যে কারণে ঘরের গাছগুলো দ্রুত নষ্ট হয়
- ওমেন্স কর্নার
- মার্চ ১০, ২০২৪
শহুরে জীবনের ব্যস্ততা এবং জায়গার সংকটে আমাদের অনেকের গাছের সঙ্গে সম্পর্কও গড়ে ওঠে না। কিন্তু আপনি চাইলে সেখানে খুব অল্প জায়গায় রাখতে পারেন কিছু গাছ। যা আপনার রুমের শেলফের বা অফিসের টেবিলের শোভা বাড়াবে। পাশাপাশি মনে প্রশান্তি আসবে।
শহুরে জীবনে সবুজের ছোঁয়া পেতে আমরা ছাদে, বারান্দায় বাগান করি, ভেতরেও রাখি অনেক রকমের গাছ। কিন্তু নানা কারণে ঘরের ভেতর সবসময় গাছ ভালো রাখা সম্ভব হয়ে ওঠে না।
জেনে নিন কিছু বিষয় যার কারণে ঘরের গাছ বা ইনডোর প্ল্যান্ট মরে যায়।
গাছে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি দেওয়া:
সব গাছের খাবারের চাহিদা সমান নয়। কোনো গাছের পানি শোষণ ক্ষমতা বেশি, প্রতিদিনই পানি দেওয়া প্রয়োজন। আবার কোনো গাছের পানি শোষণ ক্ষমতা কম, প্রতিদিন পানি না দিয়ে টবের মাটি শুকিয়ে এলে তবেই পানি দিতে হয়। কেননা গাছ মরে যাওয়ার অন্যতম একটি কারণ হলো গাছে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি দেওয়া। টবে অতিরিক্ত পানি জমে গাছের শিকড়ে পচন ধরতে পারে। এই পচন থেকে একটা সময় গাছ মরেও যেতে পারে। এ কারণে পানি যেন জমে না থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। প্রয়োজনে গাছ সরাসরি সূর্যালোকে রাখুন। সহজে পানি নিষ্কাশনের জন্য ছিদ্রযুক্ত টবের ব্যবহার নিশ্চিত করুন।
আরো পড়ুন: স্টেইনলেস স্টিলের সিঙ্ক পরিষ্কার রাখার উপায়
প্রয়োজনের তুলনায় পানি কম দেওয়া:
গাছের পাতা হঠাৎ করে ঝরে যাওয়া, কুঁচকে যাওয়া বা বাদামী বর্ণ ধারণ করা বা পুরো গাছটিই নেতিয়ে পড়ার মানে হলো গাছ তার প্রয়োজন অনুযায়ী পানি পাচ্ছে না। বৃষ্টিহীন বসন্ত ও গ্রীষ্মের মতো শুষ্ক আবহাওয়ায় গাছে একটু বেশি পানি দিতে হতে পারে। তবে সহজ সূত্র একটাই একবার পানি দেওয়ার পর টবের মাটি শুকিয়ে এলে তবেই নতুন করে পানি দিন।
সঠিক টব নির্বাচন:
আপনার কোনো একটি গাছ বহুদিন ধরে নির্দিষ্ট একটি টবে আছে। ইদানীং খেয়াল করছেন, গাছটার বৃদ্ধি যেন একটা জায়গায় থেমে আছে। পাতাগুলোও কেমন যেন বিবর্ণ, শুকিয়ে ঝরে পড়ছে। একই গাছের স্বাভাবিক বৃদ্ধি স্থবির হয়ে আছে। তাহলে গাছটি এখন যে টবে আছে তার থেকে বড় আকারের টবে বা ড্রামে প্রতিস্থাপন করুন। নতুন করে মাটি প্রস্তুত করে গাছটি প্রতিস্থাপন করতে হবে। তাই ছোট চারা শুরুতেই ছোট পাত্রে দিন। পরে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেবড় পাত্রে স্থানান্তর করুন।
আরো পড়ুন: বিদ্যুৎ খরচ কমানোর সেরা উপায়
বেশি সূর্যালোক:
ছায়াবান্ধব ইনডোর প্ল্যান্ট স্বভাবতই সরাসরি সূর্যের আলো পছন্দ করে না। রোদে গাছের পাতা ফ্যাকাসে হয়ে আসতে পারে, এমনকি পুড়েও যেতে পারে। তাই ঘরের জানালা কোন দিকে, তা বিবেচনায় রেখে গাছের অবস্থান ঠিক করুন।
টবে ভুল ধরনের মাটির ব্যবহার:
অতিরিক্ত এটেল মাটি পানি নিষ্কাশনে বাধা দেয়। আবার অতিরিক্ত বেলে মাটি পানি ধরে রাখতে পারে না। তাই টবে মাটি প্রস্তুতের বেলায় উত্তম হলো বেলে-দোআঁশ মাটি বেছে নেওয়া। আর তা এমনভাবে প্রস্তুত করতে হবে, যেন টবের অতিরিক্ত পানি সহজে বেরিয়ে যেতে পারে।
আলোকস্বল্পতা:
গাছের জন্য সূর্যের আলো লাগবেই, নাহলে সালোকসংশ্লেষণ হবে না। ইনডোর প্ল্যান্ট ছায়াবান্ধব হলেও এদেরও কিন্তু আলো-বাতাসের দরকার হয়। তাই সপ্তাহে অন্তত একদিন হলেও গাছগুলো রোদে দিন।
আরো পড়ুন: ঘরবাড়ি গুছিয়ে রাখতে সহজ করবে যেসব উপায়
গাছে কীটপতঙ্গ:
গাছের সতেজ সবুজ স্বাভাবিক চেহারা পাল্টে দিতে পারে পোকামাকড়ের আক্রমণ। ছত্রাকের সংক্রমণ আর মিলিবাগের আক্রমণই হয় বেশি। তবে পোকার আক্রমণ হলেই ভয়ের কিছু নেই। পোকা ও ছত্রাকের সংক্রমণ ঠেকাতে কীটনাশক হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন জৈব বালাইনাশক নিম তেল। আগাম আক্রমণ ঠেকাতে প্রতি ১৫ দিন পর পর এই নিম তেলের মিশ্রণ স্প্রে করতে পারেন।
