রোজায় হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচার ঘরোয়া উপায়
- কবিতা আক্তার
- মে ৭, ২০২১
প্রচণ্ড গরমে অনেকেই হিটস্ট্রোক করে থাকেন। হিটস্ট্রোক হচ্ছে মূলত দেহের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে সৃষ্টি হওয়া জটিলতা। এক্ষেত্রে শরীর একেবারেই পানিশূন্য হয়ে পড়ে। এবার প্রচন্ড গরমের রোজা হওয়ার কারণে শরীরে দেখা দিতে পারে পানিশূন্যতা। আর এ কারণেই কিন্তু যখন-তখন হিট স্ট্রোক হতে পারে! রোদে যারা দীর্ঘক্ষণ পরিশ্রম করেন, তাদের যেমন হিট স্ট্রোক হতে পারে, আবার বয়স্ক ও শিশুদেরও এমনটি হতে পারে। এছাড়াও শরীরে পানিশূন্যতা এবং বিভিন্ন ঔষধের প্রভাবেও গরমে হিট স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
আরো পড়ুনঃ এবার তেলে হবে আপনার রূপচর্চা !
হিট স্ট্রোকের লক্ষণ: এক্ষেত্রে প্রথমেই হিট ক্রাম্প হতে পারে। এর ফলে মাংসপেশিতে ব্যথা হয়, শরীর দুর্বল লাগে এবং সবসময় পিপাসা পায়। পরবর্তীতে দ্রুত শ্বাস প্রশ্বাস, মাথাব্যথা, ঝিমঝিম করা, বমি ভাব, অসংলগ্ন আচরণ ইত্যাদি দেখা দেয়। এছাড়াও শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় ও প্রচুর ঘাম ঝরে। হিট স্ট্রোক এর আগাম এসব লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
হিট স্ট্রোক হলে শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে যায়। ঘাম বন্ধ হয়ে যায়। ত্বক শুষ্ক ও লালচে হয়ে যায়। এমনকি নিশ্বাস দ্রুত হয় ও নাড়ির স্পন্দন কমে আসে বা দ্রুত হয়। রক্তচাপ কমে যায়। খিচুনি, মাথা ঝিমঝিম করা, অস্বাভাবিক আচরণ, হ্যালুসিনেশন, অসংলগ্ন ইত্যাদি। এমনকি রোগী অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে। তাই হিট স্ট্রোক হওয়ার আগেই তা প্রতিরোধ করা উচিত। ঘরোয়া উপায়ে এই হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব। এ জন্য পুষ্টিকর কিছু খাবার খাওয়া প্রয়োজন। জেনে নিন কোন খাবারগুলো গরমে হিট স্ট্রোক থেকে আপনাকে বাঁচাবে-
আরো পড়ুনঃ কালো জিরার ভর্তা
বাটার মিল্ক: এখন যেহেতু রোজার মাস, আরে ইফতারে ঠান্ডা পানীয় রাখতেই হবে! তাই করে রাখতে পারেন বাটার মিল্ক। এটি যেমন আপনাকে ঠান্ডা করবে, ঠিক তেমনি শরীরে পুষ্টি ও দেবে। বাটার মিল্ক এ থাকে প্রোবায়োটিক, প্রোটিন এবং ভিটামিন। যা আপনার দেহের তাপমাত্রার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে।
পেঁয়াজের রস: আয়ুর্বেদ অনুসারে, বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর সামান্য মধুর সঙ্গে পেঁয়াজের রস মিশিয়ে পান করার উপকারিতা অনেক। এতে দেহের তাপমাত্রা হ্রাস পায়। সেইসঙ্গে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে যাবে। অতীতে নাকি গরমে হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচতে অনেকেই পেঁয়াজ পকেটে রাখতে।
তেঁতুলের রস: গরম কাটানোর জন্য তেতুল অনেক উপকারী। তেঁতুল দেহে প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে এবং পানিশূন্যতা কাটাতে সাহায্য করে। এজন্য পানিতে কয়েকটি তেতুল সেদ্ধ করে সঙ্গে গুড় মিশিয়ে পান। এতে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমবে। গরমে শরীর থাকবে ঠান্ডা।
আমের রস: বাজারে এখন কাঁচা আম সহজলভ্য। কাঁচা আমের জুস খেতে সবাই কম বেশি পছন্দ করেন। কাঁচা আমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি আছে। যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। গরমে হিট স্ট্রোক থেকেও রক্ষা করে কাঁচা আমে থাকা পুষ্টিগুণ। কাঁচা আম শরীরের তাপমাত্রা কমাতে সাহায্য করে। স্বাস্থ্যকর পানীয় হতাশা থেকে মুক্তি দেয়। সেইসঙ্গে ডায়রিয়া প্রতিরোধ করে।
আরো পড়ুনঃ রিবন্ডিং করা চুলে কি করবেন আর কি করবেন না ?
ছাতুর শরবত: ছাতু শরীরে শক্তির জোগান দেয়। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ভালো ছাতু। এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম হওয়ায় রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ থাকে নিয়ন্ত্রণে। ছাতু খেলে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, জিংক ইত্যাদি ক্ষণিকের চাহিদাও পূরণ হয়ে যায়। হিট স্ট্রোক প্রতিরোধের স্বাস্থ্য উন্নতি ঘটায় ছাতু। গরমে ছাতু খেলে শরীর ঠান্ডা হয় এবং পানিশূন্যতা দূর হয়।