বিয়ে বা জন্মদিনের তারিখ ভুলে গেলে কী করবেন
- ওমেন্স কর্নার
- জুলাই ১৫, ২০২৪
একটি দিনের সঙ্গে বিশেষ কোনো ঘটনা জড়িয়ে থাকা মানেই দিনটি বিশেষ। আর সেই দিনটি ভালোবাসা বা দাম্পত্য জীবনের সঙ্গী মনে রাখবেন, এটাই আশা করেন প্রায় সবাই। তাই জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকী কিংবা ভালোবাসা প্রকাশের প্রথম দিনের মতো দিনগুলো ভুলে গেলে অনেক সময় বাধে বিপত্তি। দাম্পত্যে এসব দিনক্ষণ ভুলে গেলে অভিমান জমতে জমতে পরিণত হতে পারে আগ্নেয়গিরিতে।
অর্থাৎ প্রিয়জনের বিশেষ দিনটির কথা ভুলে যাওয়া মানেই যেন বিপদ! অস্বীকার করার উপায় নেই, এতে সম্পর্কে তিক্ততা আনে অনেকের বেলায়। হয়তো আপনি প্রতিদিনের বিভিন্ন কাজের চাপে বা অভ্যাসবশত প্রিয় মানুষের বিশেষ দিন ভুলে গেলেন। এতে প্রিয়জনের রাগ হতেই পারে। সম্পর্ক মধুর রাখতে চাইলে অবশ্য বিষয়টি নিয়ে দুজনের মধ্যে চলমান মনোমালিন্য ঠিক করতে উদ্যোগী হতে হবে আপনাকেই। কারণ, দিনটি যে আপনিই ভুলে গেছেন। এমন ক্ষেত্রে যেভাবে প্রিয়জনের মান ভাঙাতে পারেন—
ভুল স্বীকার
বিশেষ দিনগুলো ভুলে যাওয়া অন্যায় না হলেও ভুল বটে। আর ভুল করলে কোনো অজুহাত না দেখিয়ে সরাসরি স্বীকার করে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। প্রিয়জনকে বুঝতে দিন যে আপনি আসলেই নিজের ভুলের জন্য কতটা অনুতপ্ত।
আলোচনায় বিনয়
বিশেষ দিনটি হয়তো কোনো কারণে ভুলে গেলেন। তবে যে মানুষটি সারা দিন আপনার পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা পাওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন, তাঁর দিকটাও আপনাকে বুঝতে হবে। অবশ্যই তাঁর আবেগ প্রকাশের সুযোগ দিন। আগে তাঁর অভিযোগগুলো শুনুন। শেষে তাঁকে আশ্বস্ত করুন, তিনি আপনার কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ। প্রিয় মানুষটির সঙ্গে আন্তরিকতার সঙ্গে কথা বলুন। তাকে বুঝতে দিন, আপনি আসলেই কতটা দুঃখিত এবং তাঁর আনন্দের প্রতি কতটা যত্নবান।
আরো পড়ুন:
স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ভালো রাখার ৫টি সেরা উপায়
প্রেমে পড়ার চেয়ে প্রেম টিকিয়ে রাখা কঠিন এই ৭ কারণে
ম্যারেজ কাউন্সেলিং সম্পর্কে যা কিছু জানা জরুরি
স্বামী-স্ত্রীর বয়সের পার্থক্য গুরুত্বপূর্ণ কেন? বিস্তারিত জানুন
সময় নিন
সম্পর্কে অনেক সময় উনিশ-বিশ হলেও ভুল স্বীকার করে, দুজনে খোলামেলা আলোচনা করা ভালো। তবে এ কথোপকথনে সময় নিন, একে অপরের অনুভূতি ও আবেগের বিষয়গুলো বুঝুন। সঙ্গী কী চান, তা বুঝুন। সম্পর্কের এমন চড়াই-উতরাইয়ের সময় ইতিবাচক কথোপকথন, একান্ত সময় কাটানো, যত্ন বা উপহার দেওয়া বেশ কাজে দেয়।
বিশেষ উপহার
হয়তো আপনি বিশেষ দিনটির কথা সারা দিন মনে রাখতে পারেননি। তবে যখনই মনে পড়ল, ঝটপট একটা আয়োজন করে ফেলুন। যেমন একটি চিঠি, ফুল, চকলেট বা এমন কোনো বিশেষ জিনিস তাঁকে দিন, যাতে তাঁর আগ্রহ আছে। মনে রাখবেন, মনের মানুষের কাছে আপনার প্রচেষ্টা আর ভালোবাসাই বড় বিষয়। ছোট্ট বিশেষ উপহার সম্পর্ক মধুর করে তুলতে পারে। একই সঙ্গে এ ঘটনা যাতে দ্বিতীয়বার না ঘটে, সেদিকেও চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে ফোনে রিমাইন্ডার দিয়ে রাখুন।
চমকে দিন
বিশেষ দিন ভুলে যাওয়ার ক্ষতিপূরণ হিসেবে সঙ্গীকে তাঁর পছন্দের জায়গায় নিয়ে ‘সারপ্রাইজ’ দিতে পারেন। সেখানে থাকতে পারে ডিনার, সঙ্গীর পছন্দের কবিতা বা গানের সরাসরি আয়োজন। এমন কোনো উপহারের কথা ভাবতে পারেন, যেটা আপনার সঙ্গীর খুবই প্রিয় অথবা আপনাদের সম্পর্কের আবেগের সঙ্গে যুক্ত। উপহার যে খুব ভেবেচিন্তে দেওয়া, সেটা যেন দেখেই বোঝা যায়। এতে আপনার ভালোবাসা ও অনুতপ্ততার প্রকাশ ঘটবে। বিশেষভাবে তৈরি গয়না, আপনাদের বিশেষ কোনো ছবির প্রিন্ট, নিজ হাতে বানানো কেক বা কোনো একবেলার বিশেষ খাবারেও মিলতে পারে সমাধান। এসব ছোট ছোট জিনিস আপনাদের সম্পর্ককে আরও গভীর ও দৃঢ় করবে।
শেষ সময়ে পরিকল্পনা
সারা দিনের পর হয়তো রাতেই মনে পড়ল, আজ আপনার বিবাহবার্ষিকী। মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার মতো এ সময়েও বুদ্ধি দিয়ে কাজ করুন। প্রিয়জনকে তাঁর প্রিয় ভ্রমণের জায়গা বা রেস্তোরাঁয় নিয়ে যান। দিন শেষে একটা স্পা, হোটেল বা রিসোর্ট বুকিং করাও বেশ ভালো বুদ্ধি। অথবা বাড়িতেই কাছের কিছু মানুষজনকে দাওয়াত করে সঙ্গীকে চমকে দিতে পারেন।
প্রিয় মানুষটি হয়তো দিনের পর দিন অপেক্ষায় আছেন, আপনি তাঁকে বিশেষ দিনে চমকে দেবেন। কিন্তু বারবার বিশেষ দিনগুলো ভুলে যাওয়া সুন্দর সম্পর্কের জন্য বেশ ক্ষতিকর। এ সময় আপনাদের বিশেষ দিনগুলো চাইলে ডিজিটাল ক্যালেন্ডার বা অ্যালার্মে সেট করে রাখতে পারেন। প্রিয় মানুষকে সব সময় যত্ন আর একটু বেশি ভালোবাসায় আগলে রাখলে জীবন সুন্দর হয়। তাই নিজের দিবস নিয়ে আগ্রহ না থাকলেও সঙ্গীর আগ্রহকে গুরুত্ব দিন।