জীবন দর্শন নিয়ে মুফতি মেনকের সেরা উক্তি। 

  • অনুবাদ : তানিম ইশতিয়াক  
  • সেপ্টেম্বর ১১, ২০২২

১. ঘৃণা করুন কম, ভালোবাসুন বেশি‍।

২. যেখানে বিশ্বাস, সেখানেই আশা।

৩. অন্যের প্রতি আপনার আচরণ কেমন, তার ভিত্তিতে আপনাকে মূল্যায়ন করা হয়‍। সুতরাং এটাতে মনোযোগ দিন‍।

৪. কাউকে অপমান করা কখনো সংশোধনের পদ্ধতি হতে পারে না‍। এটা আরও ক্ষতি করে, একইসাথে প্রমাণ করে যে, আমাদের নিজেদেরই সংশোধনের দরকার আছে‍। 

৫. অনেক অনেক ভুল করার পরেও আমরা নিজেদের ভালোবাসি‍। তাহলে একটা দুটো ভুলের জন্য অন্যদের কেন ঘৃণা করি?

৬. মানুষ যদি আমাদের কাছে খারাপ চরিত্র প্রদর্শন করে, তাতে আমাদের ভালো চরিত্রের নড়চড় হওয়া উচিত না‍।

৭. অতীতের কোনো ভুল যেন আপনার ভালো কিছু অর্জনের আশা নষ্ট না করে‍। কেউ কেউ তাদের নিকৃষ্ট অতীত নিয়েও নিজেদের ভবিষ্যতকে মহৎ করতে পেরেছেন‍।

৮. যখন আপনি একা হয়ে যান, তখন বুঝবেন, আল্লাহ সবাইকে সরিয়ে দিয়েছেন, এখন কেবল আপনি আর তিনি‍।

৯. যতক্ষণ আপনার জীবন আছে, ততক্ষণ সমস্যা থাকবে‍। সেগুলো সরাসরি মোকাবেলা করুন, সমাধানের সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন‍। সমস্যা থেকে পালিয়ে যাওয়া কোনো বিকল্প হতে পারে না‍।

১০. আমরা একটা অদ্ভুত জগতে বাস করি‍। যেখানে গরিবরা খাবার জোগাড় করতে লম্বা পথ হাঁটে, আর ধনীরা খাবার হজম করতে‍।

আরো পড়ুন : সন্তানের ক্যারিয়ার গড়তে অভিভাবক হিসেবে মাথায় রাখুন কিছু বিষয়

১১. যখন কেউ আপনাকে বিরক্ত করার চেষ্টা করে, তখন মনে রাখবেন, আপনার জবাবে নিয়ন্ত্রণ না থাকতে পারে। নিজেকে রক্ষা করুন, কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাবেন না। 

১২. যদি কাজটা আপনাকে জড়িয়ে না নেয়, নিজে তাতে জড়িত হবেন না। 

১৩. কোনো কিছুর জন্য আল্লাহকে হারিয়ে ফেলার চেয়ে আল্লাহর জন্য কোনো কিছু হারিয়ে ফেলা উত্তম।

১৪. দামি জামাকাপড় দিয়ে নিজেকে সজ্জিত করার চেয়ে উত্তম চরিত্র দিয়ে সজ্জিত করা বেশি আকর্ষণীয়।

১৫. মনের শান্তি যদি বজায় রাখতে চান, তবে দূর করুন রাগ, অসন্তুষ্টি. অভিযোগ ও দুশ্চিন্তা।

১৬. প্রিয়জন থেকে বিদায় নেওয়ার সময় সর্বদা ভালোবাসার কথা বলুন, হতে পারে এটাই তার সাথে শেষ দেখা। 

১৭. আপনি যদি অন্যের কাছে সম্মানিত হতে চান, তবে অন্যকে সম্মান দেওয়া শিখুন।

১৮. আপনার শরীরের সবচেয়ে শক্তিশালী অঙ্গদ্বয় হচ্ছে মস্তিষ্ক ও হৃদয়। এ দুটোর নিয়ন্ত্রণ অন্যের কাছে দিবেন না। 

১৯. হাসিমুখে কথা বলা যেখানে সওয়াবের কাজ, অন্যের মুখে হাসি ফোটানো আরও বেশি সওয়াবের। 

২০. যখন আপনার হৃদয় ভেঙে যায়, কিছুই ঠিকমতো হয়নি বলে হতাশ হয়ে পড়েন; তখন হাতদুটো উপরে তুলুন, আল্লাহর সাথে কথা বলুন। আঘাত যদি খুব বড় হয়, আপনার কথা বলার দরকার নেই, হৃদয় দিয়ে নীরবে চান। তিনিই এটি বানিয়েছেন, তিনিই আরোগ্য দিবেন। 

আরো পড়ুন : আদর্শ বাবা-মা হয়ে উঠতে করণীয়

২১. আপনার কষ্ট যেন আপনাকে নির্দয় না করে। কেউ জানে না আরেকজন কীসের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। পৃথিবীতে এমনিতেই অনেক কষ্ট।

২২. জীবনের প্রতিটি সঙ্কট আমাদের হয়ত তিক্ত করে, নয়ত উত্তম বানায়। প্রতিটি সমস্যা আমাদের গড়ে তোলে নয়ত ভেঙে দেয়। পছন্দ আমাদের, আমরা কি ভিক্টিম হবো, নাকি বিজয়ী? 

