একটি শিশু জন্মের পর থেকে মা বাবাকে হারালো, কোন কর্মের ফলে ?

  • সঙ্গীতা চৌধুরী 
  • জুলাই ৭, ২০২১

আমরা অনেক সময় ভাবি যে, আমাদের জীবনে কেন এত কষ্ট, আমরা তো কিছুই করিনি। আমরা তো কখনো কারো চোখের জল ঝরায় নি। তাহলে কেন সবসময় দুঃখ-কষ্ট আমাদের পিছনেই পড়ে থাকে, কেন আমাদের জীবনে এত শোক! কেন সুখ আমাদের কপালে সহ্য হয়না! এই সকল প্রশ্নের উত্তর আছে গীতায়।‌ ভগবান শ্রীকৃষ্ণ আমাদের বলেছিলেন যে,'কর্মের গতি বড় জটিল’।

হ্যাঁ সত্য এটাই যে কর্মফল আমাদের ভুগতেই হবে, যেকোনো কর্ম আমরা করেছি তার কর্মফল নিশ্চিত ভাবেই আমাদেরকে ভোগ করতে হবে, সে কর্ম আমরা জেনেই করি বা না জেনেই করি৷ যেমন আগুনে হাত দিলে হাত পুড়বেই পুড়বে। তা জেনেই দেওয়া  হোক বা ঘুমের ঘোরে না জেনে দেওয়া হোক। এখন যে ব্যক্তি বুদ্ধিমান, সে এই সকল তত্ত্ব  খুব ভালো ভাবে জানে বলেই তারা সহজ সরল ভাবে এমন জীবন যাপন করে যাতে তার দ্বারা কোন ব্যক্তির চোখ দিয়ে এক ফোটাও জল না ঝরে।

ভিডিওটি দেখুন :  ভুলেও পিরিয়ডের সময় যে কাজগুলো করবেন না!

অর্থাৎ কোন ব্যক্তির চোখ দিয়ে যদি এক ফোটাও জল ঝরে থাকে আপনার জন্য তবে আপনাকে তার অনেক গুণ বেশি জল ঝরাতে হবে কর্মফল এটাই বলে। এখন প্রশ্ন উঠতে পারে জন্মের পর থেকেই অনেককে অনেক কষ্ট সহ্য করতে হয়, জন্মের পর একটা অজ্ঞান শিশুর হয়তো পিতা-মাতা বিয়োগ হলো বা সে জন্ম লগ্ন থেকেই অসুস্থ, তবে সেই শিশু কেন এত কষ্ট পাচ্ছে? মনে তখন প্রশ্ন আসে যায় কার কর্মফল সে ভোগ করছে? শুনতে অবাক লাগলেও এটা সত্যি যে, সেই শিশুটি অন্য কারো নয় বরং তার নিজেরই কর্মফল ভোগ করছে।

এই জন্মে সে হয়তো সদ্যই জন্মেছে, তাই এখনো অবধি তার নতুন করে কোন কর্ম করা হয়ে ওঠেনি, কিন্তু তার গতজন্মের সে হয়তো এমন কিছু মারাত্মক অপরাধ করেছে, যার ফলস্বরূপ সেইজন্যে অসুস্থ হয়ে জন্মাচ্ছে,বা জন্মের পরেই তাঁর মাতৃ পিতৃ বিয়োগ ঘটছে। তাই প্রতিটি মানুষকে এমন ভাবে জীবন ধারণ করা উচিত যাতে কাউকে দুঃখ দিতে না হয়। গত জন্মে যে পাপ আমরা করেছি তার থেকে বাঁচার আমাদের একটি উপায় তা হল ভগবানের শরণাগত হওয়া। 

ভিডিওটি দেখুন :  নবজাতকদের দ্রুত ঘুম পাড়াবেন যেভাবে...

আমরা আমাদের যাবতীয় কর্মফলের আশা ভগবানের চরণে সমর্পণ করেন যদি আমাদের দায়িত্ব ও কর্ম গুলো ঠিকঠাক করে সম্পন্ন করতে পারি তাহলে পূর্ব জন্মের পাপ এর হাত থেকে আমরা কিছুটা হলেও নিস্তার পাবো।

কারণ ভগবানের চরণে কর্মফলের আশা ত্যাগ করেন যে তাকে ভগবানই দেখেন। সমস্ত কর্মফলের আশা ত্যাগ করে এই জন্ম টি এমন ভাবে কাটাতে হবে যাতে মনের মধ্যে কোন প্রকার অহংকার, হিংসা, ঈর্ষার জন্ম না হয়! আমাদের আচার আচরণের দ্বারা বক্তব্যের দ্বারা কাউকে অসম্মান করা উচিত নয়, কারণ একজনের অন্তর থেকে বেরোনো দীর্ঘশ্বাস আমাদের জীবনে অভিশাপ হয়ে উঠতে পারে মুহূর্তের মধ্যে ই।

ভিডিওটি দেখুন : ছোট্ট শিশুর ত্বকের যত্ন...

তাই কর্মফলের থেকে যদি বাঁচতে চাই তাহলে গীতায় বলা  শ্রীকৃষ্ণের কথা অনুযায়ী,“ সর্বধর্মান পরিত্যাজ্য মামেকং শরণং ব্রজ। অহং ত্বাং সর্বপাপেভ্যো মোক্ষয়িষ্যামি মা শুচঃ” এই বাণীটি বিশ্বাস করে আমাদের জীবন ধারণ করতে হবে। উপরিউক্ত বাণীটির অর্থ হলো, সমস্ত ধর্ম পরিত্যাগ করে তুমি একমাত্র আমার শরণ গ্রহণ করো, আমিই তোমাকে সকল পাপের থেকে রক্ষা করবো।-তাই আমাদের ভগবানের শরণাপন্ন হওয়া উচিত, এতেই সমুদয় দুঃখ কষ্টের হাত থেকে আমরা নিস্তার পাবো। হরিবোল, রাধে রাধে, হরে কৃষ্ণ।


 

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Comment