
তেঁতুল চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত
- ওমেন্স কর্নার ডেস্ক
- সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২১
তেঁতুল একটি জনপ্রিয় ফল। তেঁতুল পছন্দ করেন না এমন মানুষ খুবই কম আছেন। কাঁচা তেঁতুল খেতে টক, পাকা ফল টক মিষ্টি এক ভিন্ন স্বাদ। তেঁতুল খাবারের স্বাদ বাড়ায়। আচার, সস, জ্যাম ইত্যাদি তৈরিতে তেঁতুল কাজে লাগে।
বংশবিস্তার: সাধারণত বীজ দিয়ে বংশবিস্তার হয়। গুটি কলম এর মাধ্যমেও করা সম্ভব। বীজ দিয়ে সহজেই চারা তৈরি করা যায়। বপন এর আগে বীজ ২৪ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখা দরকার।
এরপর মাটি ও পচা গোবর এর মিশ্রন পলিব্যাগে ভর্তি করে সেখানে বপন করতে হয়। এ কাজ অতিরিক্ত বর্ষা এবং প্রচন্ড শীত ব্যতীত অন্য যে কোন সময় করা যেতে পারে। চারার বয়স ২/৩ মাস হলে মূলত জমিতে লাগানো যায়। তেঁতুল অনুর্বর মাটিতে জন্মে। কিন্তু উর্বর মাটিতে কাঙ্খিত ফলন পাওয়া যায়।
আরো পড়ুনঃ খুব সহজে বানিয়ে ফেলুন কমলার জেলি
চারা রোপণের সময়: বর্ষাকাল চারা রোপণের উপযুক্ত সময়।
রোপন পদ্ধতি: চারা রোপণের জন্য একটি উপযুক্ত গর্ত তৈরি করতে হয়। এর দৈর্ঘ্য, প্রস্থ এবং গভীরতা হবে ৩ ফুট ৩ ইঞ্চি করে। গাছ হতে গাছের দূরত্ব ২৫-২৬ ফুট। গর্ত প্রতি যেসব জৈব ও অজৈব সার প্রয়োগ করতে হবে তা হলো গোবর ২০ কেজি, টিএসপি ২০০ গ্রাম এবং এম ও পি ২৫০ গ্রাম করে। এসব সার দেয়ার ২৫-৩০ দিন পর চারা লাগাতে হবে।
গাছ লাগানোর ১ বছর পর গাছপ্রতি ১০-১৫ কেজি জৈব সার, রাসায়নিক সারের মধ্যে ইউরিয়া ও টিএসপি ২০০-৩০০ গ্রাম করে, তার সাথে ৩০০-৪০০ গ্রাম হিসেবে এমওপি প্রয়োগ করতে হয়। এসব সার ২ ভাগ করে বছরে ২ বার, ১ বার বর্ষার আগে মার্চ মাসে আরেকবার বর্ষার পর সেপ্টেম্বর মাসে দিতে হয়।
পরিচর্যা: দুপুরবেলায় মাটিতে গাছের ছায়া যতটুকু পরে ততটুকু স্থানে ৬ ইঞ্চি গভীর করে ভালো ভাবে কুপিয়ে সার দেওয়া উত্তম। অথবা গাছের গোড়া থেকে ২/৩ ফুট বাদ দিয়ে এরপর ৬/৭ ফুট পরিমাণ জমি বৃত্তাকার অনুরূপভাবে কুপিয়ে দিলেও হবে। সার প্রয়োগের পর হালকা সেচ দিতে হয়। গাছের বয়স বাড়ার সাথে সাথে খাবারের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। তাই প্রতিবছর সারের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে হবে। খরার কারণে রসের অভাব দেখা দিতে পারে। সেজন্য পরিমাণমতো সেচ দিতে হবে।
আগাছা খাবারের ভাগ বসায়। এছাড়া ক্ষতিকর পোকার আশ্রয় স্থল হিসেবে কাজ করে। তাই গাছের গোড়ায় কিংবা আশেপাশে আগাছামুক্ত রাখতে হবে। গাছের মরা ডাল কিংবা অবাঞ্চিত অংশ কেটে দিতে হয়। ডালের সংখ্যা অতিরিক্ত হলে কিছু কেটে পাতলা করতে হবে যেন পর্যাপ্ত আলো-বাতাস পাওয়া যায়।
আরো পড়ুনঃ ফ্রিজে খাবার সতেজ রাখার সহজ টিপস
ছাঁটাইয়ের কাজ শীত মৌসুমে করতে হয়। গরু-ছাগলের আক্রমণ হতে রেহাই পাওয়ার জন্য চারা অবস্থায় গাছের চারদিকে বেড়া ব্যবস্থা করতে হবে। তেঁতুলের সাধারণত রোগ পোকা হয় না। তবে বর্ষাকালে কখনো কখনো ছত্রাকের আক্রমণ হতে পারে। সে ক্ষেত্রে যে কোন ছত্রাক নাশক অনুমোদিত মাত্রায় স্প্রে করতে হবে।
ফল সংগ্রহ: বীজ থেকে উৎপাদিত গাছ রোপণের ৭/৮ বছর পর থেকে ফল দেওয়া শুরু করে। কলমের গাছ এর সময় লাগে ২/৩ বছর। পরিনত বয়সে গাছপ্রতি গড় ফলন প্রায় ৩০০ কেজি।