২৩. যেই মুহূর্তে আপনি নিজের জীবনকে অন্যের সাথে তুলনা করা শুরু করবেন, সেই মুহূর্তে আপনি আপনার পতনের সূচনা করবেন। আপনি শান্তি হারিয়ে ফেলবেন, আপনার কৃতজ্ঞতাবোধ নষ্ট হবে। আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করুন। 

২৪. সবকিছুর উপরে বিনয়। কোনো ব্যাপার না যে আপনি কত সফল, কত সুদর্শন, কত ধনী বা কত স্মার্ট। মনে রাখবেন, কেউ ঔদ্ধত্য পছন্দ করে না। মানুষের কাছাকাছি থাকুন, বাস্তবে থাকুন। সত্যিকার সফলতার চিহ্ন এটাই।

২৫. জীবন কী? কয়েকটা দিন মাত্র। মনে রাখুন, একটি দিন অতিক্রম করলেন মানে জীবনের একটা অংশ শেষ হয়ে গেল। এভাবে আমরা চূড়ান্ত গন্তব্য পৌঁছে যাই। তাই ভালো কাজ করুন, উন্নত করুন নিজেকে যতটা পারেন। আপনাকে সেভাবেই স্মরণ করা হবে। 

২৬. যখন আপনি নিজের  জিহ্বাকে নিয়মানুবর্তী করা শিখবেন, তখন আপনি অন্যের খুঁত ধরা, ধারণা করা, নিন্দা করা বন্ধ করবেন। আপনি কেবল নিজের দুর্বলতার দিকে নজর দিবেন। 

২৭. নগ্নতার এই যুগে আপনি যত বেশি নিজেকে প্রকাশ করবেন, তত বেশি আপনাকে সস্তা মনে করা হবে। যদিও পৃথিবী আপনাকে অনুভব করাবে যে আপনি উদার। আত্মার পরিশুদ্ধি ও হৃদয়ের গভীর প্রশান্তির জন্য শালীন পোশাক বড় ভূমিকা রাখে।

২৮. যখন কেউ কোনো কাজ হাতে নিয়ে ব্যর্থ হয়, তাকে আরও নিচে ফেলে দিবেন না। তাকে একটি উৎসাহবাচক কথা বলুন। কেউ সফল হলে প্রশংসা করার চেয়ে কেউ ব্যর্থ হলে তাকে ভালো কথা বলা দরকার। 

২৯. এই জীবনে সুখের এবং কষ্টের সময় পালাক্রমে আসে। যখন সবকিছু ভালো থাকে, তখন আত্মতুষ্টিতে ভোগা উচিত নয়। স্মরণ রাখুন, ইমানদারিত্ব হচ্ছে, যখন কষ্টের সময় যায়, তখন ভালো সময়ের জন্য অপেক্ষা করা। 

৩০. আমি তাদেরকে গুরুত্ব দেই, যারা আমাকে সংশোধন করে। কেননা তারা না থাকলে আমি দীর্ঘসময় ধরে একই ভুল বারবার করে যেতাম। 

আরো পড়ুন : গবেষণা বলছে, কন্যা সন্তানের বাবারা বাঁচে বেশিদিন

৩১. যখন আপনার জীবন থেকে কেউ চলে যায়, সম্ভবত এই কারণে যে, আল্লাহ জানেন এটাই আপনার জন্য উত্তম, তিনি আপনাকে ভবিষ্যতের অজানা ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে চেয়েছেন। 

৩২. আমরা সবাই ব্যথা পাই। আমাদের সবার ক্ষত আছে। কিন্তু আপনি এই অজুহাতে কিছু না করে বসে থাকতে পারেন না। মনে রাখুন, যন্ত্রণা আমাদের জীবনের অংশ। আপনার ইমোশনাল ক্ষত আপনাকে শক্তিশালী করে। কারণ এটা দেখিয়ে দেয় যে আপনি একটা উদ্দেশ্যপূর্ণ জীবনযাপন করছেন। 

৩৩. ঘৃণাজীবীরা হচ্ছে সেইসব লোক যাদের আত্মশক্তি কম। তারা নিজেদের উপর আস্থা করে না। তাই তারা চেষ্টা করে হীন উপায়ে অন্যদের নিচে নামিয়ে নিজেদের উপরে রাখতে। তাদের সমালোচনা ও নেতিবাচকতা যেন আপনাকে জীবনের লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত না করে। 

৩৪. আপনার সব দিন সমান হবে না। একদিন দুঃখের, একদিন সুখের। একদিন লোকসান হবে, একদিন লাভ। এটাই জীবনের পরীক্ষা।

