`সম্পর্কে স্বার্থের প্রবেশ`
- সুমনা বাগচী
- এপ্রিল ২০, ২০২১
আমাদের কাছে সম্পর্ক মানেই একটা অন্য অনুভূতি। সম্পর্ক কোনো সীমাবদ্ধ শব্দে আবদ্ধ নয়। সম্পর্কের প্রসার সুদূরপ্রসারী, সে যেকোনো সম্পর্ক হতে পারে। ভালোবাসার সম্পর্ক, বন্ধুত্বের সম্পর্ক, বাবা মায়ের সম্পর্ক, সন্তানের সম্পর্ক আরো অনেক অনেক সম্পর্ক আর অনেক অনেক মানসিক চাহিদা। আমাদের কাছে সম্পর্ক মানেই একটা মানসিক চাহিদার প্রসঙ্গ চলে আসে। সেই সম্পর্কের প্রতি নির্ভরতা,ভালোবাসা,অপেক্ষা, তার প্রতি সহনশীলতা সব কিছুই একটা সম্পর্কের বিশেষ অনুভূতি।
তবে সেই সম্পর্কে তখনই একটা থমকে যাওয়া অনুভূতি চলে আসে,যখন সম্পর্ক শুধুই স্বার্থের অর্থাৎ taken for granted হয়ে যায়। খুব পরিচিত এই উক্তিটি। আমরা যখন কাউকে ভালোবাসি উজাড় করে ভালোবাসি। কিন্তু যখন বুঝতে পারি সেখানে স্বার্থের প্রবেশ ঘটছে তখন কোথাও থমকে গিয়েও আবার অভ্যাসের দাসের মত বাধ্য হই সব কিছু মেনে নিতে। কিন্তু প্রশ্ন যদি নিজেকে করা যায়,এটা কি নিজের জন্য ভালো হচ্ছে?
আরো পড়ুনঃ ৩০-এরপরে বাচ্চা নিলে আপনি যে যে সমস্যাগুলোর মুখোমুখী হবেন!
কোথাও দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাবার মতো অবস্থা এসে যায়।তখন দেখবেন আপনার ব্যবহারিক পরিবর্তন আসছে। সহ্য করতে করতে কোথায় আপনি আমূল পরিবর্তন হয়ে গেছেন। নিজের শান্তি নেই,কোথাও বার বার রেগে যাওয়া আরো অনেক কিছু।একটা সময় যাওয়ার পর মনে হবে আপনি হাঁপিয়ে গেছেন। দম বন্ধ লাগছে। আসলে আমরা যতোই বলি এক্সপেক্টেশন কে কন্ট্রোল করতে শিখতে হবে। সেখানেই সমস্যা তৈরি হয়।যতোই জ্ঞানের কথা বলা হোক না কেনো, এক্সপেক্টেশন অর্থাৎ মানসিক চাহিদা আসতে বাধ্য। আর যে সম্পর্কে স্বার্থের প্রবেশ ঘটে সেখানে এক পক্ষের বার বার নিজেকে উজাড় করে দেওয়া তে কোনো শান্তি আসে না। ধরুন,একজন নতুন স্বামী স্ত্রী।
পারিবারিক কারণে স্বামী বিয়ের পরই তার স্ত্রী কে বললো কতো টাকার গয়না আছে তোমার,সেই মুহূর্তে স্বামীর পাশে দাঁড়ানো অবশ্যই স্ত্রীর কাছে বিশেষ কর্তব্য। সে যত টা পারে স্বামী কে সাহায্য করে। কিন্তু যতই দিন যায়,স্বামী এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে থাকে।টাকা নয়তো গয়না কিংবা বাবার কাছ থেকে নানা ভাবে টাকা চাওয়া শুরু করে। আর স্ত্রী বিয়ে আর সম্পর্ক বাঁচাতে নীরবে সব সহ্য করে।কারণ প্রতিবাদ করলেই তাঁকে ছেড়ে চলে যাওয়ার ভয় দেখানো আর মানসিক অত্যাচার।মনে রাখবেন বন্ধুরা,সাইলেন্ট ট্রিটমেন্ট একটা সাংঘাতিক মানসিক অত্যাচার।
আরো পড়ুনঃ শরীরের বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে খান এই পানীয়টি
যে মানুষ বাইরে একটা সুন্দর মুখোশ পড়ে সবার কাছে খুব ভালো ব্যাক্তিত্ব,সেই মানুষই বাড়ির ভিতরে কি করছে সেটা সেই বাইরের লোকেদের কাছে অজানা।আর সত্যি বলতে এভাবেও একটা মেয়ে কে অত্যাচার করে ঘুরিয়ে পণ নেওয়া। এখানেও স্বার্থ। তবে এই স্বার্থের জন্যই প্রয়োজন ফুরিয়ে গেলে সেই মানুষ হাত ছেড়ে দিতে পিছপা হয় না। আবার এমন অনেক বন্ধু আছেন,যারা নিজেদের স্বার্থে আপনাকে ফোন করেন দেখা করেন তাদের দুঃখ যন্ত্রণার গল্প শোনান। কিন্তু যখন আপনি সমস্যায় পড়েন তখন দেখবেন, গোল টেবিল বৈঠক করে আপনার বিষয়ে আলোচনা করতে বসবে,বিচার চলবে কাঁটা ছেড়া হবে আপনাকে নিয়ে।এরকম মানুষ চারদিকে।
এখানে স্বার্থের জন্য মানুষ ঠিক কোথায় নামতে পারেন সেটা নিজেরা বুঝতে পারেন না। তাই বন্ধুরা মনে রাখবেন,আমরা মানুষ, আমরা বিশ্বাস করি আমরা ঠকি আবার আমরা বিশ্বাস করি। কিন্তু সেই ঠকার অনুভূতি আমাদের নতুন পদক্ষেপ ফেলার সময় ভাবায়। এটাই আমাদের শিক্ষা। যতোই ভালোবাসা থাকুক আর দায়িত্ব থাকুক। মনে রাখবেন আপনি নিজে গুরুত্বপূর্ণ।সম্পর্ক কিন্তু একতরফা না। সম্পর্ক নির্ভর করে দুজনের ক্ষেত্রেই। চাওয়া পাওয়া নির্ভর করে দুজনের থেকেই।
আরো পড়ুনঃ কাঁচা ছোলা খাওয়ার পর যে দু`টো জিনিস কখনোই খাবেন না!
হয়তো মানুষ ভিন্ন তাই তার প্রকাশ ভিন্ন কিন্তু সেটা শুধুমাত্র ব্যবহার এর ক্ষেত্রে সম্পর্ক আমরা মেনে নিতে পারিনা। তাই প্রশ্ন আপনাদের কাছেই রাখলাম। ভালোবাসা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু স্বার্থ? যা সম্পর্কে তিক্ততা আনে সেটা কি ভালো?