ডিপ্রেশনে ভুগছেন কি?

  • তামান্না ইসলাম 
  • আগস্ট ১৬, ২০১৮

"ডিপ্রেশন বা হতাশা" এই শব্দটির সাথে পরিচয় নেই এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দায়।  Depressiv disorder বা বিষন্নতা যে কোন সাধারন কষ্ট বা দুঃখবোধ থেকে আলাদা। শাব্দিক অর্থে Depressiv disorder মানে হলো অস্বাভাবিক শারীরিক বা হতাশাপূর্ন মানসিক অবস্থা। ডিপ্রেশনে আক্রান্ত ব্যক্তি কোন কারনে স্বাভাবিক দুঃখবোধের চেয়ে অনেক বেশি সময় দুঃখী থাকে। এ অবস্থার প্রভাব পরে ব্যক্তির দৈনিক কাজের উপর। 
যেমন- নিদ্রাহীনতা, কোন কিছুতে মনোযোগ দিতে না পারা, খাবারে অরুচি, সাধারন কাজে অনাগ্রহ ইত্যাদি।

ডিপ্রেশন নানা কারনে হতে পারে। যেমন- জেনেটিক কোন সমস্যা বা মস্তিষ্কে রাসায়নিক অসমতা। কিন্তু বেশিভাগ ক্ষেত্র এর জন্য দায়ী হয় প্রিয় কাউকে হারানো বা ব্যক্তিগত ব্যর্থতা।

কেউ একজন ডিপ্রেশনে ভুগছে তার মানে এই নয় যে দূর্বল, অবস্থা সামলে নিতে অক্ষম অথবা সহজে ভেঙ্গে পরার পাত্র। বরং বলা যায় Depressiv disorder এ আক্রান্ত ব্যক্তি এমন কোন ঘটনার জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুত নয়।

ডিপ্রেশনে আক্রান্ত ব্যক্তির মনে হয় যে সে এক অন্ধকার ঘরে আটকা পরে আছে। যতোই সে সেখান থেকে বের হতে চেষ্টা করুক না কেনো বের হবার কোন পথ খোলা নেই। কিন্তু যথেষ্ট সামর্থন আর সাহায্য পেলে সেই অন্ধকার ঘরেও আলো জ্বলে, এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসা যায় স্বাভাবিক জীবনে। অনেকেই হয়তো অনেক সময় বুঝতে পারে না সে Depressiv disorder এ আক্রান্ত কি না! চলুন দেখি গত দুই সপ্তাহে আপনি নিম্নলিখিত কতোগুলা উপসর্গ অনুভব করেছেন....

১. প্রচন্ড মন খারাপ বা একাকীত্ব অনুভব। 

২. কোন কাজের প্রতি আগ্রহবোধ না করা।

৩. প্রতিদিনকার খাবারে আগ্রহবোধ না করা অথবা অতিরিক্ত খাবার গ্রহন।

৪. অল্পতেই অতিরিক্ত উত্তেজিত হওয়া, ক্লান্তিহীনতা বা কোন কিছুতেই উৎসাহবোধ না করা।

৫. নিদ্রাহীনতা বা অতিরিক্ত ঘুমানো।

৬. খুব সহজেই ক্লান্ত বোধ করা।

৭. নিজেকে মূল্যহীন মনে হওয়া বা নিজেকে নিয়ে হতাশ হওয়া।

৮. কোন কিছু সঠিক ভাবে মনে রাখতে না পারা, কোন স্মৃতিতে হারিয়ে যাওয়া, অথবা সিদ্ধান্ত নিতে অপারগতা।

৯. আত্মহত্যার চিন্তা।

যদি আপনি এই উপসর্গের যে কোন ৫টি বিষয় গত দুই সপ্তাহে প্রায় প্রতিদিন অনুভব করে থাকেন তবে হতে পারে আপনি ডিপ্রেশনের আওতাভুক্ত। তবে নিজেকে Depressiv disorder এর রোগী ভাবার আগে আপনার উচিৎ একজন সাইকোলজিস্ট এর সাথে যোগাযোগ করা।
তারা আপনার সাথে আলোচনার মাধ্যমে তাদের প্রোফেশনাল মতামত দিতে পারবে।

সাইকোলজিস্ট বা সাইকোথেরাপিস্ট এর সাথে যোগাযোগ করার মাঝে লজ্জাবোধ করার কিছু নেই। যারা মনে করেন যে সাইকোলজিস্ট দেখানো মানেই মানসিক ভারসাম্যহীন বা পাগল তাদের ধারনা ভুল। বাস্তবে যারা কোন কিছু নিয়ে খুব চিন্তিত বা অস্থিরতায় ভুগছে তারাও সাইকোলজিস্ট দেখাতে পারেন সাহায্যের জন্য। মানসিক যেকোন সমস্যা আমাদের শারীরিক সমস্যার মতোই সাধারন বিষয়।  আমাদের সমাজে মানসিক সমস্যা নিয়ে যে ট্যাবু রয়েছে তা দূর করার এখনই সময়.......

তথ্যসূত্র - ইন্টারনেট
 

Leave a Comment