৩৫. আপনি যা কিছু করতে চান, তা এখনই করুন। আপনার গড়িমসির জন্য এই অজুহাত দিবেন না যে, আপনি সঠিক সময়ের অপেক্ষা করছেন। নিখুঁত শব্দটি এই পৃথিবীর জন্য নয়। সুতরাং অপেক্ষায় আটকে থেকে দুঃখ না করে এটার উপরে কাজ করুন। আজই শুরু করুন।

৩৬. আপনার সাথে যে অন্যায় করেছে, তাকে মন থেকে একেবারেই ক্ষমা করতে পেরেছেন কিনা দেখুন। এটা করা কঠিন, কিন্তু এর পুরস্কার অনেক বড়, আল্লাহ নিজেই প্রতিদান দিবেন।

৩৭. যখন একটা বিষয় মিটমাট হয়ে যায়, তখন অতীত টেনে আনা ঠিক নয়।

৩৮. আপনি যদি এটা নিয়েই জীবনে ব্যস্ত থাকেন যে কে আপনাকে আঘাত করল, কে আপনাকে ভেঙে দিল, তাহলে আপনি দুঃখের জগতেই যাত্রা করেছেন। ইতিবাচক দিক দেখতে শিখুন- কে সবসময় পাশে ছিল, কে আড়াল থেকে সাহায্য করেছিল, কে একবার আপনার মুখে হাসি ফুটিয়েছিল। 

৩৯. কষ্ট পাওয়ার একটা উদ্দেশ্য থাকে। এটা আপনার হৃদয়কে বিগলিত করে। আপনাকে আল্লাহর কাছাকাছি নিয়ে যায়। এটা আপনাকে দেখিয়ে দেয় ঐশ্বরিক প্রজ্ঞা। তাই একে গ্রহণ করুন। 

৪০. সেইসব লোকজন ও পরিবেশ থেকে দূরে থাকতে শিখুন, যাতে আপনার মনের শান্তি, আত্মমর্যাদা, মূল্যবোধ, নৈতিকতা ও আত্মশক্তি নষ্ট হয়। তাদের কাছে যুক্তি দিবেন না, তাদের সাথে বিতর্কে জড়াবেন না। তারা আপনার কথার যোগ্য না। এটাই ম্যাচিউরিটি। 

আরো পড়ুন : বাচ্চাকে সবসময় " না " বলেন? এর প্রভাব জানেন?

৪১. নির্দয় ব্যক্তিদের জন্য আপনার দয়া বন্ধ করবেন না। মনে রাখুন, যারা দয়ামায়া কিছু বোঝে না, তাদের জন্যই কিছু দয়া দরকার। তাই আপনি নিজের পথে চলুন। দয়া করুন জগতের সবচেয়ে নির্দয় ব্যক্তিদের জন্য, তাদের খুব দরকার।

৪২. যখন আপনি রাগ নিয়ন্ত্রণ করেন, তখন আপনি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করেন। এটা আপনার চরিত্রের শক্তি পরীক্ষা। তাই সচেতন হোন, যেন পরে অনুতাপ না করেন। 

৪৩. আপনি যখন ইবাদাত করেন, এটা ব্যাপার না যে আপনি কতটা দূরত্ব অনুভব করেন। সংযোগ বিচ্ছিন্ন করবেন না। আল্লাহকে ফিরে পাওয়ার এটাই পথ। লেগে থাকুন।

৪৪. বৈষয়িক বস্তু, সম্পদ, খ্যাতি কখনো গুরুত্বপূর্ণ না। গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে অন্তর। আল্লাহ দেখেন না যে আপনি দেখতে কেমন, বরং দেখেন আপনার মনে কী আছে।

৪৫. এমন কাউকে বিয়ে করুন, যে আল্লাহর পথে গভীরভাবে অনুরাগী। কেননা আপনার সন্তান তাকে অনুসরণ করবে। 

৪৬. আপনি অন্যদের কী বলছেন সেই ব্যাপারে সতর্ক হোন। কেননা আপনার কথা ফিরিয়ে নেওয়ার সুযোগ আর নাও পেতে পারেন। আপনি হয়ত রাগের মাথায় এমনকিছু বলেছেন, যা আপনি বোঝাতে চাননি, পরে অনুশোচনা করছেন। প্রতিদিন যদি এটা নিয়ে ভাবেন, তাহলে সহজ হয়ে যায়।

৪৭. জগতের সকল নারীর জন্য দয়া, ভদ্রতা, তুষ্টতার কোনো দাম নেই, যদি না ঘরের বউ, বোন ও মায়ের প্রতি তা না থাকে। 

৪৮. রাগের মাথায় কখনো গালিগালাজ করবেন না। আপনার রাগ চলে যাবে, কিন্তু খারাপ কথা কারো জন্য ক্ষত হতে পারে জীবনভর। ভালো কথা বলুন, নয়ত চুপ থাকুন।

৪৯. ভালো কাজ করুন শুধু আল্লাহর উদ্দেশ্যে। কারো কাছ থেকে স্বীকৃতি, অভিনন্দন বা কৃতজ্ঞতা আশা করবেন না। আপনার প্রতিদান কেবল এক আল্লাহর কাছেই চান।

