সাধ্যের মধ্যেই সাজিয়ে তুলুন আপনার শান্তির নীড়কে 

  • ওমেন্সকর্নার ডেস্ক 
  • ডিসেম্বর ৩, ২০১৭

সবাই নিজের ঘরটাকে একটু সাজিয়ে গুছিয়ে রাখতে ভালোবাসেন। অলস, অগোছালো মানুষটাও নিজের জন্য সুন্দর করে সাজানো একখানা ঘর পেলে খুশিই হবেন। কিন্তু ঘর সাজানোর বিশাল আয়োজন করতে গেলে তা যে বেশ ব্যায়বহুল হয়ে পড়ে, কারো কারো সাধ্যের বাইরে চলে যায়।  তাই বলে কি এই মানুষটা নিজের ঘর সাজাবে না ?

স্বল্প আয়োজনেই আপনার ঘর সেজে উঠতে পারবে না, তেমন কোন কথা কিন্তু কেউ বলছে না। গৃহসজ্জা মানেই একগাদা কেনাকাটা করা, চোখ ধাঁধানো অনুষঙ্গ সব বাজার থেকে  তুলে এনে ঘর ভরিয়ে ফেলা, দামী কার্পেট, ঝালরকাটা পর্দা এসব নয়। আপনার সাধ্যের ভেতরেই বদলে ফেলতে পারেন ঘরের সাজ, হোম ডেকোরের এমন কিছু চমৎকার ধারণা পেয়ে যাবেন এই লেখায়।

রঙ নিয়ে এক দফা কাজকর্ম হয়ে যাক ঘরে। দেয়ালের মলিন হয়ে আসা পুরনো রঙকে বিদায় দিন নতুন রঙের ছোঁয়ায়। এক ঘরে রঙের দুই শেড ব্যবহার করে বৈচিত্র্যতা আনুন, দেখতে তো ভালো লাগবেই ঘরের চেহারার একঘেয়েমিও কেটে যাবে।

ঘর ইচ্ছে মতন রঙ করা সবার পক্ষে সম্ভব হয় না, বিশেষ করে বাড়ি যাদের নিজেদের নয়। তেমন হলে দেয়ালের বদলে আসবাবপত্র রঙ করার কথা ভাবা যায়। অনেকগুলো দিন একই চেহারা নিয়ে থাকা আসবাবের গায়ে নতুন করে রঙের আঁচড় কেটে তার ভোল পাল্টে দিলে ঘরেও কিন্তু দিব্যি নতুন নতুন ভাব আসবে।

আসবাবের জায়গা বদল করুন মাঝেসাঝে। তাই বলে আবার খুব ঘনঘন নয়! মাস দুই/তিনেক আসবাবপত্র একই জায়গায় ঝিমাচ্ছে তো তাদের খানিক নাড়াচাড়া করুন। তাদের সাথে আপনার ঘরের ঝিমধরা ভাবটাও কেটে যাবে। খুব বেশি আসবাব ঘরে থেকে থাকলে অপ্রয়োজনীয় কিছু আসবাব সরিয়ে ফেলুন ঘর থেকে। জিনিসের মায়া করে অনেক কিছুই ছাড়তে চায় না মানুষ, কিন্তু ঘরের বোঝা হয়ে কিছু থাকলে তা কিন্তু সমস্যা বটে। বদ্ধ ঘরটাকে যখন আসবাবপত্র কমিয়ে একটু খোলা জায়গা ছেড়ে দেবেন, তাতেই কিন্ত তার রূপ বাড়বে।

বসার ঘরে সাবেকী সোফা সেট আপনার। নতুন সোফা তো আর চট করেই কেনা যায় না। তাহলে বরং কুশনের সেটটা পাল্টে ফেলুন। আগেকার গোলগাল কুশনগুলি বস্তাবন্দী করে ফেলে চারকোনা নতুন কুশন সেট নিয়ে আসুন। হতে পারে এর উল্টোটাও, বাক্স মতন দেখতে কুশনের বদলে ঘরে আনুন গোল দেখতে কুশন সেট। কুশনকভার হোক একদম অন্য নকশায়, অন্য কোন রঙে। আর তারপরে তাকিয়ে দেখুন, পুরনো সোফার মনমরা ভাব কই হারিয়ে গেছে!

আয়না দিয়ে সাজিয়ে তুলুন ঘর। তাতে ঘরে আলোর আনাগোনাও ভিন্ন মাত্রা যোগ করবে। আলোর বিপরীতে আয়না রাখুন, ঘরের ভেতরটা ঝলমলে এবং বেশ খোলামেলা দেখাবে। করিডরেও একটি বড় আয়না কিংবা দুই/তিনটি ছোট আয়না ঝুলিয়ে দেয়া যায়। দেয়ালের গায়ে সাজ হিসেবেও আয়নারা মন্দ নয়।

দেয়ালে স্টিকার বসিয়ে চট করেই ঘরের চেহারা পাল্টে ফেলা সম্ভব। একেক ঘরে একেক রকম ওয়াল স্টিকার ব্যবহার করুন । অবশ্যই স্টিকার কোন ঘরে ব্যবহার করছেন এবং সেই ঘরে দেয়ালের কী রঙ, তার উপর নির্ভর করবে।

ছবি এমন আরেক জিনিস যা ঘর সাজাতে দারুণ ভূমিকা রাখে। নিজেদের ছবির পাশাপাশি নানা রকম দেয়ালচিত্র ঝুলিয়ে দেয়া যায় ঘরের চারিদিকে। ঘরটা দেখতে হাসিখুশি লাগবে। দেয়ালে কোন নির্দিষ্ট ধরণ বা প্যাটার্ন অনুসরণ করে কতোগুলি ছবি রাখতে পারেন, আবার এলোমেলো ভাবেও রাখতে পারেন। মন্দ লাগবে না কোনটাই।

ঘর সাজাতে বেছে নিতে পারেন নানা রকম দেশজ মোটিফ। নকশি পাখা, শীতল পাটি, ডালা, হাড়ি, মাটির পুতুল আরো কতো কিছু রয়েছে আমাদের! এইসব জিনিসের উপস্থিতি আপনার গৃহসজ্জায় প্রাণবন্ত ভাব ফুটিয়ে তুলবে। এগুলোর কোনটাতেই রাজ্যের আয়োজন নেই, নেই খরচের ভারিক্কি। কিন্তু আপনার ঘর সাজাতে কম যাবে না কোনটাই। আবার কখনো ঘরের সাজে মন দেয়ার আগে তাই এই বিষয়গুলি মনে করে নেবেন। সাধ আর সাধ্যের সমন্বয়েই সাজবে আপনার শান্তির নীড়।

তথ্য এবং ছবি : গুগল 

Leave a Comment