আপনার জীবনসঙ্গী কি সাপোর্টিভ?
- ফারজানা আক্তার
- ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২১
জীবনে একজন সাপোর্টিভ পার্টনার পাওয়া খুব খু-ব ভাগ্যের ব্যাপার। যদি কেউ সাপোর্টিভ বউ পায় সেই পুরুষ ভাগ্যবান, যে সাপোর্টিভ স্বামী পায় সেই নারী ভাগ্যবতী। একজন মানুষ ভালো হলেই সে সাপোর্টিভ হবে এমন কিন্তু নয়। ধরুন ছাত্রী থাকা অবস্থায় আপনি বিয়ে করলেন। ইচ্ছে আছে পড়াশোনা শেষ করে নিজে কিছু করবেন। আপনার স্বামী মানুষ হিসেবে ভালো।
তবে তার পুরুষ ইগো খুব জাগ্রত। যেমন : ঘরের কাজ শুধু মেয়েরাই করবে, মেয়েদের বেশি পড়াশোনা করা উচিত না, মেয়েরা বাহিরে কাজ করবে এটা সে মানতে পারে না। কিন্তু এইদিকে সে আপনার সাথে উঁচু গলায় কথা বলে না, আপনার বাবার বাড়ি থেকে কোন দাবি দাওয়া নেই, শারীরিক / মানসিক টর্চার করে না, আপনার ভরণপোষণ সকল দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করে।
এখন আপনার স্বামীকে আপনি কী বলবেন ? মানুষ হিসেবে সে ভালো। কিন্তু সে কি সাপোর্টিভ পার্টনার ? আবার, ধরুন আপনি খুব ছোটখাটো একটি চাকরি করেন। মাস শেষে নিজের সংসার চালিয়ে গ্রামে বাবা মাকে খুব সামান্যই পাঠাতে পারেন। এভাবে আর চলছে না। আপনার বউয়ের অন্য কোন সমস্যা নেই, তবে খরচের হাত খুব বেশি।
আরো পড়ুন: সব দোষ শুধু মায়ের ? বাবারা কেন দোষের ভাগিদার হন না ?
প্রতি মাসেই তার নতুন নতুন জামা, জুতো, কসমেটিক্স, বেড়াতে যাওয়া লাগবে। আপনি বউকে দায়িত্বজ্ঞানহীন, চরিত্রহীন বলতে পারবেন না। তবে আপনার বউ কি সাপোর্টিভ পার্টনার ? আমরা যা চাই তাই করতে দেওয়াকে সাপোর্টিভ বলি। কিন্তু বিষয়টা এইরকম নয়। কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে। আপনার নিজের জীবন থেকে এই ভিন্নতাটুকু আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন।
দিনশেষে ঘরে ফিরে খাবার টেবিলে জগ ভর্তি পানি রাখলেন। আপনার বউ খাবার গরম করতে করতে আপনি টেবিলে প্লেট সাজিয়ে দিলেন। আপনি জানেন মাস শেষে আপনার স্বামীর খুব টানাটানি যায়। আপনি কিছু খরচ কমিয়ে তাকে টানাটানির হাত থেকে বাঁচিয়ে দিলেন। অথবা আপনি যদি কোন চাকরি করে থাকেন সংসারে ফিনান্সিয়াল সাপোর্ট দিলেন। আপনার বউ পড়তে চায়। আপনি তাকে সাহস দিলেন, অনুপ্রেরণা দিলেন। আপনার স্বামী চাকরি ছেড়ে ব্যবসা করতে চায় আপনি তার পাশে থাকার অঙ্গীকার করলেন।
মাঝে মাঝে আমরা কনফিউজড হয়ে যাই। ভাবি মানুষটা তো ভালো। কিন্তু কিসের যেন অভাব! কোথায় যেন সুর কেটে যাচ্ছে। সেই সুর ভালোবাসা বা প্রেমে নয়। এই সাপোর্টে। জীবনে চলার পথে এই পার্টনারের সাপোর্ট যদি আপনি পেয়ে থাকেন ধরে নিন কয়েক লক্ষ মানুষের মধ্যে আপনি অন্যতম ভাগ্যবান / ভাগ্যবতী। জীবনে অনেক কিছু না পাওয়ার ক্ষত সময়ের সাথে সাথে শুকিয়ে যায়। তবে একজন সাপোর্টিভ পার্টনার না পাওয়ার অভাব আপনাকে প্রতিনিয়ত ভুগাবে। এই ক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়া কঠিন, থেমে থাকা যন্ত্রণার।