৫০. আজ রাতে বিছানায় যাওয়ার আগে, তাদের জন্য দোয়া করুন- যাদের বিছানা নাই, মাথার উপরে ছাদ নাই, পোশাক নাই, খাওয়ার মতো দানা নাই।

আরো পড়ুন : প্রিয় মানুষটি মিথ্যা বলছে না সত্যি? বুঝবেন যেসব লক্ষণে

৫১. মানুষ যেন আপনার মন, আবেগ ও অনুভূতি ঘুরিয়ে দিতে না পারে। আপনি কীভাবে চিন্তা করবেন সেটাও কেউ যেন নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে। কাউকেই তা করতে দেওয়া উচিত না। আপনার ভাবনাগুলো আপনার নিজস্ব। এটাই আপনার সবচেয়ে শক্তিশালী জিনিস। এই ক্ষমতা কখনো অন্যের হাতে দিবেন না।

৫২. অন্যদের তুলনায় আপনার দেরি হচ্ছে, তার মানে এই না যে আপনি ব্যর্থ। আপনার চারপাশের লোকদের সাথে আপনার জার্নির তুলনা করবেন না। আপনি হতাশ হয়ে পড়বেন, আপনার স্বপ্ন ভেঙে যাবে। আপনার পথে আপনি এগিয়ে যান নিজের সর্বোত্তম পদ্ধতিতে। সামনের পথটাকে ফোকাস করুন। দিগভ্রান্ত হবেন না।

৫৩. যারা পাপের পথে জীবনযাপন করে, তাদের সাথে অন্তরের যোগাযোগ রাখবেন না। একদিন আপনাকে গভীর অনুশোচনায় পড়তে হবে। বিজ্ঞতার সাথে বন্ধু বাছাই করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ জেনেশুনে বা অজান্তে তারা আপনার জীবনে বড় পরিবর্তন ঘটিয়ে দিতে পারে।

৫৪. যখন জিনিসটা আর উদ্দেশ্য পূরণ করছে না, তখন তা চিহ্নিত করুন। আপনি তা ছেড়ে দিন, সেটা ঔদ্ধত্য বা অহংকারের কারণে নয়, বরং তা আপনার জীবনের সাথে আর খাপ খাচ্ছে না। সুতরাং ওই চ্যাপ্টার ক্লোজ। শিক্ষা নিন। ধুলো সরিয়ে ফেলুন। জীবন নষ্ট করবেন না। মুভ অন। 

৫৫. অন্যের জীবন নিয়ে ঈর্ষা করবেন না। আপনি কেবল বাইরের অংশটুকু দেখতে পান। আপনি যদি আরও গভীরে ঢুকতে পারেন, দেখবেন, প্রত্যেকেই বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে। একদম প্রত্যেকেই। ব্যতিক্রমের কথা বাদ। 

৫৬. নেতিবাচক মানসিকতা থাকলে ভালো কথাও খারাপভাবে নিবে। কিন্তু একটা ইতিবাচক মন খারাপ কথার মধ্যেও একটা ভালো জিনিস খুঁজে নিতে পারে। 

৫৭. ঔদ্ধত্য মানসিক অচলাবস্থা তৈরি করে। ভালো জিনিস গ্রহণ করতে বাধা দেয়। বিনয় মানুষকে উন্মুক্ত করে। সে উপদেশ খোঁজে, জ্ঞান আত্মস্থ করে।

৫৮. আপনি যদি একটা সার্থক দিন কাটাতে চান, তাহলে অপরের জন্য কিছু করতে সময় ব্যয় করুন। বয়ষ্ক ও অসুস্থদের সেবা করুন। কাউকে সুখী করুন। ভালো কিছুর প্রসার ঘটান। 

৫৯. আপনি যাদের ঘিরে থাকতে চান, সেসব লোক নির্বাচনের ক্ষেত্রে সতর্ক হোন। যাকে আপনি সবচেয়ে বেশি বিশ্বাস করেন, সে আপনাকে নিচে নামানোর চেষ্টা করতে পারে। সবচেয়ে দুঃখজনক হচ্ছে বিশ্বাসঘাতকতা, আর সেটা সাধারণত শত্রুর কাছ থেকে আসে না।

৬০. স্যোশাল মিডিয়ায় অন্যদের আক্রমণ করার জন্য ভিন্ন নাম ধারণ করা কাপুরুষোচিত সস্তা কাজ। সম্মানিত ব্যক্তিরা তাদের আসল পরিচয় ব্যবহার করে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মর্যাদার সাথে সমাধান করে। বেনামী অপমানের কোনো গুরুত্ব নেই। তারা মূল্যহীন। তাদের উপেক্ষা করুন।

আরো পড়ুন : কন্যা সন্তানের সুরক্ষার দায়িত্ব নিন

৬১. আপনি যদি প্রতিনিয়ত প্রান্তিকে অবস্থান করেন, উত্তেজিত থাকেন, খিটখিটে হন, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয়ে অভিযোগ করতে থাকেন, সহনশীলতার নিম্নে থাকেন, আশেপাশের মানুষের প্রতি বিরক্ত হন; তাহলে সতর্ক হোন। এগুলো দুর্বল ঈমানের লক্ষণ। আপনার জীবনে আরও ধৈর্য ও সহনশীলতার চাষাবাদ করুন। 

