মা হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন? জেনে নিন এসময়ের খাদ্যাভ্যাস
- ওমেন্সকর্নার ডেস্ক:
- মে ২৯, ২০১৯
গর্ভধারণের আগে থেকেই একজন মায়ের সুষম খাদ্যাভ্যাস মেনে চলা উচিত। কারণ, একজন মায়ের খাবারের প্রভাব তার রক্ত কণিকা, কোষ ও হরমোন সহ সবকিছুর উপর বিদ্যমান, যা মা ও বাচ্চার জন্য খুবই জরুরি। অনাগত শিশুর নিউরাল টিউব ডিফেক্টের সমস্যা এড়ানোর জন্য প্রি-ন্যাটাল ভিটামিনগুলো খাওয়া বেশ জরুরী। এজন্য পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে সবসময়। জেনে নিন খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কে-
ক্যাফেইনকে না বলুন: চিকিৎসাবিজ্ঞানে এখন পর্যন্ত শারীরিক উর্বরতার উপর ক্যাফেইনের প্রভাব সম্পর্কে কেউ সুনিশ্চিত ব্যাখ্যা দিতে পারেনি পারেন তাই বিশেষজ্ঞের মতে ক্যাফেইন গ্রহণের পরিমাণ গর্ভধারণের পূর্বেই কমিয়ে দেয়া উচিৎ অথবা একদমই ছেড়ে দেয়া উচিৎ। কারণ, অতিরিক্ত ক্যাফেইন গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
ফল ও শাকসবজি বেশি খান: ফল এবং শাক সবজি থেকে আমরা প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ও মিনারেল পেয়ে থাকি আর বিশেষ করে গর্ভধারণ করার আগে থেকেই সুষম পরিমাণে এই ধরনের প্রাকৃতিক পুষ্টি আমাদের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। স্পিনাচ, লেটুস, এসপারাগাস এবং ব্রকলিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি ফোলেট পাওয়া যায়। গর্ভধারণের পূর্বাবস্থায় এবং গর্ভাবস্থায় এই ধরনে ফোলেট সমৃদ্ধ খাবার খেলে নিউরাল টিউব ডিফেক্টের মত জন্মগত ত্রুটি থেকে শিশুকে ঝুঁকি মুক্ত রাখা সম্ভব।
খাবার তালিকায় মাছ রাখুন: সামুদ্রিক মাছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড রয়েছে। শরীরের উর্বরতার উপর এই ধরনের প্রয়োজনীয় ফ্যাটি এসিডের বেশ উপকারী প্রভাব রয়েছে। বেশ কিছু গবেষণায় উঠে এসেছে যে খাদ্যাভ্যাসে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড নারীদের ডিম্বাণু উৎপাদন এবং গুনমান বৃদ্ধি করে, এছাড়া জরায়ুকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও যেকোনো ধরনের মাছ প্রতিদিনের খাবার তালিকায় রাখা উচিত।
আয়রন গ্রহণের পরিমাণ বৃদ্ধি করুন: গর্ভধারণ করার আগেই শরীরে আয়রনের মজুদ সমৃদ্ধ করে নিতে হবে, বিশেষ করে যাদের পিরিয়ডের সময় অনেক রক্তক্ষরণ হয়ে থাকে। শরীরে আয়রন গ্রহণের পরিমাণ যদি কম হয়ে থাকে তাহলে সেটা কেবল শিশুকেই ঝুঁকির মুখে ফেলবে না বরং গর্ভকালীন সময়ে এবং প্রসবের পরেও একজন মা আয়রনের ঘাটতিতে রক্তশুন্যতায় ভুগতে পারে।
পূর্ণ শস্যদানা (হোল গ্রেইন) খাওয়ার অভ্যাস করুন: প্রতিদিন যে পরিমাণ শস্য খেতে হবে তার অন্তত অর্ধেক পরিমাণ হোল গ্রেইন অর্থাৎ পূর্ণ শস্যদানা খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। সিরিয়াল, ওট, লাল চাল অথবা হোল হুইট পাউরুটির মধ্যে পূর্ণ শস্যদানা অর্থাৎ হোল গ্রেইন আছে।
এলকোহল থেকে দূরে থাকুন: দৈনিক যদি দুই অথবা তার থেকে বেশি গ্লাস এলকোহল পান করা হয় তাহলে সেটা শরীরের জন্য বেশ ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। এছাড়া প্রতিনিয়তও যদি অল্প অল্প ড্রিংক্স করা হয় তাহলে গর্ভপাতের ঝুঁকি বেড়ে যাবে।
ব্যাকটেরিয়া থেকে সাবধান থাকুন: মাংস, নরম চিজ এবং অ-পাস্তুরিত দুগ্ধ জাতীয় খাবারকে দূষিত করে এক ধরণের ব্যাকটেরিয়া, যার নাম লিস্টেরিয়া । এই ধরনের লিস্টারিয়া দ্বারা দূষিত খাবার খেলে গর্ভধারণ করা নারীরা সাধারণত অন্যান্য সুস্থ মানুষের চেয়ে বেশি অসুস্থ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন। লিস্টারিয়া থেকে ইনফেকশনে আক্রান্ত নারীরা প্রথম তিন মাসের মধ্যেই গর্ভপাতের ঝুঁকিতে থাকেন। খাবার থেকে লিস্টেরিয়া দূর করতে হলে, যে সকল খাবারে লিস্টেরিয়া ব্যাকটেরিয়া বেশি আক্রান্ত করে সেগুলো মাইক্রোওয়েভ ওভেনে দিয়ে ধোঁয়া ওঠা পর্যন্ত বেশ খানিকটা গরম করে নিতে হবে। এছাড়া খাবারে যাতে লিস্টেরিয়ার সংক্রমণ না হয় এজন্য ফ্রিজের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি অথবা তার থেকে কম রাখতে হবে।
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার বেশি খান: স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যাভ্যাসে প্রোটিন খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু বেশিরভাগ নারীরা প্রোটিনের উৎস হিসেবে মাংস বেছে নেন। তবে গবেষণায় দেখা গেছে যে, যেসব নারীরা তাদের খাদ্যাভ্যাসে প্রোটিন সমৃদ্ধ সবজী রাখে যেমন নাট, বিন, সয়াবিন অথবা টফু ইত্যাদি, তারা শারীরিক উর্বরাতার সমস্যায় তুলনামূলক ভাবে কম ভোগেন।
টি/আ