কারো সাথে কথা বলার সময় যে চারটি বিষয়ে সতর্ক থাকা উচিত
- ফারজানা আক্তার
- সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৩
আজ আমি যে বিষয়টি নিয়ে কথা বলবো এটি গৌতম বুদ্ধের শিক্ষা। তিনি পছন্দের একজন শিক্ষক। উনার চিন্তা-ভাবনা, শিক্ষা, জীবনদর্শন আমার খুব পছন্দের। যে চারটি বিষয় নিয়ে তিনি আমাদের অন্যের সাথে কথা বলতে নিষেধ করেছেন এগুলো নিয়ে এখন আলোচনা করবো।
১। মিথ্যে কথা বলা যাবে না। আপনি যখন অন্য করো সাথে মিথ্যে কথা বলবেন, আজ না হয় কাল তিনিতো সত্যিটা জানবেন। তখন তিনি আপনাকে আর বিশ্বাস করবে? মিথ্যে মানুষের বিশ্বাস ভেঙ্গে দেয়। সম্পর্ক নষ্ট করে। অনেকে হয়তো বলতে পারেন সামান্য মিথ্যে বললে কী হয়? মিথ্যে কিন্তু মিথ্যেই, সেটি সামান্য হোক কিংবা সিরিয়াস পর্যায়ের; আপনার কাছে হতে পারে এটি সামান্য মিথ্যে, কিন্তু যাকে বলছেন তাঁর কাছে এটি সামান্য নাও হতে পারে। তাঁর আবেগটাও আপনাকে বুঝতে হবে।
২। মানুষে মানুষে বিরোধ তৈরী করে এমন কথা বলা যাবে না। ইংরেজিতে একে বলে divisive speech ( ডিভাইসিভ স্পিচ )। সাময়িক সময়ের জন্য অন্য দুজন মানুষের মধ্যে সমস্যা তৈরী করে দিয়ে আপনি হয়তো আনন্দ পাচ্ছেন; কিন্তু এর ফল আপনাকে ভোগ করতেই হবে - আজ কিংবা কাল। আমরা হয়তো অনেক সময় হিংসা কিংবা রাগ থেকে ডিভাইসিভ স্পিচ করে থাকি। এই বিষয়টি যেমন আপনার জন্য ভালো নয়, অন্য মানুষের জন্যও ক্ষতিকর। কথা বলার সময় সাবধানে বলুন।
আরো পড়ুন: ডিভোর্স কখন প্রয়োজন, আর কখন বিলাসিতা?
৩। কেউ কষ্ট পেতে পারে এমন কথা বলা যাবে না। মনে করুন আপনার সাথে কেউ রুডলি কথা বললো, তখন আপনার কেমন লাগে? মন খারাপ হয়, কান্না পায়, খারাপ লাগে; গৌতম বুদ্ধের ভাষ্য মতে কখনো এমন শব্দ উচ্চারণ করা উচিত নয় যা অন্যকে মানসিকভাবে দুর্বল করে দেয়।
৪। অনর্থক কথা বলা থেকে দূরে থাকুন। ইংরেজিতে একে বলে idle chatter. অনেকের মনে প্রশ্ন জগতে পারে - idle chatter মানে কী? idle chatter হলো অযথা, যুক্তিহীন কথা বলা। যে কথার কোনো ভিত্তি নাই, মিনিং নাই। মনে যা আসছে তাই বলে দেওয়া।
তার মানে এই নয় আপনি মজা করতে পারবেন না, এমনিতে হালকা কথাবার্তা বলা কিংবা গল্প করতে পারবেন না; কিন্তু সবকিছুর তো একটি সীমারেখা আছে। গৌতম বুদ্ধ এখানে বলতে চেয়েছেন - মজা করো, গল্প করো সব ঠিক আছে; সাথে নিজের সীমারেখাও মাথায় রেখো।
আরো পড়ুন: আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য কেমন হওয়া উচিত
যে চারটি বিষয় নিয়ে কথা বললাম মিলিয়ে দেখুন আমরা সবাই কমবেশি এই কাজগুলো করে থাকি। মানুষ হিসেবে আমরা বরাবর অন্যের থেকে নিজেকে সেরা হিসেবে ভাবতে এবং দেখতে পছন্দ করি। মানুষ হিসেবে নিজেকে আরো উন্নত করতে এই গুণাবলীগুলো আমাদের সকলের থাকা উচিত।
সবাই ভালো থাকুন।