৬২. জীবনের কোনো গ্যারান্টি নাই। অথচ মৃত্যু একেবারে নিশ্চিত, সবার জন্যই। তবু্ও এখনো আমরা মৃত্যুর চেয়ে জীবনের জন্য বেশি প্রস্তুতি নিই।

৬৩. মনে রাখুন, লোকেরা জানে না, আপনি কীসের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। আপনি যা অনুভব করছেন, তারা তা করছে না। আপনার সম্পর্কে তারা যা বলছে, তা উপেক্ষা করতে নিজেকে প্রশিক্ষণ দিন। আপনি মুক্ত ও স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন। আপনি অনুভব করবেন আপনার পিঠ থেকে বিশাল বোঝা নেমে গেছে। আপনার হৃদয় অনেক হালকা হবে। 

৬৪. আমাদের জীবনে সবচেয়ে মূল্যবান উপহারগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে সময়। আমরা যদি শুধু জানতে পারতাম, এই পৃথিবীতে আমাদের আর কতটুকু সময় বাকি আছে, তাহলে আমরা দিক হারাতাম না, ফোকাস হারাতাম না। অকেজো অর্থহীন উদ্দেশ্যহীন কাজে আমাদের শক্তি ও মনোযোগ নষ্ট করতাম না। খুব দেরি হয়ে যাওয়ার আগেই জেগে উঠুন। 

৬৫. দয়ালু হোন, সঙ্গীর উপরে জুলুম করবেন না। দয়ামায়ার অভাবেই দাম্পত্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। অধিকাংশ ডিভোর্সের এটাই কারণ। রাগ, স্বার্থপরতা, দায়িত্বহীনতা ও সমালোচনার কারণে মায়া কমে যায়। একটু একটু করে মায়া কমে গেলে বিবাহের ভিত্তি নড়বড়ে হয়।

৬৬. আপনি যখন অন্যদের মধ্যে ত্রুটি খুঁজতে থাকেন, তখন আপনি শুধু সেটাই দেখতে পাবেন। আপনি তাদের সৌন্দর্য দেখতে পাবেন না। মানুষের মাঝে ভালো কী আছে তাতে ফোকাস করা শুরু করুন।

৬৭. অন্যের ব্যাপার নিয়ে অনর্থব্যস্ত হবেন না। অনধিকার চর্চা করবেন না। যে ব্যাপারে আপনার কোনো দরকার নেই, সে ব্যাপারে অযথা কৌতূহল দেখাবেন না। নিজের জীবনের দিকে ফোকাস করুন।

৬৮. আপনার হৃদয় যদি সর্বদা তুষ্ট থাকে, তাহলে আপনি সেই ব্যক্তি, বা তার চেয়ে ভালো ব্যক্তি, যার কাছে এই দুনিয়ার সবকিছু আছে।

৬৯. সৌভাগ্যবান সেই ব্যক্তি, যার এই দুনিয়ার সবকিছু আছে, কিন্তু সবসময় নম্র থেকেছে, এটা মনে রেখে যে, এইসব ছেড়ে চলে যেতে হবে।

৭০. আমরা আক্ষরিক অর্থেই নিজেদের এবং অন্যদের ছবি তোলা ও ভিডিও করার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েছি। আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায় শোঅফ করা জীবন আর বাস্তব জীবনকে আলাদা করার একটা উপায় হয়ে গেছে এটি। যেভাবেই হোক, আমাদের ডিভাইসগুলো আমাদের ভাইসে (দোষ) পরিণত হয়েছে; এগুলো আমাদের জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করেছে।

আরো পড়ুন : মেজাজ হারালে নিজেকে শান্ত করার উপায়

৭১. আপনি মনে করতে পারেন, সবচেয়ে বড় পরীক্ষা হলো সম্পদ বা স্বাস্থ্য, অথবা প্রিয়জনকে হারানো। কিন্তু দুঃখজনক সত্য হচ্ছে, সবচেয়ে খারাপ ভয়ানক হলো কারো হৃদয় শুষ্ক হয়ে যাওয়া। একটা পাপের কাজ করেও যে হৃদয়ে কোনো বোধ তৈরি হয় না। বারবার সতর্কবাণী শুনেও যে হৃদয় তা অগ্রাহ্য করে। 

৭২. ভুল করার পরে ক্ষমা চাওয়া কিছু লোকের কাছে অত্যন্ত কঠিন মনে হয়। এটা তাদের অহংবোধের কারণে। তাদের ভুল যতই সুস্পষ্ট হোক না কেন, আপনি তাদের কখনো ’স্যরি’ বলাতে পারবেন না। এমন অহংকার থেকে সাবধান। সামান্য সর্ষের দানা পরিমাণ অহংকার থাকলেও তিনি জান্নাতের ঘ্রাণ পাবেন না। 

