ছোট দুই হাতে সম্পা টানছে বড় সংসার
- ওমেন্স কর্নার ডেস্ক
- ডিসেম্বর ২, ২০২০
ভ্যান গাড়ি চালায় তাহাজ্জত সম্পা বয়স ১১ বছর। কোমল হাতে ব্যাটারিচালিত ভ্যানের কঠিন হ্যান্ডেল নিয়ন্ত্রণ করেই চলছে তার বেঁচে থাকার লড়াই। ভ্যান চালিয়ে যা রোজগার হয়, তা দিয়ে চলে অসুস্থ বাবার চিকিৎসা ও সংসারের খরচ। তাহাজ্জত সম্পাদের বাড়ি জামালপুর সদর উপজেলার নাকাটি গ্রামে। সে নাকাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী। তার পরিবারে চার সদস্য। পাঁচ বছর আগে এক সড়ক দুর্ঘটনায় সম্পার বাবা শফিকুল ইসলাম (৪০) স্বাভাবিক চলাচলে অক্ষম হয়ে পড়েন।
শফিকুল ইসলাম ভ্যান চালিয়ে সংসার চালাতেন। দুর্ঘটনায় পর অচল হয়ে পড়েন তিনি। অথই সাগরে পড়ে সংসার। এরই মধ্যে বড় মেয়ে সুমি আক্তারের বিয়ে হয়ে যায়। সংসারের হাল ধরতে বছরখানেক আগে ছোট মেয়ে সম্পা শুরু করে বাবার ভ্যান গাড়ি চালানো। সম্পার স্কুলের সহকারী শিক্ষক ছাবিয়া সুলতানা বলেন, মেয়েটির কাছ থেকে এখনকার ছেলেমেয়েদের শেখার আছে। এই বয়সে সে পরিবারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে। মেয়ে হয়েও অনেককিছু করা যায়, সেটার দৃষ্টান্ত সম্পা।
আরো পড়ুনঃ চিকেন ফ্লাওয়ার পট
সে লেখাপড়াতেও অনেক ভালো। খুব মিশুক মেয়ে। খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও সে খুব ভালো। সম্পার মা নেবুজা খাতুন বলেন, প্রথম দিকে গ্রামবাসী মেয়েকে নিয়ে নানা কথা বলত। মেয়ে মানুষ হয়ে ভ্যান গাড়ি চালায়। মেয়েকে বিয়ে করবে কে, তখন খুব খারাপ লাগত। এ নিয়ে ঘরে বসে কান্নাও করতেন। তবে এখন তিনি মেয়ের জন্য গর্ব করেন। চিকিৎসার জন্য ঢাকার একটি হাসপাতালে গিয়েছিলেন সম্পার বাবা শফিকুল ইসলাম। হাসপাতাল থেকে তিনি জানতে পেরেছেন৷
তাঁর পায়ের অস্ত্রোপচারের জন্য তিন লাখ টাকা দরকার। মেয়ের আয়ে কোনমতে চলে সংসার ও তাঁর চিকিৎসা। চিকিৎসার টাকা কোথায় পাবেন, সেটা ভেবেই দুর্বিষহ দিন কাটে তাঁর।