গর্ভাবস্থায় ঘন ঘন প্রসাব হয় কেন?
- রেজবুল ইসলাম
- জানুয়ারি ২৩, ২০১৮
গর্ভাবস্থার একটা স্বাভাবিক ঘটনা হচ্ছে বার বার টয়লেটে যাওয়া। প্রথম ও শেষ তিন মাসে ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ আসা খুব সাধারণ ঘটনা। সত্যি কথা বলতে, এটা গর্ভাবস্থার প্রথমদিকের লক্ষণগুলোর মধ্যে অন্যতম এবং ঐ সময়ে শরীরে হরমোনের যাবতীয় পরিবর্তনের একটি অংশ।আপনার গর্ভাবস্থা যত এগুতে থাকে, আপনার শিশুর যত বিকাশ হতে থাকে ততই আপনার শরীরে মূত্রের উৎপাদন বৃদ্ধি পেতে থাকে অথচ এ সময় মূত্রথলি আকারে সংকুচিত হতে থাকে। আপনার মূত্রথলি খালি থাকলেও চাপের কারণে আপনার মনে হবে মূত্রথলি ভর্তি হয়ে আছে। গর্ভাবস্থার শেষের দিকে যখন বাচ্চার মাথা নিচের দিকে চেপে আসবে, তখন এই অনুভূতি আরো বেশি হবে। এছাড়া প্রস্রাবের সময় বার বার থামার কারণেও অনেক সময় মূত্রথলি পুরোপুরি খালি করা সম্ভব হয় না।
গর্ভাবস্থার কোন সময় এই সমস্যা হতে পারে?
ঘন ঘন প্রস্রাবের সমস্যাকে গর্ভধারণের অন্যতম লক্ষন হিসেবে বিবেচনা করা হয় যা প্রথম ট্রামেস্টারে ৬ সপ্তাহের মধ্যেই শুরু হতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বলা হয় দ্বিতীয় ট্রাইমেস্টারে এর প্রবণতা কমে আসতে পারে যখন মায়ের জরায়ু পেলভিস থেকে উপরে উঠে যায়। কিন্তু গবেষণায় এটা প্রমানিত হয়নি। অনেক গবেষণাতেই দেখা গেছে এ সমস্যা গর্ভধারণের সময়ের সাথে সাথে বাড়তে থাকে। যেসব মহিলারা আগে একবার গর্ভধারণ করেছেন তাদের ক্ষেত্রে এ সমস্যা আরও বেশী হতে পারে। অর্থাৎ গর্ভধারণের পুরোটা সময় জুড়েই মায়েদের ঘন ঘন প্রস্রাবের সমস্যা থাকতে পারে।
এই সমস্যার সমাধানের উপায় আছে কি?
সত্যিকার অর্থে এ সমস্যা নিরাময়ের কোন উপায় নেই! আমরাও ভাবি, থাকলে ভালোই হতো। কিন্তু তাই বলে আপনি পানি খাওয়া কমিয়ে দেবেন না যেন। দিনে আপনাকে ৮ থেকে ১০ গ্লাস পরিমান তরল শরীরে নিতেই হবে, আর এর বেশিরভাগটাই হতে হবে পানি। তরলের মাত্রা কমিয়ে দিলে আপনার পানিশূন্যতা হতে পারে। আপনার বাচ্চা যাতে ঠিকমতো পুষ্টি পায় সেজন্য আপনাকে প্রচুর পানি খেতেই হবে।
রাতে বার বার টয়লেটে যাওয়া কমাতে আপনি হয়তো শোবার দুই-এক ঘণ্টা আগে থেকে অল্প করে পানি খেতে পারেন। চা, কফি খাওয়া বন্ধ রাখতে পারেন কারণ এগুলো প্রস্রাবের উৎপাদন বাড়ায়। প্রস্রাব করার সময় ব্লাডার বা মুত্রথলী পুরোপুরি খালি করার চেষ্টা করুন। প্রস্রাব করার সময় সামনের দিকে ঝুকে থাকুন এতে ব্লাডার পুরোপুরি খালি হতে সাহায্য করবে। কখন প্রস্রাব চেপে রাখবেন না। প্রস্রাব চেপে রাখলে পেলভিক ফ্লোর পেশী আরও বেশী দুর্বল হয়ে যেতে পারে। তবে আপনি যাই করুন না কেন, রাতে আপনার প্রস্রাবের পরিমান বেড়ে যেতে পারে কারণ আমাদের পায়ে যে পানি থাকে, যখন আমরা শুয়ে থাকি তা সহজেই রক্তে মিশে যায় এবং ব্লাডারে ফেরত আসে।
সূত্র : myfairylandbd