কালাষ্টমী ব্রত কী ? এটি কার ব্রত জানলে চমকে যাবেন
- সঙ্গীতা চৌধুরী
- জুন ৩, ২০২১
হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী কালাষ্টমী ব্রত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্রত। বছরের ১২ মাসেই একটি করে কালাষ্টমী ব্রত পালিত হয়। পুরাণ অনুযায়ী প্রতি মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে কালাষ্টমী পালিত হয়।
১২ মাসের মধ্যে মাঘ মাসে যে কালাষ্টমী ব্রতটি পড়ে সেইটিকে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বলা হয়। কারণ এই কালাষ্টমীটিকে ভৈরব অষ্টমী বলা হয়। কালাষ্টমী ব্রতের দিন অনেকেই উপবাস রাখেন। কালাষ্টমী ব্রত আসলে কী এই ব্রতের যাবতীয় বিধিনিষেধই বা কী জানতে হলে পুরো প্রতিবেদনটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
ভিডিওটি দেখুন : রোজ এক কোয়া কাঁচা রসুন খান
১। কালাষ্টমী ব্রতকেই ভৈরব অষ্টমী বলা হয়, এর পেছনে কারণ আছে। মনে করা হয় মাঘ মাসের এই কালাষ্টমী ব্রতের দিনই দেবাদিদেব মহাদেব কালভৈরবের রূপ ধারণ করেছিলেন। তাই অনেকেই এই দিন উপবাস রেখে কালভৈরবের পুজো করেন। কথিত আছে যে কালাষ্টমী ব্রতের দিন উপোস রেখে কালভৈরবের পুজো করলে যাবতীয় সংকট কেটে যায়। এছাড়া কালভৈরবের পুজো করার ফলে সংসারে সুখ শান্তি নেমে আসে বলেও প্রচলিত আছে।
২। কাল ভৈরব আসলে শিবেরই এক রূপ আর এই দেবতার আরাধনা করা হয় কালাষ্টমীতে। ১৬ ভাবে এই কালভৈরব দেবতাকে সন্তুষ্ট করা যায়। তবে শৈব-ভক্তরা কালাষ্টমী তিথিতে শিব পার্বতীর পুজো করে ভৈরব বাবার কাহিনী পাঠ করেন। এইভাবে পুজো করলে সংসারের থেকে যাবতীয় অশুভ শক্তি দূরে যায় সংসারের মধ্যে শুভশক্তি বিরাজ করে।
ভিডিওটি দেখুন : গরমে আপনার শরীর ঠান্ডা রাখবে যে খাবার!
৩। কাল ভৈরব বাবার বাহন কুকুর। তাই বিশ্বাস করা হয় যে, এই দিনে যদি কুকুরকে খাওয়ানো হয় তা অত্যন্ত শুভ হয়। আবার কোন মাসে কালাষ্টমী ব্রত যদি শনি অথবা মঙ্গলবার পড়ে তাহলে তো আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচনা করা হয়।
৪। কালভৈরব দেবতার আরাধনা করলে রাহু - কেতুর অশুভ প্রভাব থেকে মুক্তি পাওয়া যায় বলেও কথিত আছে।
৫। মহাদেবের অত্যন্ত উগ্রচন্ডা রূপ হলেন কালভৈরব। কালভৈরবের পুজোয় কোনরকম ভুল-ত্রুটি করা যাবেনা। পুরাণ অনুযায়ী একবার ব্রহ্মা বিষ্ণু ও শিবের মধ্যে কার ক্ষমতা বেশি এই নিয়ে ঝগড়া হয়েছিল সেই সময় ব্রহ্মা শিবকে অপমান করলে মহাদেব এতটাই ক্ষুব্ধ হয়ে যান যে তার কপাল থেকে কালভৈরব বেরিয়ে আসেন এই কালভৈরব ব্রহ্মার পাঁচ মাথার মধ্যে একটি কেটে ফেলেন।
আরো পড়ুন : প্রতারিত হচ্ছেন কাছের মানুষের দ্বারা? জবাব দিন আপনিও!
ব্রহ্মার মস্তক ছেদন করার ফলে কালভৈরবের বাঁ হাতের তালুতে ব্রহ্মার কাটা মাথাটি আটকে যায়। এই পাপের থেকে মুক্তি পেতে কপালি নদীতে স্নান করে কালভৈরব একজন নগ্ন ভিখারির বেশে পৃথিবী ভ্রমণ করতে শুরু করেন এইভাবে ভ্রমণ করতে করতে তিনি যখন বারাণসীতে গিয়ে পৌঁছান,তখন তিনি এই পাপের থেকে মুক্ত হন। এই কারণে বলা হয় কালাষ্টমীতে কালভৈরবের পুজো করলে সকল পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।