনো উপসর্গ নেই, আবার যদি আকারটা বড় হয়, তৈরি হওয়ার পর ইউরেটা দিয়ে নামতে থাকে, তখন উপসর্গগুলো দেখা যায়। এর মধ্যে প্রথম যেটি হয়, সেটি হলো ব্যথা।পাথরটা আস্তে আস্তে নামতে শুরু করে। ব্যথা হতে থাকে। ব্যথাটা জটিল হয় অনেক সময়। রোগী ব্যথায় খুবই কষ্ট পান। এটা হতে পারে। আরেকটি হলো প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত আসতে পারে। এই রক্তটা খালি চোখে দেখা যেতে পারে। সেটা ইউরিন পরীক্ষা করলে দেখা যায়।

প্রস্রাব পরিষ্কার না হওয়া : হঠাৎ করে যদি এমন পরিবর্তন আসে, আগে থেকেই সতর্ক হোন। ঘনঘন প্রস্রাব, প্রস্রাব করতে গিয়ে আটকে আটকে যাওয়া, এসবই কিডনির সমস্যার প্রাথমিক লক্ষণ।

ঘনঘন শ্বাস-প্রশ্বাস : কিডনির সমস্যা তৈরি হলেই অতিরিক্ত ফ্লুইড গিয়ে ফুসফুসে জমা হয়। এ কারণে শ্বাস-প্রশ্বাসে কষ্ট হয়। ঘনঘন শ্বাস পড়ে। একটু ছোটাছুটিতেই হাঁফ ধরে যায়।

প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত বেরোনো : যদি প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত পড়ে, দেরি না করে ডাক্তারের কাছে যান। কিডনির সমস্যার ক্ষেত্রে এটি বড় লক্ষণ।

প্রস্রাবে ফেনা হওয়া : এটি কিন্তু একদম স্বাভাবিক লক্ষণ নয়। কিডনির সমস্যার ক্ষেত্রে এমনটি হয়। শরীর থেকে প্রোটিন গিয়ে মূত্রে মেশে বলেই ফেনা তৈরি হয়।

পা ফোলা : টক্সিন, বর্জ্য ছাড়াও শরীর থেকে অতিরিক্ত ফ্লুইড বের করে দেয়ার দায়িত্ব হলো কিডনির। যখন কিডনি সেটা পারে না, ফ্লুইডসহ পুরোটাই শরীরে জমে থাকে। এ কারণে পা ফুলে যায়। মুখ ভার ভার লাগে।

সামান্য পরিশ্রমেই খুব ক্লান্ত : কিডনি থেকে নির্গত হয় এরিথ্রোপোয়েটিন হরমোন। এ হরমোন লোহিত রক্তকণিকাকে অক্সিজেন বহন করে নিয়ে যেতে সাহায্য করে। কিডনি ঠিকভাবে কাজ না করলে সেক্ষেত্রে এরিথ্রোপোয়েটিনের পরিমাণ কমে আসে। ফলে রক্ত স্বল্পতার লক্ষণ দেখা যায়। শরীর দুর্বল লাগে। অল্প পরিশ্রমেই ক্লান্তি চেপে ধরে।

মাঝ মধ্যে মাথা ঘোরা : মনঃসংযোগ করতে পারছেন না? অ্যানিমিয়া বা রক্ত স্বল্পতার ক্ষেত্রেও এমন লক্ষণ দেখা যায়। তবে কিডনির সমস্যার ক্ষেত্রে এ লক্ষণগুলো আরও প্রকট। মস্তিষ্কে কম অক্সিজেন যাওয়ার কারণেই হঠাৎ হঠাৎ মাথা ঘোরে। মনঃসংযোগের ক্ষেত্রে ব্যাঘাত ঘটে।

গরমেও ঠান্ডাবোধ : চার পাশে গরম থাকা সত্ত্বেও আপনি যদি শীত অনুভব করেন এবং এটা যদি বেশ কিছুদিন ধরে চলতে থাকে; দেরি না করে ডাক্তার দেখানো উচিত। নিশ্চিতভাবেই এটি কিডনির সমস্যার একটি লক্ষণ।

ফুসকুড়ি ও চুলকানিতে নাজেহাল : কিডনিতে গোলযোগ শুরু হলে গায়ে ঘনঘন ফুসকুড়ি বা র‌্যাশ বেরোয়। ত্বকে চুলকানির মতো লক্ষণ দেখা যায়। অ্যালার্জি বলে ধরে নিয়ে প্রায় সময়ই আমরা গুরুত্ব দিই না। কিন্তু ভুললে চলবে না, কিডনির কোনো অসুখ হলে বা কিডনি একদম কাজ না করলেও এমনটা হতে পারে।

বমি বমি ভাব : নানা কারণে গা-গুলিয়ে উঠতে পারে। তবে কিডনির অসুখের ক্ষেত্রে এটি কিন্তু চূড়ান্ত লক্ষণ বলে ধরে নিতে পারেন। রক্তে অতিরিক্ত বর্জ্য পদার্থ মিশে গেলে, শরীর আর তখন নিতে পারে না। ফলে খাবার দেখলেই গা-গুলিয়ে ওঠে। সবসময় বমি বমি ভাব থাকে। মাঝে মধ্যে বমিও হয়। অতএব সাবধান। যদি কয়েকটি লক্ষণ মিলে যায়, ভয় না পেয়ে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

আর/এস 

Leave a Comment