পটল চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত

  • ওমেন্স কর্নার ডেস্ক
  • আগস্ট ৭, ২০২১

পটল একটি প্রধান গ্রীষ্মকালীন সবজি। বাংলাদেশের সব জায়গাতেই পটলের চাষ হয় না। বৃহত্তর রংপুর, রাজশাহী, বগুড়া, পাবনা, কুষ্টিয়া ও যশোর জেলায় ব্যাপক ভাবে পটলের চাষ করা হয়।

বর্তমানে ফরিদপুর ও খুলনা জেলায় পটল জন্মে। গ্রীষ্ম ও বর্ষা কালে যখন সবজির অভাব দেখা দেয় তখন পটল একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সবজি হিসেবে কাজ করে। জাত ভেদে পটলের ফলন হিসেবে হেক্টরে ৪ টন থেকে ১৫ টন পাওয়া যায়। এর ইংরেজি নাম pointed gourd.

আরো পড়ুনঃ অকালে চুল পাকা রোধের ৫ ঘরোয়া উপায়

জাত: বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পটলের বিভিন্ন জাত দেখা যায়। যেমন লম্বা ও চিকন, খাটো ও মোটা, গাঢ় সবুজ থেকে হালকা সবুজ। ডোরাকাটা ও ডোরাকাটা বিহীন। পুরু ত্বক থেকে হালকা ত্বক। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট পটলের দুটি জাত আবিষ্কার করেছে। যার দুটো উচ্চ ফলনশীল ও রোগবালাই সহ্য করতে পারে সেগুলো হলো "বারি পটল-১" ও "বারি পটল-২"। হেক্টর প্রতি ফলন ৩০-৩৮ টন।

১. বারি পটল-১

বৈশিষ্ট্য:

আকার: ফল ৪-৫ ইঞ্চি লম্বা, বেড় প্রায় ১.৫ ইঞ্চি।

ফলের ওজন: প্রায় ৫৫ গ্রাম।

প্রতি গাছের ফলন: সর্বোচ্চ ২৪০ টি ফল ধরে, তার মোট ওজন প্রায় ১০ কেজি।

একর প্রতি ফলন: ১২১৪৫ কেজি বা প্রতি শতাংশে ১২০ কেজি।

আরো পড়ুনঃ ক্যাপসিকাম খাওয়ার উপকারিতা

২. বারি পটল -২

বৈশিষ্ট্য:

আকার: ফল ৩.৫ থেকে ৪ ইঞ্চি লম্বা, বেড় ১.৫ -১.৭৫ ইঞ্চি।

প্রতিটি ফলের ওজন: সর্বোচ্চ ৩৮০ টি ফল ধরে, তার মোট ওজন ১৪ কেজি।

একর প্রতি ফলন: ১৫,৩৮৫ কেজি বা প্রতি শতাংশে ১৫০ কেজি।

বংশবিস্তার: এটি কান্ড এবং টিউবারের মাধ্যমে বংশবিস্তার করে। শাখা কলম এর ক্ষেত্রে পরিপক্ক কেন ব্যবহার করা হয়। এদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে কান্ড মরে গেলেও শিকড় জীবিত থাকে। ফলে এই শিকড় থেকে আবার গাছ জন্মে। রোপণের আগে পটলের শিকড় গজিয়ে নিলে বেশি ভালো হয়।

জলবায়ু ও মাটি: উষ্ণ আদ্র জলবায়ু পটল চাষের জন্য বেশি তাপমাত্রা ও সূর্যালোকের প্রয়োজন। বন্যামুক্ত ও পানি জমে না এমন বেলে দোআঁশ বা দোআঁশ মাটি পটল চাষের জন্য ভালো। নদীর তীরে পলিযুক্ত মাটিতেও পটল চাষ করা যায়।

মাচা তৈরি: পটল লতানো প্রকৃতির উদ্ভিদ, তাই এগুলো মাটির ওপর কিংবা খড় বিছিয়ে উৎপাদন করলে গায়ের সাদা সাদা ফ্যাকাশে বা হলুদ বর্ণের হয়ে পড়ে। এতে পটল এর বাজার মূল্য এবং রফতানিযোগ্য তা কমে যায়। মাচা সাধারণত দুই ধরনের হয়- বাসের আনুভূমিক মাচা ও রশি দিয়ে তৈরি উলম্ব মাচা।

পানি নিষ্কাশন: পটল জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না। তাই বৃষ্টি বা সেচের অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে। সে পানি সময়মতো নালা দিয়ে বের করে দিতে হবে।

আরো পড়ুনঃ চাল কুমড়ার স্বাস্থ্য উপকারিতা

আন্তঃপরিচর্যা: পটল লতানো জাতীয় গাছ হওয়ায় বাউনি বা মাচা দিলে অনেক বেশি হয় এবং রোগ বালাইয়ের আক্রমণের অনেক কম হয়। এছাড়া মাটির উপর খরকুটা বা কচুরিপানা দিয়ে তার ওপর পটল গাছ তুলে দিলে তা থেকেও ভালো ফলন পাওয়া যায়।

এ সম্পর্কিত আরও পোস্ট

Leave a Comment