৭৩. হাসির আড়ালে ব্যথা লুকিয়ে রাখা সহজ নয়। এটা আপনি তখন পারবেন, যখন নিজের চেয়ে অন্যের ব্যাপারে ভাববেন। মনে রাখবেন, একটা হাসি অনেককিছু লুকোতে পারে- ভয়, দুঃখ, কষ্ট, অশ্রু। কিন্তু বড় যে জিনিসটা প্রমাণ করে তা হচ্ছে আপনার শক্তিমত্তা।  

৭৪. সত্য হচ্ছে, আমাদের যা কিছু আছে, যা আমরা দেখি, যা আমরা করি; তা নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট নই। কারণ, আমরা যখন অনলাইনে যাই, তখন দেখি, কেউ আমাদের চেয়ে বেটার কিছু পেয়েছেন বা করেছেন; অথবা অন্তত তারা এভাবেই দেখান। সোশ্যাল মিডিয়াকে আপনার জীবন ধ্বংস করতে দিবেন না। 

৭৫. আপনি যাকিছু করেন না কেন, এই ফাঁদে পা দিবেন না। নিজের ভালো ইমেজ দেখানোর জন্য অন্যকে খারাপভাবে উপস্থাপন করবেন না। এটা আপনার দিকেই আবার ফিরে আসবে, তখন সেটা ভালো দেখাবে না। মনে রাখবেন, চতুর্দিকে যা ঘুরে বেড়ায়, তা আপনার দিকেও আসে। 

৭৬. ক্ষোভ পুষে রাখবেন না। ক্ষোভ তাদের জন্য যারা কোনোকিছুতে বাঁধা থাকে। দুখী হওয়ার জন্য এটা একটা নিশ্চিত পদ্ধতি। ক্ষোভ দূরীভূত হতে দিন, আপনার হৃদয় আরোগ্য পাবে। আপনার সামনে এগিয়ে চলা সহজ হবে। পেছনের জিনিসে পড়ে থাকা আপনার কোনো কাজে আসবে না। আমাদের অবশ্যই সামনে হাঁটতে হবে। 

৭৭. সারাদিন আপনি যদি নেগেটিভ চিন্তা করে কাটান, অন্যে আপনার সাথে কী করেছে ভেবে কান্নাকাটি করেন, হতাশ বোধ করেন, জীবনকে অর্থহীন মনে করেন; তাহলে সেই দিনটাই নষ্ট! নিজেকে উপরে তুলে নিন। নিজেকে উজ্জীবিত করতে শিখুন। পজিটিভ হন, শক্ত হন, আশাবাদী হন। জীবন ছেড়ে দিবেন না। 

৭৮. আপনি কেন মনে করেন যে সমালোচকদের উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন আছে? আপনার কোনো দরকার নেই, আপনার সেই চেষ্টা করতে হবে না, কারো কাছে প্রমাণ করতে হবে না যে আপনি কেমন! আপনার জার্নি একান্তই আপনার। অবিচল থাকুন। আল্লাহর প্রশংসা করুন। শেষ পর্যন্ত তিনিই আপনার জন্য পথ বের করবেন। শান্ত থাকুন, ধৈর্য ধরুন। 

৭৯. আমাদের অনেকের কাছে ‘না’ বলা কঠিন। আমরা চাই অন্যরা আমাদের পছন্দ করুক, গ্রহণ করুক। তাই আমরা তাদের প্রত্যাশা পূরণ করতে চাই, তাদের খুশি রাখতে চাই। যখন সত্যিই আপনার ‘না’ বলা দরকার, তখন ’না’ বলতে শিখুন। এটা আপনার ভালো থাকার জন্য দরকার। আমাদের সময় বের করতে হবে, নিজেদের জন্যও সময় দরকার। এতে অপরাধবোধ করার কিছু নেই। 

৮০. এটা জীবনেরই অংশ। লোকে আপনাকে কষ্ট দেবে, আঘাত করবে। আপনাকে নিচে নামাবে, আপনাকে খারাপ ভাবাবে। আপনি কীভাবে এর প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন, তার উপরে ফলাফল নির্ধারণ হবে। মনে রাখবেন, তাদের কোনোই ক্ষমতা নেই, যতক্ষণ না আপনি তাদের পাত্তা দিচ্ছেন। তাদেরকে রসদ দিবেন না। 

আরো পড়ুন : দাম্পত্য সম্পর্কে অশান্তি এড়ানোর উপায়
 
৮১. শেষ পর্যন্ত, এত এত মহৎ কাজেও কোনো লাভ নেই, যদি আপনার হৃদয় অসুস্থ থাকে, যদি অন্তর কলুষিত হয়, যদি আপনার মনে ঈর্ষা, ঘৃণা, হিংসা ও অহংকার থাকে। তাই হৃদয়ের সুস্থতার দিকে মনোযোগ দিন। কারণ সবকিছু এখান থেকেই প্রবাহিত হয়। 

