টুথপেস্ট দিয়ে ব্রাশ করলে রোজা ভেঙে যাবে কি?
- শাইখুল হাদিস
- মার্চ ১৭, ২০২৪
অনেকেই রোজা রেখে সকালে ঘুম থেকে ওঠে টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত ব্রাশ করেন। টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত ব্রাশ করলে রোজা ভেঙে যায় নাকি ঠিক থাকে, এ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক—
রোজাদার ব্যক্তিদের আখেরাতে যেমন অনেক নেয়ামত দ্বারা পুরস্কৃত করা হবে, তেমনি দুনিয়াতেও তাদের জন্য রয়েছে আল্লাহর পক্ষ থেকে সম্মানসূচক বিশেষ প্রশংসা ও মর্যাদা। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘সেই সত্তার শপথ, যার হাতে মুহাম্মদের জীবন, রোজাদারের মুখের দুর্গন্ধ (যা ক্ষুধার্ত থাকার কারণে সৃষ্টি হয়) আল্লাহর কাছে মেশকের সুগন্ধির চেয়েও অধিক সুগন্ধিময়।’ (বুখারি, হাদিস: ১৯০৪)
রোজাদারের মুখের দুর্গন্ধ আল্লাহতায়ালার কাছে মেশকের চেয়েই উত্তম, ভালো ও প্রিয়। কারণ এ গন্ধ সৃষ্টি হয়েছে তাঁর ইবাদত পালন ও হুকুম পালনের অনুবর্তী হওয়ার ফলে। মুখের গন্ধ মৌলিকভাবে প্রিয় ও ভালো নয়; বরং তা দূর করাই মুমিনের কাজ।
আরো পড়ুন:
অ্যাকজিমা কেন হয়? স্বস্তি পেতে যা করবেন
খালি পেটে যেসব খাবার খেলে শরীর থাকবে সুস্থ
ঘুমের মধ্যে পায়ের রগে টান ধরে কেন?
ইসলামি গবেষকরা মনে করেন, টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত ব্রাশ করলে রোজা ভাঙে না। কারণ টুথপেস্ট তো কেউ খায় না। তবে ব্রাশ করার সময় সতর্ক থাকতে হবে, পেস্ট যেন পেটে চলে না যায়। কেউ কেউ আবার বলেন, টুথপেস্ট দিয়ে ব্রাশ করলে রোজা মাকরুহ হয়ে যায়। তবে ভেঙে যায়, এমন কথা কেউ বলেননি। তবে সবচেয়ে ভালো হয়, সাহরি খাওয়ার পর সময় থাকতে পেস্ট দিয়ে দাঁত ব্রাশ করা, আবার ইফতারের পরও দাঁত ব্রাশ করা যায়। যেহেতু টুথপেস্ট পেটে যাওয়ার সম্ভবনা আছে, তাই রোজা অবস্থায় না ব্যবহার করাই উত্তম।
দিনের বেলা মেসওয়াকও ব্যবহার করা ভালো। রমজান মাস কেন্দ্র করে মেসওয়াকের অভ্যাস করা যেতে পারে। মেসওয়াক করা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নত। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা মেসওয়াক করো। কেননা তা মুখের পবিত্রতার উপায় এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের মাধ্যম।’ (নাসায়ি, হাদিস: ৫)
রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, জিবরাইল (আ.) যখনই আমার কাছে আসতেন, তখনই আমাকে মেসওয়াক করার নির্দেশ দিতেন। তাতে আমার ভয় হতে লাগল যে, আমি আমার মুখের সামনের দিক ক্ষয় করে ফেলব। (মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ২২১৭০)
লেখক: শাইখুল হাদিস, সিরাজনগর মাদরাসা নরসিংদী; সদস্য, তানযীম ফতোয়া বোর্ড নরসিংদী