গুঁড়া দুধ নাকি তরল, কোনটিতে বেশি পুষ্টি?

  • ওমেন্স কর্নার
  • জুলাই ৭, ২০২৪

দৈহিক বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ ও উপাদানে সমৃদ্ধ খাবার দুধকে বলা হয় একটি আদর্শ খাদ্য। শিশু, প্রাপ্তবয়স্ক কিংবা বৃদ্ধ, সবার জন্যই দুধ একটি পুষ্টিকর খাবার। তবে গুঁড়া দুধ নাকি তরল দুধ কোনটি পুষ্টিতে বেশি এগিয়ে, তা কি জানেন?

গুঁড়া দুধ আর তরল দুধের পার্থক্য মূলত আর্দ্রতায়। তরল দুধ থেকে সবটুকু পানি শুকিয়ে ও আর্দ্রতা সম্পূর্ণ শুষে নিলেই তা গুঁড়া দুধে পরিণত হয়। অন্যান্য পার্থক্যের মধ্যে পুষ্টি উপাদানে সামান্য তারতম্য হয়। বিশেষ করে গুঁড়ো দুধে ফ্যাট বা চর্বির পরিমাণ তরল দুধের চেয়ে কম থাকে। তবে প্রধান পার্থক্য সেই আর্দ্রতাই।

আর আর্দ্রতা থেকে আরও কিছু পার্থক্য তৈরি হয়, যেমন পরিমাণে ও ওজনে। ১ লিটার তরল দুধের স্থলে ১ কেজি গুঁড়া দুধ পরিবহন করা মানে ৭-৮ লিটার পরিমাণ তরল দুধ পরিবহন করা।

আরো পড়ুন:
একদিনেই বানিয়ে সারা মাসের রুটি সংরক্ষণ করার পদ্ধতি জানুন 
আলু সেদ্ধ করার ৩ পদ্ধতি জেনে নিন 
পাতলা ও নরম রুটি বানানোর কৌশল জেনে নিন 
কোয়েলের ডিমের পুষ্টিগুণ জেনে নিন  

পুষ্টিগুণ অটুট রেখে পরিবহনের এই সহজলভ্যতার জন্যই গুঁড়া দুধ মূলত লাভ করেছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা। গুঁড়া দুধে পরিণত করার জন্য পাস্তরিত তরল দুধকে বাষ্পীভূত করা হয়। এই প্রক্রিয়া একাধিক পদ্ধতিতে সম্পন্ন করা হয়।

দুধের পুষ্টিগুণ অটুট থাকা না থাকার ব্যাপারটিও নির্ভর করে মূলত এর বাষ্পীভবন পদ্ধতির উপরই। অ্যামাইনো এসিড, প্রোটিন, মিনারেল সহ অন্যান্য উপাদান মিলিয়ে ২১টি বা তার অধিক পুষ্টি উপাদান আদর্শ গুঁড়া দুধে বিদ্যমান থাকে।

বাষ্পীভবন প্রক্রিয়ার উপর নির্ভর করে এই উপাদান কম বা বেশি হতে পারে। আবার দুধে উপস্থিত কিছু উদ্বায়ী ও বায়োঅ্যাক্টিভ উপাদান বাষ্পীভবনের ফলে গুঁড়া দুধে আর থাকে না। তবে সেগুলো খুবই কম উপাদান হওয়া তরল দুধের সঙ্গে এর খুব বেশি পার্থক্য হয় না।

প্রতি কাপ বা ২৪৪ গ্রাম তরল দুধে অ্যানার্জি বা শক্তি থাকে ১৪৩ শতাংশ, অন্যদিকে সমপরিমাণ গুঁড়া দুধে থাকে ১৩৯ শতাংশ শক্তি। তবে চর্বি, কার্ব, প্রোটিন উভয় ক্ষেত্রেই থাকে ১২, ৪ ও ১৫ শতাংশ।

এছাড়া তরল দুধে ভিটামিন এ থাকে ১২ শতাংশ, অন্যদিকে গুঁড়া দুধে এই ভিটামিন মেলে মাত্র ৫ শতাংশ। একই সঙ্গে তরল দুধের তুলনায় ভিটামিন বি১,২,৫, ৬, ১২ ও ভিটামিন ডি কম থাকে গুঁড়া দুধে।

যদিও পুষ্টি উপাদানের দিক থেকে তরল দুধ আর সমপরিমাণ তরল দুধ তৈরিতে প্রয়োজনীয় পরিমাণ গুঁড়া দুধে উপস্থিত অধিকাংশ পুষ্টি উপাদানই এক। তরল দুধের কিছু মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট বাষ্পীভবনের কারণে গুঁড়া দুধে অনুপস্থিত থাকে।

এছাড়া উপাদানগুলোর পরিমাণগত কিছু পার্থক্য আছে। তবে সব মিলিয়ে তরল দুধের চমৎকার বিকল্প হতে পারে গুঁড়া দুধ। তবে তরল দুধ যেখানে ব্যাপক পরিমাণে সহজলভ্য, সেখানে গুঁড়া দুধ তার বিকল্প হতে পারে না।

বিভিন্ন ধরনের বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষায় প্রমাণ হয়েছে গুঁড়া দুধ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর তো নয়ই বরং তরল দুধের কাছাকাছি মানের বিকল্প। তাই চাইলে তরল ও গুঁড়া দুধ উভয়ই আপনার পুষ্টির ঘাটতি মিটিয়ে শরীর সুস্থ রাখতে পারে।

সূত্র: টাইমস ফুড/হেলথলাইন
 

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Comment