৮২. আপনি যখন উপদেশ দিতে চান, তখন এমনভাবে দিন, যেন লোকেরা আপনার কথা শুনতে চায়। কাউকে উদ্দেশ্য করে, আঘাত করে, কর্কশ ভাষায় কিছু বলবেন না। মানুষকে ছোট করবেন না। তাদের সংশোধন করতে চাইলে আন্তরিক হোন, যত্নবান হোন। তাদের পথ বাতলে দিন, ট্রাকে (অভিমুখে) ফিরতে সহায়তা করুন। 

৮৩. এমন কিছু সময় আসে, যখন আপনি অনুভব করেন, আপনার সম্ভাব্য সবকিছুই ব্যর্থতার দিকে যাচ্ছে এবং শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হচ্ছে। আপনার মনে হচ্ছে, আপনার গন্তব্য শেষ, আপনি একটা গর্তে আটকা পড়ে গেছেন। মনে রাখবেন, কখনো কখনো সেরা জায়গায় পৌঁছাতে হলে দুর্গম পথ অতিক্রম করতে হয়। ধৈর্য ধরুন। 

৮৪. যেকোনো মূল্যে আপনার নেক আমল হেফাজত করুন। মূর্খ সেই ব্যক্তি, যে অনেক ভালো কাজ করে, কিন্তু জিহ্বার নিয়ন্ত্রণ করে না। গীবত করে, কুৎসা রটায়, অপবাদ দেয়। হাশরের ময়দানে সে দেউলিয়া হয়ে উঠতে পারে। যাদের সাথে সে অন্যায় করেছে, তাদের প্রত্যেককে তার আমল থেকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।  

৮৫. তাওবা করলে সিরিয়াস হন। সেই ব্যক্তিই সত্যিকার তাওবাকারী, যিনি তার অতীতের পাপ নিয়ে অনুতপ্ত হন। তার খুব ভয় থাকে যে তিনি আবার সেই পাপে জড়িয়ে যাবেন কিনা! আরও গুরুত্বপূর্ণ হলো, তিনি সেসব খারাপ সঙ্গ থেকে দূরে থাকেন, যারা তাকে আবার পাপের পথে প্ররোচিত করতে পারে। 

৮৬. অপরের সময়ের প্রতি গুরুত্ব দিন। আমরা প্রায়শই সময়ের ব্যাপারে স্বার্থপর মনোভাব পোষণ করি। আমরা মনে করি, অন্যরা আমার শিডিউলের সাথে এডজাস্ট করবে। মানে আমি আমার সময়টাকে এদিকসেদিক করতে চাই না। আত্মকেন্দ্রিক ও একগুঁয়ে হওয়া থেকে বিরত থাকুন। 

৮৭. আজকাল আমরা রাগারাগি ছাড়া একটা সুষ্ঠু বিতর্ক করতে পারি না। আমরা নিজেদের যুক্তি দিতে এতে ব্যস্ত থাকি যে, অপরপক্ষের কথা শুনতে ভুলে যাই। সর্বদা নায্য আচরণ করুন, শান্ত থাকুন, শ্রদ্ধাশীল হন। অন্যকে কথা বলার সুযোগ দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হন।

৮৮. অন্যের সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখুন, দেখুন, এটা আপনার হৃদয়কে কেমন করে! যখনই আপনি কারো সম্পর্কে খারাপ কিছু শুনতে পান, তা প্রচার করবেন না। তাদেরকে বেনিফিট অব ডাউট দিন। আপনি নিজেকে তার জায়গায় রাখুন। আজেবাজে চিন্তা থেকে আপনার মনকে রক্ষা করুন, এটা আপনার হৃদয়কে বীতশ্রদ্ধ করে। শান্তিতে থাকুন। 

৮৯. এটা ব্যাপার না যে, আপনি একটা ভুল করে ফেলেছেন! আমরা সবাই করি।আপনাকে গতকালের ভুল বা সেই তকমা বয়ে বেড়াতে হবে না, যেন আপনি তেমনটাই হয়ে গেছেন! যেটা ঘটে গেছে, সেটা গেছে! এটা শেষ। আজ নতুন কিছু গ্রহণ করতে গেলে আগের লেবেল গায়ে রাখার দরকার নেই। সামনে চলুন। 

৯০. যখন আপনি প্রতিশোধ নিতে প্রস্তুত হন, কাউকে পরিণাম বুঝিয়ে দিতে চান, মনে রাখবেন, আপনার প্রতিক্রিয়া আপনাকেই আহত করবে, তাদেরকে না। এসবের ঊর্ধ্বে উঠতে শিখুন। প্রতিশোধ আপনাকে সাময়িক ফুলিয়ে দিতে পারে, দীর্ঘমেয়াদে এটার কোনো মূল্য নেই। কারণ আপনাকে সৃষ্টি করা হয়েছে আরও বড় ও বেটার কিছুর জন্য।

আরো পড়ুন : সফলতার সঠিক সংজ্ঞা কী?

