ফ্ল্যাট কেনার আগে মনে রাখবেন যে ১২ বিষয়
- ওমেন্স কর্নার
- জুলাই ১৫, ২০২৩
নিজের একটি স্থায়ী ঠিকানা হবে- এমন স্বপ্ন দেখেন অনেকেই। জমি কিনে বাড়ি বানানো যেমন সময়সাপেক্ষ, তেমনি ব্যয়বহুলও। ফলে জমির বদলে অনেকেই সাধ্যের মধ্যে ফ্ল্যাট কিনতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। তবে ফ্ল্যাট কিনে ঠকে যেতে না চাইলে কেনার আগে কিছু বিষয় যাচাই করে নিতে ভুলবেন না। আবার ফ্ল্যাট কোন এলাকায় কিনছেন, নির্মাণসামগ্রী উন্নতমানের কিনা- এগুলোও মাথায় রাখা জরুরি।
১। যাতায়াত ও যোগাযোগ ব্যবস্থা
ফ্ল্যাট কেনার আগে এলাকা নির্বাচন করুন চিন্তাভাবনা করে। আশেপাশে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, বাজারঘাট ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান আছে কিনা সেটা যাচাই করে নেবেন। মেট্রোরেলের আশেপাশে ফ্ল্যাট হলে যাতায়াত ব্যবস্থা নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করতে হবে না।
২। সাধ ও সাধ্যের যোগসূত্র জরুরি
আরো পড়ুন: সিলিং ফ্যান পরিষ্কারের সহজ উপায় জানুন
৩। ফ্ল্যাট রাস্তার পাশে নাকি কমপ্লেক্সের ভেতর?
প্রধান ফটক থেকে বের হয়েই গাড়ি, সিএনজি, রিকশা পাওয়া যাবে বলে রাস্তার একদম সঙ্গেই ফ্ল্যাট কেনার কথা ভাবছেন? সুবিধার পাশাপাশি এর অসুবিধাগুলোও খতিয়ে দেখে নেবেন। ব্যস্ত সড়কের লাগোয়া ফ্ল্যাট হলে গাড়ির হর্ন, রাস্তার কোলাহল যেমন বিরক্তির কারণ হতে পারে, তেমনি ধুলাবালির অত্যাচারও সইতে হবে বেশি। এর চাইতে কমপ্লেক্সের ভেতর ফ্ল্যাট কিনলে বেশ কিছু সুবিধা পাওয়া যাবে। হাঁটার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা, ব্যায়ামাগার, শপিং মল, অনুষ্ঠান করার হলরুমের ব্যবস্থা থাকে কমপ্লেক্সে।
৪। পানি ও গ্যাসের সুবিধা
যত সুন্দর ও সজ্জিত ফ্ল্যাটই হোক না কেন; যদি এলাকায় পানি, ইলেক্ট্রিসিটি ও গ্যাসের সমস্যা থাকে, তাহলে কিন্তু পরবর্তীতে ভোগান্তি অপেক্ষা করছে আপনার জন্য।
৫। সংস্কারের প্রয়োজন আছে কিনা এবং এর সাথে জড়িত খরচের হিসাব
ফ্ল্যাট কেনার পর ইন্টেরিয়র বাবদ আপনাকে আরও খরচ করতে হবে কিনা ভেবে দেখুন। সাজসজ্জা অথবা সংস্কারের প্রয়োজন থাকলে শ্রমিক, ঠিকাদার এবং স্থপতিদের সাথে কাজ করতে হবে ফ্ল্যাট কেনার পর। এতে সময়, শ্রম এবং বেশ বড় অংকের অর্থ ব্যয় করতে হবে- এটা মাথায় রেখে ফ্ল্যাটের দাম নির্বাচন করবেন।
আরো পড়ুন: ঘর থেকে দূর করুন তেলাপোকা
৬। পার্কিংয়ের স্পেস আছে তো?
