দ্রৌপদীর পঞ্চপতি লাভের পেছনে কারণ কী ছিলো ?
- সংগীতা চৌধুরী
- এপ্রিল ২৫, ২০২১
মহাভারতে দ্রৌপদীর মত সুন্দরী,তেজময়ী ,বুদ্ধিমতী, সাহসী রমণী আর কেউ ছিলেন না। তার বস্ত্রহরণের জন্যই কৌরব ও পান্ডবদের মধ্যে যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল, সৃষ্টি হয়েছিল ভারতের অমরকাব্য মহাভারত। মহাভারতে দ্রোপদীর অনেক নামের উল্লেখ পাওয়া যায়। যজ্ঞের আগুন থেকে উত্থিত হয়েছিলেন বলে তাকে যাজ্ঞসেনী বলা হতো। পাঞ্চাল প্রদেশের রাজকুমারী ছিলেন বলে তার অপর নাম ছিল পাঞ্চালী আর দ্রুপদ রাজার কন্যা ছিলেন বলে তিনি ছিলেন দ্রোপদী।
স্বয়ংবর সভায় লক্ষ্যভেদ করে দ্রৌপদীকে জিতে নিয়েছিলেন অর্জুন। কিন্তু পরবর্তীতে যখন দ্রৌপদীকে নিয়ে তিনি মাতা কুন্তিদেবীর কাছে আসেন তখন কুন্তি দেবী দ্রৌপদীকে না দেখেই বলেন -“যা এনেছো তা পাঁচ ভাইয়ের সঙ্গে ভাগ করে নাও।”এরপর মাতৃ আজ্ঞা পালন করতে যুধিষ্ঠির, ভীম, অর্জুন, নকুল ও সহদেব পাঁচ ভাই মিলেই দ্রৌপদীর সম্মতিতেই দ্রোপদীকে বিবাহ করেছিলেন।
আরো পড়ুন : স্তন ক্যান্সার রোধে করনীয়
কিন্তু দ্রৌপদীর এই পঞ্চপতি লাভের পেছনে ছিলো একটি বিশেষ কারণ। কী সেই কারণ জানেন? দ্রৌপদীর পঞ্চপতি লাভের পেছনে ছিল তারই পূর্বজন্ম জনিত কর্মফল। পূর্ব জন্মে তিনি এমন কিছু করেছিলেন যার ফলস্বরুপ তাকে পঞ্চপতি লাভ করতে হয়েছিল।
পূর্বজন্মে দ্রোপদী এক ঋষি কন্যা ছিলেন। তিনি মহাদেবের প্রীতি সাধন করতে অত্যন্ত কঠোর তপস্যায় ব্রতী হয়েছিলেন। এরপর মহাদেব তার তপস্যায় প্রসন্ন হয়ে তার সামনে হাজির হন ও তাকে বর চাইতে বলেন। এরপর দ্রোপদী বলেন “হে মহাদেব, যদি প্রসন্ন হয়ে থাকেন, তবে যাতে আমি সর্বগুণ সম্পন্ন পতি লাভে চরিতার্থ হতে পারি, এরূপ বর প্রদান করুন।” এই কথা তিনি ভুলবশত পাঁচবার উচ্চারণ করেছিলেন আর প্রতিবারই মহাদেব‘তথাস্তু’বলেছিলেন। এরপর মহাদেব বলেন যে,“হে কন্যা,তুমি পাঁচবারই পতি বাসনা করেছ, তাই পরজন্মে রাজকন্যা রূপে জন্ম নিয়ে দেবগুন সম্পন্ন পঞ্চপতি লাভ করবে।”
আরো পড়ুন : হিস্ট্রেকটমি অপারেশন বা জরায়ু ফেলে দেয় কেনো?
মহাভারতের সময়ে যখন দ্রোপদী পাঁচ বরকে বিয়ে করতে সম্মত হলেন তখন শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং সেখানে এসে দ্রৌপদীর পূর্ব জন্ম বৃত্তান্ত বলেন- "আগের জন্মের কথা মনে করার চেষ্টা করো দ্রোপদী। তুমি শিবের কাছে বর চেয়েছিলে সর্বগুনের অধিকারী স্বামী দেওয়ার জন্য। কিন্তু একটা মানুষের মধ্যে কখনোই সর্ব গুন থাকতে পারেনা। তাই তোমাকে পাঁচ স্বামী দেওয়া হয়েছে।
এদের মধ্যে সর্ব গুন আছে যুধিষ্ঠির হচ্ছেন শ্রেষ্ঠ ধার্মিক। তার মধ্যে অধর্ম নেই। ভীম হচ্ছেন সর্ব শক্তিশালী। তার মত শক্তিধর আর কেউ নেই। নকুল হচ্ছেন সর্ব সৌন্দর্যবান। অর্জুন হচ্ছে শ্রেষ্ঠ যোদ্ধা আর সহদেব হচ্ছেন নীতিবান।” এর সাথে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ আরও বলেছিলেন যে-“কোনো মানুষেরই উচিত নয় তার সাধ্যের বাইরের কোনো কিছু ভগবানের কাছে চাওয়া। কারণ ভগবানের কাছে অসম্ভব বলে কিছুই নেই। কিন্তু যে চাইবে সে তা বহন করতে পারবে কিনা তাও দেখতে হবে। এই পাঁচ স্বামী দিয়ে তোমার বর যেমন পূর্ণ হয়েছে তেমনি এটা তোমার জন্য অভিশাপ হয়েও থাকবে।"
আরো পড়ুন : অতিরিক্ত সাদাস্রাব এর সমস্যা দূর করুন ঘরে থাকা ৫ জিনিসেই!