নিয়মিত অ্যালোভেরার জুস খেলে যে উপকারীতা পাবেন!
- ওমেন্সকর্নার ডেস্ক
- জানুয়ারি ২৭, ২০১৮
শত শত বছর ধরে ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে অ্যালোভেরার ব্যবহার হয়ে আসছে। শুধুমাত্র সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে ব্যবহার হলেও আসলে এই প্রাকৃতিক উপাদানটি আমাদের আরও অনেক শারীরিক উপকার করে সে বিষয়ে কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না। প্রতিদিন আমাদের ঘিরে ধরছে নানা ক্রনিক ডিজিজ। যেমন, পরিবেশ দূষণের কারণে একদিকে বাড়ছে ফুসফুসের নানা রোগ, অন্যদিকে আমাদের অনিয়ন্ত্রিত জীবন, নানাবিধ নেশার প্রতি আকর্ষণ এবং অস্বাস্থ্যকর খাওয়া-দেওয়া থেকে বিরত থাকার কারণে শরীরে এসে বাসা বাঁধছে ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল, কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ এবং উচ্চ রক্তচাপের মতো আরও কিছু রোগ। আর তাছাড়া বর্তমানে ক্যান্সার সহ একাধিক মরণ ব্যাধি রোগের প্রকোপও বৃদ্ধি পাচ্ছে ।
তাই এমন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে শরীরকে রোগের খপ্পর থেকে বাঁচাতে হলে নিয়মিত অ্যালোভেরা জুস খাওয়ার বিকল্প নেই। প্রাচীনকালের একাধিক আয়ুর্বেদ গ্রন্থে নানাবিধ রোগের চিকিৎসায় অ্যালোভেরা জেলের ব্যবহার হয়ে আসছে। আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থার রমরমায় এই শক্তিশালী প্রকৃতিক উপাদানটির উপকারিতা সর্ম্পকে আমরা কিছুই জানি না। নিয়মিত অল্প করে অ্যালোভেরার জুস খেলে যে উপকার গুলি পাওয়া যায়ঃ
শরীর থেকে সব বিষাক্ত উপাদান বের করে দেয়: অ্যালোভেরায় রয়েছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট । প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি অ্যালোভেরার জুস খেলে শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টর পরিমাণ এত্টাই বৃদ্ধি পায় যে দেহের প্রতিটি কোণায় জমে থাকা টক্সিক উপাদান গুলো বেরিয়ে যেতে শুরু করে। যদি আমাদের শরীরে এসব টক্সিক উপাদানদের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে থাকে, তাহলে শরীরের প্রতিটি অঙ্গের কর্মক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে। ফলে নানাবিধ রোগ হতে একদমই সময় নেয় না। তাই নিয়মিত অ্যালোভেরা জুস খলে আপনার শরীর থাকবে একদমই বিষ মুক্ত।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে : অ্যালোভেরায় থাকা প্রাকৃতিক উপাদান সমূহ আমাদের দেহের ভিতরে থাকা ব্যাকটেরিয়া সমূহকে ধ্বংস করে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। দীর্ঘজীবন লাভ করতে হলে অ্যালোভেরা জুসে কোনো বিকল্প নেই । কারণ নিয়মিত এই প্রাকৃতিক উপাদানটি গ্রহণ করলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এতটা শক্তিশালী হয়ে ওঠে যে সর্দি-কাশি থেকে শুরু করে ছোট-বড় কোনও রোগই আমাদের ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। সেই সঙ্গে সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও অনেক কমে যায় ।
ভিটামিন এবং মিনারেলের ঘাটতি পূরণ করে: গবেষণায় দেখা গেছে যে, নিয়মিত অ্যালোভেরার জুস খেলে শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং মিনারেল সমূহের ঘাটতি দূর হয়। সেই সাথে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ঘাটতিও দূর হতে থাকে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হল সেই উপাদান, যা আমাদের শরীরকে রোগ মুক্ত রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। বিশেষ করে অ্যালোভেরা জেলকে যদি তুলসি, করলা অথবা আমলকির রসের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া যায় তাহলে,সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যায় । এক্ষেত্রে ভিতর এবং বাইরে থেকে আমাদের শরীরের ক্ষমতা তো বাড়েই, সেই সাথে ছোট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না।
অ্যানিমিয়ার প্রভাব কমে: স্বাস্থ্য বিভাগের সম্প্রতি প্রকাশিত পরিসংখ্যান থেকে জানা যায় যে, আমাদের দেশের অধিকাংশ মধ্যবয়স্ক মহিলা অ্যানিমিয়ায় ভুগছেন। এটি একটি নীরব ঘাতক যা মহিলাদের অনেক ক্ষতি করে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে অ্যালোভেরা জুসে কোনো বিকল্প নেই । কারণ এই প্রকৃতিক উপাদানটিতে রয়েছে একাধিক উপকারি উপাদান যা আমাদের দেহের ভিতরে প্রবেশ করে আমাদের রক্তের এমন লোহিত রক্ত কণিকার উৎপাদন বাড়তে শুরু করে। ফলে অ্যানিমিয়ার আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়।
হজম শক্তি বৃদ্ধি করে: প্রতিদিন অনেক রকমের খাওয়া দাওয়া করতে হয় আমাদের। আর নানা রকম খাওয়া দাওয়ার ফলে আমাদের হজম শক্তি অনেক কমে যায়। আর এই হজম শক্তি বাড়াতে অ্যালোভেরার কোনো জুড়ি নেই। তাই আজ থেকেই শুরু করে দিন অ্যালোভেরার জুস খাওয়া। কারণ এই প্রকৃতিক উপাদানটি শরীরে প্রবেশ করে আমাদের পাকস্থলীর পাচক রসের ক্ষরণ এতটা বাড়িয়ে দেয় যে বদ-হজমের মতো রোগ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। সেই সঙ্গে গ্যাস, পেট ফাঁপা, অ্যাসিডিটি এবং কনস্টিপেশনের মতো সমস্যাও কমতে শুরু করে। তাই তো খাদ্যরসিকদের জন্য প্রয়োজন নিয়মিত অ্যালোভেরা জুস খাওয়া।
হরমোনের ইমব্যালেন্স দূর করে: একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত অ্যালোভেরা জুস খাওয়া শুরু করলে আমাদের দেহের ভিতরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে, যার প্রভাবে প্রয়োজনীয় হরমোনের ক্ষরণ ঠিক মতো হতে শুরু করে। ফলে আমাদের হরমোনাল ইমব্যালেন্স হওয়ার মতো সমস্যা হয় না। বিশেষ করে প্যানক্রিয়াস সংক্রান্ত নানা রোগের চিকিৎসাতেও এই প্রকৃতিক উপাদানটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
তথ্য এবং ছবি : গুগল