নিজস্ব ট্রান্সপোর্ট নেই বলে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা নেই এমন ফ্ল্যাট কিনে না ফেলাই ভালো। কারণ ভবিষ্যতে গাড়ি কিনলে সেটা রাখার জন্য বিড়ম্বনা পোহাতে হবে। অবশ্য আবাসিক সোসাইটিতে ফ্ল্যাট কিনলে বেশিরভাগ সময় পার্কিং সুবিধা চুক্তির অংশ হিসেবেই থাকে।
৭। আবাসন প্রতিষ্ঠানের সুনাম আছে তো?
কেউ কম দামে অধিক সুযোগ-সুবিধাসহ ফ্ল্যাট দেওয়ার প্রলোভন দেখালেই সেটা কিনে ফেলবেন না। আবাসন প্রতিষ্ঠানের সুনাম ও বিশ্বাসযোগ্যতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
৮। নির্মাণ সামগ্রী উন্নতমানের হওয়া জরুরি
দেখতে যতই আকর্ষণীয় হোক, বাড়ি তৈরিতে ব্যবহৃত সামগ্রী যদি উন্নতমানের না হয় তবে কিন্তু ভবিষ্যতে পড়তে পারেন বিপদে। জানালা, দরজা, টাইলস ও অন্যান্য উপকরণ ভালোমানের কিনা সেটা যাচাই করে নেবেন কেনার আগে।
আরো পড়ুন: সারারাত এসি চালিয়েও বিদ্যুৎ বিল কমাবেন কিভাবে?
৯। রাজউক কিংবা এলাকার প্রকল্পের অনুমোদন আছে তো?
ঢাকায় ফ্ল্যাট কিনতে চাইলে ভবনের নকশা রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) অনুমোদিত কি না সেটা যাচাই করে নিতে ভুলবেন না। ঢাকার বাইরে হলে নিজ নিজ এলাকার প্রকল্পের অনুমোদন নেওয়া আছে কিনা সে বিষয়ে খোঁজ নেবেন। অনুমোদন নেওয়া থাকলে নকশা অনুযায়ী ভবন তৈরি হয়েছে কি না- জেনে নেবেন সেটাও।
১০। জরুরি রিহ্যাবের সদস্য হওয়াও
যে আবাসন প্রতিষ্ঠান থেকে ফ্ল্যাট কিনবেন, সেটি রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) সদস্য কি না, সেটা নিশ্চিত হয়ে নেবেন। রিহ্যাবের সদস্য নয়, এমন প্রতিষ্ঠান থেকে ফ্ল্যাট কিনলে পরবর্তী সময়ে কোনও সমস্যা হলে রিহ্যাবের কাছে অভিযোগ করা যাবে না।
আরো পড়ুন: এসি কেনার কথা ভাবছেন? এই বিষয়ফুল মনে রাখা প্রয়োজন
১১। চুক্তিপত্রের খুঁটিনাটি দেখে নেবেন
কোম্পানির সঙ্গে ফ্ল্যাট কেনার যে চুক্তিটি করবেন, সেটি অবশ্যই একজন দক্ষ আইনজীবীকে দিয়ে যাচাই করে নেবেন। চুক্তির খুঁটিনাটি বিষয়গুলোও ভালোভাবে দেখে নিন। যদি কিস্তির মাধ্যমে কেনার কথা থাকে, তাহলে কয় কিস্তি এবং হস্তান্তর কবে হবে, এ বিষয়ে সুস্পষ্ট করে চুক্তিনামায় লেখা থাকতে হবে।
১২। রিসেল ভ্যালু পাওয়া যাবে কিনা যাচাই করবেন
যেকোনো পরিস্থিতিতে ফ্ল্যাটটি বিক্রি করার প্রয়োজন হতে পারে। সেক্ষেত্রে পুনঃবিক্রয় মূল্য ভালো পাওয়া যাবে কিনা- সেটাও মাথায় রাখবেন ফ্ল্যাট কেনার আগে।