৯১. কোনো ভালো কাজকেই ছোট করে দেখবেন না। কাজটা আপনার কাছে যত ক্ষুদ্র মনে হোক না কেন, প্রতিটি নেক কাজ একেকটি বীজ। সমস্ত বীজ ধীরে ধীরে চারা গজাবে, ফসল ফলাবে। আপনি পুরস্কার ঘরে তুলতে পারবেন। ভালো কাজে কখনো ক্লান্ত হবেন না, কল্যাণের বাম্পার ফলন আপনারই হবে। 

৯২. তর্কবিতর্ক ও মানুষের নাটকীয়তা থেকে নিজেকে দূরে রাখতে শিখুন। এগুলো আপনার শক্তি ক্ষয় করবে, মনের শান্তি হরণ করবে। একজন ম্যাচিউর ব্যক্তির পক্ষেই সম্ভব তর্কে না জড়ানো। নিজের পথে থাকুন, যদি প্রয়োজন হয়, পাশ থেকে শুনুন, নিজেকে জড়াবেন না। নিজেকে স্থির রাখুন। 

৯৩. মানুষ কী বলবে এটা নিয়ে আপনি ভাববেন না। এটা তাদের ব্যাপার। আপনি সর্বদা সদয় হবেন, এটা আপনার নিয়ন্ত্রণে। যেভাবেই পারেন, আপনি সদাচার ছড়িয়ে দিবেন, সেটা একটা হাসি দিয়ে হোক কিংবা একটা উৎসাহের কথা বলে হোক। আপনি ধারণা করতে পারবেন না, ভালো গুণ কতটা প্রভাবিত করতে পারে!

৯৪. কারো সম্পর্কে অনুমান করার সময় খুব সতর্ক থাকুন। যখন আপনার কাছে সম্পূর্ণ তথ্য থাকে না, তখন শোনা কথার উপরে ভিত্তি করে নিজের মতো ভেবে শূন্যস্থান পূরণ করতে হয়। আপনি দুইয়ে দুইয়ে চার মেলানোর চেষ্টা করেন, আর বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভুল সিদ্ধান্তে উপনীত হন। 

৯৫. অনিয়ন্ত্রিত ইগো থেকে সাবধান। এটা আপনাকে আত্মপ্রীতিতে আচ্ছন্ন করবে, যতক্ষণ না আপনি নিজের বিষয়ে ভাবা বাদ দিবেন। আপনি কেবল নিজেকে নিয়ে আর নিজেকে ঘিরে ব্যস্ত থাকবেন। এটা ধ্বংসাত্মক হতে পারে, পরিণামও হতে পারে ভয়াবহ। ইগো বাদ দিন।

৯৬. ম্যাচিউর লোকদের সঙ্গী হোন, যারা নিজের ভুল স্বীকার করে। তারা অন্যের দিকে আঙুল তোলে না এবং অন্যের ভুল নিয়ে দোষারোপ করে না। তারা নিজেদের কর্মের দায় নিতে পারে, যারা ক্ষমা চাইতে দ্বিধাবোধ করে না। এসব লোক আপনাকে জীবনকে গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। 

৯৭. এই জীবনটা কী? আমরা সবাই জানি, দুনিয়ার জীবন ক্ষণস্থায়ী। এটা মোহ আর খেল-তামাশা ছাড়া কিছু না। এটা আপনাকে প্রলুব্ধ করবে, ফাঁদে ফেলবে। তবু্ও এটার জন্যই আমাদের সমস্ত সময় ব্যয় করি, পরকালের চিরস্থায়ী জীবন গড়তে ভুলে যাই। 

৯৮. প্রত্যেকেই সফলতা চায়, কিন্তু আপনি সাফল্যে পেলে খুব কম লোক খুশি হবে। সত্য হচ্ছে, মানুষ সাধারণত আপনার লক্ষ্য ও স্বপ্ন ততক্ষণ সমর্থন করে, যতক্ষণ আপনি তাদেরকে ছাড়িয়ে না যান। দুঃখজনক হচ্ছে, তারা আপনার ভালো চায়, কিন্তু তাদের চেয়ে বেটার না। 

৯৯. আপনি যে লক্ষ্যই নির্ধারণ করেন না কেন, উত্তম হচ্ছে তা নিজের মধ্যে রাখা। সবাই আপনার শুভাকাঙ্ক্ষী না। যখন আপনি আপনার পরবর্তী উচ্চাভিলাষী কাজ নিয়ে কাউকে কিছু বলবেন, সে সবসময় আপনার জন্য সেরাটি না চাইতেও পারে। এখানে অনেক প্রতিযোগিতা, অনেক ঈর্ষা।

১০০. আমরা অনেকেই মানসিক চাপে থাকি, কারণ আমাদের খুব তাড়াহুড়া আছে। আমাদের মানসিক কিছু শিডিউল আছে, যা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অর্জন করতে হবে। ডিগ্রি নিতে হবে, বড় চাকরি করতে হবে, বিয়ে করতে হবে, বাচ্চা নিতে হবে। আমরা হতাশ হয়ে যাই, যখন শিডিউল অনুযায়ী তা না ঘটে। বিশ্বাস রাখুন, আল্লাহ আপনার জন্য যা নির্ধারণ করে রেখেছেন, তা আপনার হবেই।

আরো পড়ুন : মানসিক অবসাদ দূর করবেন যেভাবে

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Comment