হিন্দু বিবাহিত মহিলারা শাঁখা-সিঁদুর কেন ব্যবহার করেন ?
- ওমেন্সকর্নার ডেস্ক
- এপ্রিল ৬, ২০২১
হিন্দু বিবাহিত নারীরা স্বামীর মঙ্গল কামনায় সিঁদুর এবং শাঁখা-পলা ব্যবহার করেন। প্রাচীনকাল থেকেই এই নিয়ম চলে আসছে। একজন হিন্দু মহিলার বৈবাহিক চিহ্নই হল এই সিঁদুর এবং শাঁখা-পলা। একজন হিন্দু বিবাহিত মহিলার অবিচ্ছেদ্য অলংকার । তবে বর্তমানে আধুনিক সমাজে অনেকেই এই সিঁদুর এবং শাঁখা-পলা ব্যবহার কে বাধ্যতামূলক বলে মনে করেন না। তবুও হিন্দু শাস্ত্র মতে বিয়েতে এখনও এই চিহ্নগুলো ছাড়া বিয়ের নিয়ম অসম্পূর্ণ থেকে যায়।
আরো পড়ুন : টমেটো সারাবছর সংরক্ষণের দুটি দারুন উপায়!
শুধুমাত্রই কি স্বামীর মঙ্গলকামনায় বা নিয়মের কারনেই মহিলাদের এই শাঁখার ব্যবহার ? ব্রহ্মবৈবরত পুরাণের মতে, মহাভারতের সময়কাল থেকে অর্থাৎ প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে এই শাঁখার ব্যবহার শুরু হয়। সেই সময় শঙ্খাশূর নামে এক অত্যাচারী অসুরের তান্ডবে দেবলোক অশান্ত হয়ে উঠে। সেই সময় সকল দেবতারা মিলে ভগবান নারায়ণের দ্বারস্থ হন। নারায়ণ সেই সময় শঙ্খাশূর-কে বধ করে দেবতাদের রক্ষা করেন। এদিকে শঙ্খাশূর-এর ধর্মপরায়ণ স্ত্রী তুলসী স্বামীকে ফিরে পাওয়ার আশায় প্রার্থণা শুরু করেন। তুলসীর প্রার্থণায় সন্তুষ্ট হয়ে নারায়ণ শঙ্খাশূর-এর হাড় দিয়ে শাঁখা তৈরি করেন। সেই থেকেই হিন্দু বিবাহিত মহিলাদের স্বামীর মঙ্গলকামনায় এই শাঁখা পড়ার প্রচলন শুরু হয়েছে বলে মনে করা হয়।
আরো পড়ুন : বাড়িতেই সহজ উপায়ে তৈরি করুন বেসন!
সেই রকম কপালে সিঁদুর ব্যবহারেরও কিছু বিধি শাস্ত্রের মাধ্যমে জানা যায়৷ শাস্ত্র মতে, তর্জনি দিয়ে সিঁদুর পরলে মানসিক শান্তি বৃদ্ধি পায়। মধ্যমা ব্যবহার করলে আয়ু বৃদ্ধি পায়। প্রাচীন কালে হলুদ গুঁড়ো দিয়ে সিঁদুর তৈরি হত। তার পরে তাতে লাল রং মিশিয়ে সিঁদুদের গাঢ়ত্ব বৃদ্ধি করা হতো। শাস্ত্রমতে লাল শক্তির প্রতীক। শাস্ত্র অনুযায়ী মানব শরীরের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন দেবতা অবস্থান করেন। যেমন কপালে অধিষ্ঠান করেন স্বয়ং ঈশ্বর ব্রহ্মা। লাল কুঙ্কুম ব্রহ্মাকে সন্তুষ্ট করার জন্য ব্যবহৃত হয়। আর সেই কারণেই প্রাচীনকাল থেকে হিন্দু মহিলারা শক্তির প্রতীক এবং প্রসাধনী হিসেবে সিঁদুরের ব্যবহার করেন।