সিউডোটিউমার সেরেব্রি
- ডাঃ মোঃ ফজলুল কবির পাভেল
- এপ্রিল ১২, ২০১৯
সিউডোটিউমার সেরেব্রি অসুখে ব্রেনের ভেতরে প্রেসার বেড়ে যায়। ফলে মাথাব্যথা এবং চোখে দেখতে সমস্যা হয়। সিউডো মানে মিথ্যা। যেহেতু টিউমারের মত উপসর্গ থাকে কিন্তু কোন টিউমার থাকেনা তাই এর নাম সিউডোটিউমার সেরেব্রি। এর আরেকটি নাম ইডওিপ্যাথিক ইন্ট্রাক্রোনিয়াল হাইপারটেনশন। অর্থাৎ অজনা কোন কারণে ব্রেনের মধ্যে প্রেসার বেড়ে যায়।
মেয়েদের এটি বেশী হয়। ২০-২৫ বছরের মধ্যে রোগটি বেশী দেখতে পাওয়া যায়। সিউডোটিউমার সেরেব্রির প্রকৃত কারণ আজো অজানা। আমাদের ব্রেনের ভেতর একধরনের তরল থাকে। নাম সেরেব্রোস্পাইনাল ফ্লুয়িড। এর অন্যতম কাজ ব্রেনকে প্রতিরক্ষা করা। এটি সবসময় তৈরি হয় এবং রক্তে মিশে যায়। যদি শোষণ হয়ে রক্তে মিশে না যায় তখন ব্রেনের ভেতর প্রেসার বেড়ে যায়। ফলে সমস্যা সৃষ্টি হয়।
সিউডোটিমার সেরেব্রির সব কারণ জানা না গেলেও অতিরিক্ত ওজনের সাথে এর সম্পর্ক জানা গেছে। কিছু ওষুধ গ্রহণ (জন্মনিয়ন্ত্রন বড়ি, ভিটামিন) করলেও এমনটি হতে দেখা যায়। কিডনীর অসুখ, এডিসন’স ডিজিজ এবং লাইম ডিজিজেও সিউডোটিউমার সেরেব্রি দেখা যায়।
সিউডোটিউমার সেরেব্রিরতে যেসব উপসর্গ দেখা যায় তার মধ্যে আছে-
১। মাথাব্যথা। রাতে বেশী সমস্যা হয়। ঘুম থেকে উঠার পারেও হয়।
২। চোখে দেখতে সমস্যা হওয়া।
৩। বমিভাব
৪। বমি
৫। মাথাঘোরা
৬। কানে শোঁ শোঁ শব্দ হওয়া
৭। ঘাড় ব্যথা ইত্যাদি।
সিউজোটিউমার সেরেব্রি ডায়াগনসিসের জন্য ভাল ভাবে ইতিহাস নিতে হবে। অফথ্যালমোস্কোপ দিয়ে পরীক্ষা করলে চোখের ভেতরের পরিবর্তন বোঝা যায়। নিশ্চিত হবার জন্য সিটি স্ক্যান, এমআরআই করা হয। কোমরের রস নিয়ে পরীক্ষা করলে ব্রেনের ভেতর প্রেসার বোঝা যায়।
সিউডোটিউমার সেরেব্রির চিকিৎসায় বিভিন্ন ওষুধ ব্যবহার করা হয়। যেমন সুমাট্রিপটান, এসিটা জোলামাইড, ফ্রুসিমাইড ইত্যাদি। কার জন্য কোনটা উপযুক্ত এবং কয়দিন খেতে হবে তা একজন চিকিৎসকই ঠিক করবেন। কিছু ক্ষেত্রে সার্জারি লাগে। তবে খুব কম ক্ষেত্রেই এমন প্রয়োজন হয়। ওজন কমাতে হবে। অনেক সময় মাঝে মাঝে সেরেব্রোস্পাইনাল ফ্লুয়িড বের করা হয়।
সিউডোটিউমার সেরেব্রি প্রতিরোধের জন্য ওজন কমাতে হবে। যেসব ওষুধে এমন হয় তা থেকে বিরত থাকতে হবে। উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। নাহলে অনেক সমস্যা হতে পারে।