প্লাস্টিক বোতল কতটা ক্ষতিকর?
- ওমেন্স কর্নার
- আগস্ট ১৩, ২০২৪
বাড়ির বাইরে যাবার সময় অনেকেই সাথে নেন একটি খাবার পানির বোতল। আবার ঘরের মধ্যেই সবসময় আমরা পানি ভরে রাখি সুদৃশ্য সব বোতলে। এসব বোতল হয়ে থাকে প্লাস্টিকের। আপনারা জানেন কি এই প্লাস্টিক আমাদের শরীরের জন্য কতটা ক্ষতিকর?
প্লাাস্টিকের বোতলে পানি পান যে শরীরের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর, তা ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে বিভিন্ন গবেষণা। প্লাাস্টিকের মধ্যে পাওয়া যায় প্যাথেলেটস নামক এক উপাদান। যা দেহের ক্ষতি সাধন করে। এই উপাদানটির কারণে লিভার ক্যানসার হতে পারে।
দুঃখজনক ব্যপার হল, আমাদের দেশের মত অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল দেশে প্লাস্টিক অনেক সস্তা এবং সহজলভ্য একটি পণ্য। তাই সর্বস্তরের মানুষ সহজেই খাবার পানি পরিবহনের জন্য প্লাাস্টিকের বোতল বেছে নেন। তবে এভাবে নিজের স্বাস্থের সাথে অবিচার করা উচিৎ নয়।
জেনে নিন প্লাাস্টিকের বোতলে পানি খাবার ক্ষতিকর দিকগুলো-
১. প্লাাস্টিকের ছোট ছোট কণা পানির সঙ্গে শরীরে পৌঁছে যায়। তাই প্লাাস্টিকের বোতলে পানিপান করলে কমতে পারে ইমিউনিটি। ইমিউনিটি কমে গেলে বিভিন্ন সংক্রামক অসুখ সহজে আক্রমণ করে।
২. প্লাাস্টিকের বোতলে খুব সহজেই হয় ভাইরাস ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ।
৩. প্লাাস্টিকের বোতলে প্যাথেলেটস নামক একটি উপাদানের উপস্থিতির কারণে লিভার ক্যান্সারের ঝুকি বাড়ে।
৪. প্লাাস্টিকের এই প্যাথেলেটস নামক উপাদানটি পুরুষের শরীরে স্পার্ম কাউন্টও কমিয়ে দিতে পারে।
আরো পড়ুন:
সয়াবড়ির কি কোনো উপকারিতা আছে?
আচারের তেল খাওয়া কি খারাপ?
মাছ খেলে হার্ট ভালো থাকে কেন?
কলা সহজে কালো হবে না এই ৪ টিপস মানলে
৫. প্লাাস্টিকের বোতল থেকে ভয়ংকর ‘বিপিএ’ তৈরি হয় শরীরে।
৬. প্লাাস্টিকে থাকে বিফিনাইল এ বা ছোট করে বিপিএ নামক একটি রাসায়নিক। গবেষণায় দেখা গেছে, এই রাসায়নিক ডায়াবেটিস, ওবেসিটি, বন্ধ্যাত্ব, ব্যবহারগত সমস্যার কারণ হতে পারে।
৭. সূর্যরশ্মির সঙ্গে প্লাাস্টিকের বিক্রিয়া হয়। এর ফলে ডায়াক্সিন তৈরি হয়। এটি ব্রেস্ট ক্যানসারের ঝুঁকি কয়েকগুণ বৃদ্ধি করে।
৮. প্লাাস্টিক বোতলে ব্যবহৃত রাসায়নিক উপাদানকে বিজ্ঞানীরা মানবদেহের জন্য হরমোন বিপর্যয়কারী উপাদান বলেছেন।
৯. প্লাাস্টিকের বোতলে শুধু যিনি পানি পান করছেন তিনিই নন, এর ফলে ক্ষতি হতে পারে পরের প্রজন্মেরও। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘টাইপ ৭’ নামক এক ধরনের প্লাাস্টিক থেকে দেখা দিতে পারে প্রজননের সমস্যা। তা ছাড়া বিপিএ হরমোন ও ক্রোমোজোমের সমস্যাও ডেকে আনতে পারে। ক্রোমজোমের সমস্যা তৈরি হলে সন্তানের দেহে তার প্রভাব পড়তে পারে বলে মত কারও কারও।
প্লাাস্টিকের বিকল্প :
এখন বাজারে তামার তৈরি বোতল কিনতে পাওয়া যায়। এই বোতলে পানি পান করলে উপকার মেলে। তবে এই বোতলের দাম কিছুটা বেশি। তাই এর বদলে কাচের বোতল কিনতে পারেন। এখন শক্ত কাচের বোতলও বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। এগুলোতে পানি পান স্বাস্থ্যকর। আবার মাটির পাত্রে পানি রেখেও খেতে পারেন।
উন্নত বিশ্বে কিছু কিছু প্লাাস্টিকের বোতল ফুড গ্রেড দিয়ে তৈরি হয়ে থাকে। সাধারণত আšতর্জাতিক মানের প্লাাস্টিকের গায়ে ২, ৪ এবং ৫ নম্বর লেখা থাকে। সেগুলো তুলনামূলক নিরাপদ। নম্বর ১ লেখা বোতলও নিরাপদ হিসাবেই গণ্য হয়। ৬ এবং ৭ ভীষণভাবে ক্ষতিকর। তাই ৬ এবং ৭ লেখা নম্বরের বোতল অবশ্যই এড়িয়ে চলুন।
সূত্র: বৈশাখী অনলাইন
ছবি: Cvoice24.com