জীবনে পজিটিভিটির গুরুত্ব কতখানি ?
- ফারজানা আক্তার
- সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২১
একবার এক রেস্টুরেন্টে একজন ম্যানেজার ছিলেন। তিনি হাসিখুশি জীবনযাপন করতেন। সকল বিষয়ে পজেটিভ থাকতেন। তিনি তার জীবন এবং কাজ নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন। কারো কোন সাহায্যের দরকার হলে তিনি তার সাহায্যে ঝাঁপিয়ে পড়তেন। তার কলিগ, প্রতিবেশী, পরিবার, আত্মীয়রা সবাই তাকে নিয়ে খুব খুশী ছিলো।
নিজেও আনন্দের জীবন কাটাতেন, অন্যদেরও মোটিভেট করতেন। তাকে যারা চিনতো সবাই সকল বিপদ - আপদে, সমস্যায় তার কাছেই আসতো। একবার একজন তাকে জিজ্ঞেস করেছিলো, ' একজন মানুষ সবসময় এতো হাসিখুশি কিভাবে থাকে ? সবার জীবনেই কম - বেশি সমস্যা থাকে। আপনার জীবনেও নিশ্চয় আছে। তবুও আপনি কিভাবে এত রিলাক্স থাকেন ?' প্রশ্ন শুনে তিনি উত্তর দিয়েছিলেন ,' সকালে ঘুম থেকে উঠার পর আমার হাতে দুইটা অপশন থাকে।
আরো পড়ুন : ওজন কমাবে লেমন কফি
অপশন নাম্বার এক : পুরো দিনে যতই সমস্যা আসুক আনন্দে কাটাবো। অপশন নাম্বার দুই : পুরো দিনে কোন সমস্যা আসলেই আতংকিত হবো, হতাশায় ডুবে যাবো। আমি সবসময় অপশন নাম্বার এক বেছে নেই। তাই কোন সমস্যা আমাকে কাবু করতে পারে না। '
তার উত্তর শুনে প্রশ্নকর্তা মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। এবং সাথে মোটিভিটেডও হয়েছিলেন। তার কাছে যেই আসতো সেই তার কথা শুনে আর জীবনযাপন থেকে মুগ্ধ হতো, সাথে মোটিভিটেডও। একদিন রাতে তিনি যে রেস্টুরেন্টে কাজ করতেন সেখানে ডাকাতের দল হামলা করে। খুব ভয়ংকর তান্ডব চালায় সেই ডাকাতের দল।
এলোপাতাড়ি গুলির কারণে অনেকে ঘটনাস্থলে মারা যায়। যখন পুলিশ আর উদ্ধারকর্মীরা এগিয়ে আসে তখন তারা দেখে সেই লোকটির সেন্স তখনো আছে কিন্তু খুব বাজেভাবে আহত হয়েছে। তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়। ভাগ্যের জোরে লোকটি বেঁচে যায় এবং অন্যদের তুলনায় দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠে। তখন তার এক বন্ধু তাকে হাসপাতালে দেখতে এসে জিজ্ঞেস করে, ' এবার ভয় পাওনি ? নাকি এবারো পজিটিভ থেকে হাসতে হাসতে গুলি খেয়েছো ?'
আরো পড়ুন : ওজন কমাবে মিষ্টি কুমড়ার স্যুপ
তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, ' ডাকাতের দলের তান্ডব দেখে আমি দুইটা বিষয় ভেবেছি। এক : আমাকে বাঁচতে হবে। দুই : আমাকে মরতে হবে। আমি বেঁচে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। তাই বেঁচে আছি। তবে ভয় পেয়েছি কিছুটা। 'বন্ধু কিছুটা মজা করে পুনরায় প্রশ্ন করলো, ' ভয় বেশি পেয়েছিলে, নাকি কম ?'
লোকটি উত্তর দিলো, ' গুলি খাওয়ার সময় ভয় কম পেয়েছিলাম কিন্তু হাসপাতালে আমাকে নিয়ে আসার পর ডাক্তার আর নার্সদের চোখে মুখে আতংক দেখে ভয় বেশি পেয়েছিলাম। কারণ তাদের চোখ - মুখ দেখে মনে হচ্ছিলো আমি মারা যাচ্ছি। 'বন্ধুটি তখন বিড়বিড় করে বলতে লাগলো, ' এতো বড় ভয়াবহ ঘটনার পরেও তুমি কিভাবে স্বাভাবিকভাবে কথা বলছো , আবার হাসছো ?'
লোকটি উত্তর দিলো, ' তুমি আমাকে কাঁদতে বলছো ? কাঁদলে সব স্বাভাবিক হয়ে যাবে ? তুমি আমাকে হতাশায় ডুব দিতে বলছো ? হতাশায় ডুব দিলে সব স্বাভাবিক হয়ে যাবে ? যত কঠিন পরিস্থিতিই আসুক আমি হাসিমুখে মোকাবেলা করতে চাই।
পরিস্থিতি যতই কঠিন হোক তুমি যদি পজিটিভ মনোবল নিয়ে মোকাবেলা করতে পারো অবশ্যই অবশ্যই তুমি জয়ী হবে। তুমি দেখো আমি পজেটিভ এবং নেগেটিভ দুইটা অপশন থেকে পজিটিভ বেছে নিয়ে কতবড় বিপদ থেকে এখনো বেঁচে আছি। আমি যদি সেই পরিস্থিতিতে ভয় পেয়ে মনোবল হারিয়ে ফেলতাম তাহলে গুলি খাওয়ার আগেই মরে যেতাম। '
জীবনে পজেটিভিটির গুরুত্ব অন্য সকলকিছু থেকে বহুগুন বেশি।
সবার ভালো হোক।
আরো পড়ুন : একটি সুস্থ শিশুর ৭টি চিহ্ন থাকে যা সব মায়েদের জেনে রাখা দরকার