ডুপ্লেক্স বাসার সিঁড়ি সাজাবেন কিভাবে ?
- ওমেন্সকর্নার ডেস্ক
- ডিসেম্বর ৩১, ২০১৭
বাড়ির দুটি ভিন্ন তলার মাঝে সংযোগ স্থাপন করে সিঁড়ি। ডুপ্লেক্স বাড়ির সিঁড়ির নিচের জায়গায় যদি একটু নান্দনিকতার ছোঁয়া এনে দেন তাহলে পুরো ঘরের চেহারা পাল্টে যাবে। ঘরটাও হয়ে উঠবে দৃষ্টিনন্দন। আপনার সিঁড়ির এই ছোট জায়গাটির ডেকোরেশন কতটা সুন্দর হবে তা নির্ভর করছে আপনার শৈল্পিক রুচিবোধের ওপর।
যদিও আমরা অনেকেই বুঝতে পারি না কেমন আলো বা কী রঙ ব্যবহার করলে সিঁড়ি ও বাসার দৃশ্যপট পাল্টাবে অথবা কোন আসবাব ব্যবহারে ঘরের সাথে এর সামঞ্জস্য রক্ষা হবে। চলুন আজ জেনে নিন ডুপ্লেক্স বাসার সিঁড়ি সাজানোর খুঁটিনাটি -
সিঁড়ির অনুষঙ্গ :
সিঁড়িকে হাইলাইট করতে এর প্রতিটি পদে ধাতব বা কাচের গ্লাসের ড্রয়ার করতে পারেন। যা আপনার প্রয়োজনে কাজে লাগবে আবার দেখতেও সুন্দর লাগবে। সিঁড়ি যদি সোজা হয় তাহলে এর সামনে দুটি পটারি ব্যবহার করতে পারেন। আর সিঁড়ি যদি বাঁকা বা সর্পিল আকারে হয় তাহলে এর পাশের দেয়ালে দুটি বা একটি বড় পেইন্টিং ব্যবহার করুন। অথবা ওয়াল পেপার দিয়েও সিঁড়ির উপরের আর নিচের দেয়াল সাজিয়ে নিতে পারেন।
পিছনের দেয়ালের কিছুটা অংশে কাচ দিতে পারেন। যাতে বাইরের আলোতে জায়গাটি দিনের বেলা আরো নান্দনিক দেখা যায়। ফ্লোরে শতরঞ্জি বা কার্পেট ব্যবহার করে তার ওপর রঙ-বেরঙের কুশন রাখতে পারেন। বড় সাইজের একটি গোলাকার মাটির পটারির মধ্যে পানি রেখে তার ওপর ফুলের পাপড়ি আর মোম রাখতে পারেন। ছোট ছোট ফুলের টব জায়গাটিকে আরো প্রাণবন্ত করে তুলবে।
পরামর্শ :
(১) ধাতুর বা কাচের গ্লাসের ড্রয়ার যেন মজবুত হয়। অন্যথায় দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকবে। পটারিগুলো মাটির না হওয়াই ভালো। অসাবধানবশত ভেঙে যেতে পারে। ধাতুর বা তামার পটারি ব্যবহার করুন।
(২) দেয়ালের রঙের সাথে মিলিয়ে ওয়াল পেপারের রং বাছাই করুন।
(৩) পেইন্টিং বড় হলে একটাই ব্যবহার করুন। আর ছোট হলে দুটো বা তিনটি ব্যবহার করতে পারেন।
(৪) শতরঞ্জি বা কার্পেট যেন খুব বড় না হয়। দেখতে বেমানান লাগবে। আর কুশন তিনটির বেশি ব্যবহার না করাই ভালো। কুশন মাঝারি সাইজের হলে দেখতে ভালো লাগবে। দেয়ালে ছোট ছোট শোপিস ঝুলিয়ে রাখতে পারেন।
আলোর সামঞ্জস্য :
আলো যেকোনো জায়গাকে হাইলাইট করে খুব সহজে। সিঁড়িকে স্পট লাইটের সাহায্যে হাইলাইট করুন। খুব বেশি লাইট ব্যবহার করবেন না। প্রতিটি সিঁড়ির নিচে সাইট থেকে একটি করে স্পট লাইট দেওয়া যেতে পারে। পেইন্টিঙের ওপর একটি ছোট স্পটলাইট ব্যবহার করুন। এতে ছবিটি দূর থেকে ফোকাস হবে। পটারির মধ্যে চাইলে হালকা আলোর স্পটলাইট ব্যবহার করতে পারেন। খেয়াল রাখবেন ঘরের অন্য জায়গার সাথে এই আলোর যেন সামঞ্জস্য থাকে।
পরামর্শ :
(১) বিভিন্ন রঙের স্পটলাইট ব্যবহার করবেন না। যেকোনো এক রঙের লাইট ব্যবহার করুন।
(২) কোথাও হালকা আলো আবার কোথাও বেশি আলোর লাইট ব্যবহার করতে পারেন। এতে কিছু কিছু জায়গা হাইলাইট হবে।
(৩) সিঁড়ির স্পট লাইটগুলো সব একসাথে জ্বালিয়ে রাখবেন না। একটা করে সিঁড়ি বাদ দিয়ে লাইট জ্বালাতে পারেন।
(৪) উপর থেকে নিচ পর্যন্ত ঝুলে থাকবে এমন কিছু স্পট লাইট সাজিয়ে তৈরি করুন আলো-ছায়ার ছায়াপথ।
(৫) মাটির গোল পটারির মধ্যে ওপর থেকে স্পট লাইট দিতে পারেন। এতে পানির ভিতর এর প্রতিফলন ভালো লাগবে।
সিঁড়ির জন্য আসবাব :
সিঁড়ির নিচে আপনি চাইলে একটা ছোটখাটো পাঠাগার বানাতে পারেন। সেলফের মধ্যে পছন্দের বই রাখুন। আবার শোকেসও বানাতে পারেন। এ ক্ষেত্রে শোপিস রাখার শোকেস রাখুন। আর শোকেসের মধ্যে স্পটলাইট লাগাতে পারেন। এতে শোপিসগুলো আরো ফুটে উঠবে এবং জায়গাটি কালারফুল মনে হবে।
এ ছাড়া চাইলে আপনি সেখানে ডিভানও রাখতে পারেন। ছোটছোট সোফা সাজিয়ে দিতে পারেন বিভিন্ন রঙের কুশন দিয়ে। অথবা সিঁড়ির নিচের অংশে স্টোরেজ ব্যবস্থা করা যেতে পারে। কাঠ বা বোর্ডের তাক বানিয়ে স্টোরেজ বানিয়ে নিন। স্টোরেজ না বোঝাতে চাইলে এর দরজায় আয়না ব্যবহার করতে পারেন। রঙও করে দিতে পারেন।
পরামর্শ :
বইয়ের তাক খুব বেশি বড় হলে দেখতে বেমানান লাগবে। তিন তাক বিশিষ্ট তাক বানাতে পারেন। এতে বেশি উঁচু লাগবে না। কংক্রিটের সেলফও সিঁড়ি অনুযায়ী বানিয়ে নিতে পারেন। এতে জায়গা নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। শোকেসে কালারফুল শোপিস রাখার চেষ্টা করুন। যাতে স্পটলাইটে জিনিসগুলো আরো হাইলাইট হতে পারে। ডিভান বা সোফা রাখলে নিচে কার্পেটে কুশন রাখার প্রয়োজন নেই।
তথ্য এবং ছবি : গুগল