সামাজিক প্রতিবন্ধকতা
- সুমনা বাগচি
- অক্টোবর ৩, ২০২১
সেদিন অফিসে নীলাঞ্জনা তার পছন্দের সাদা চুড়িদার পড়ে গেছিলো। সারাদিন কাজ করার পর ফেরার সময় বেশ কিছু আগন্তুক আর উৎসুক চোখের সম্মুখীন হতে হলো তাকে। ঠিক বুঝে উঠতে পারলো না ঠিক কি হয়েছে। সামনের দিকে ওড়না টেনে নিল সে। কারণ সমাজের কঠিন দৃষ্টির সাক্ষী সে বহুবার হয়েছে।
আরো পড়ুনঃ চুলের যত্নে আমলকির ব্যবহার
হটাৎ পাশ থেকে কাঁধে হাত পড়লো তার। মা তোমার সাদা জামায় যে দাগ লেগে গেছে।
আচমকা পুরুষের গলায় নীলাঞ্জনা বেশ চমকে গেলো। আরো অবাক হলো এক বৃদ্ধ বাবার বয়সী মানুষ কে সামনে দেখে। দিশাহীন নীলাঞ্জনা কোনো মতে খাদির ওড়না দিয়ে নিজেকে জড়িয়ে ধরলো। বাক্য হারা, চোখে জল।
চারপাশের মুখ গুলো বেশ অস্বস্তি তে ফেললো তাকে।সেখানে নারী পুরুষ উভয়েই যেনো এই নাটকে অংশগ্রহণ করেছে।
আশাকরি বুঝতেই পারছেন কোন বিষয়ে কথা বলছি।সামাজিক প্রতিবন্ধকতা অর্থাৎ সোশ্যাল স্টিগমার নাগপাশে আজও আমরা আটকে। আজও সমাজ শিক্ষা আর সংস্কৃতি তে মাথা তুলে দাড়ালেও মানবিক শিক্ষার ব্যবধান দ্বিগুণ। সেখানে মাসিক মানেই এক জন মেয়ের লজ্জা।
আরো পড়ুনঃ চুল পড়া রোধ করবে আমলকীর তেল, প্রস্তুতপ্রণালী ও সংরক্ষণের উপায়সহ
শিক্ষিত সমাজ জানে না কিংবা অন্ধকারের আড়ালে ডুবে আছে। যে প্রকৃতির নিয়মে মাতৃত্ব আসে,নব প্রজন্মের জন্ম হয় সেই বিষয় টি নারী পুরুষ দুজনের কাছেই হাসির খোরাক।
কর্মস্থলে ছুটি নেওয়ার কারণ যখন এক পুরুষ কর্মীর কাছে বিশ্লেষণ করতে হয় কিংবা কোনো মহিলা বসের কাছে বলতে হয়, খুব কম মানুষ আছেন যাঁরা প্রকৃতির নিয়ম কে সম্মান জানাতে পারেন। সেখানে নারী হোক কিংবা পুরুষ হোক বিদ্রুপ করতে পিছপা হন না।
অদ্ভুত লাগে। অদ্ভুত অনুভূতি আসে কিন্তু সামাজিক মানসিকতার পরিবর্তন কিছুতেই আসে না। এই পিছিয়ে পড়া মানসিকতা থেকে আমরা কোনো ভাবেই বেরোতে পারিনা নাকি বেরোতে চাই না।
আরো পড়ুনঃ হবু মায়ের ডেঙ্গু হলে কি করবেন?
টিটকিরি আমরা প্রত্যেকেই কিছু না কিছু ভাবে আমোদ প্রমোদের বিষয় বলে মনে করি।
কিন্তু তার সঠিক প্রয়োগ যদি বক্র রেখার ন্যায় আসে বিষয় টা কখনোই গ্রহণ যোগ্য হবে না।
একটু ভেবে দেখা যায় কি?
ছবিঃ সংগৃহীত