আসমা জাহানঃ বিসিএস প্রশাসন আমার কাছে একটি স্বপ্নের নাম ছিল!
- ওমেন্স কর্নার ডেস্ক
- ডিসেম্বর ২৪, ২০২০
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার আহাম্মদপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আসমা জাহান সরকার। বাবা আবদুল হান্নান সরকার একজন কৃষক, মা খোশনাহার বেগম গৃহিণী। ভালো ছাত্রী হওয়ার কারনে পরিবারের সদস্যরা স্বপ্ন দেখেন আসমা বড়ো হয়ে একজন ডাক্তার হবেন। সেই ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন নিয়েই বিজ্ঞান বিভাগে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হন। ২০০৮ সালে কুমিল্লা বোর্ড থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়ে মাধ্যমিকের চৌকাঠ পেরোন।
বোর্ড বৃত্তিতে সম্মিলিত মেধাতালিকায় ১৯তম হয়েছিলেন। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। বোর্ডে সম্মিলিত মেধাতালিকায় তৃতীয় স্থান অধিকার করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েই পারিবারিক উত্সাহ আর বাবা-মা ও নিজের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে বিসিএস-এর জন্য মনোনিবেশ করেন। প্রথম বর্ষ থেকেই সাধারণ গণিত আর ইংরেজির চর্চা করতেন নিয়মিত।
আরো পড়ুনঃ আপনি দাদ রোগের কারণ ও প্রতিকার জানেন তো?
তারপর তৃতীয় বর্ষ থেকে একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি রুটিন করে নিয়মিত বিসিএস-এর সিলেবাস ধরে ধরে পড়া শুরু করেন। প্রিলি-লিখিত দুইটা সিলেবাস একসঙ্গে মিলিয়ে পড়ার চেষ্টা করেছেন। আসমা বলেন, ‘এতে আমার অনেক সুবিধা হয়েছে। লিখিত পরীক্ষার অনেক পড়াই আমার আয়ত্তে ছিল, যা লিখিত পরীক্ষায় আমাকে অনেক সাহায্য করেছিল। আমার বিভাগের একাডেমিক অনেক পড়াশোনা সরাসরি আমার বিসিএস-এ কাজে দিয়েছে, আমি বলব এটা ছিল আমার জন্য প্লাস পয়েন্ট।’ আসমা একাডেমিক পড়া শোনার পাশাপাশি বিসিএস-এর জন্য পড়লেও ডিপার্টমেন্টের পড়াশোনাও করেছেন রুটিন মেনে।
সেটা তার ফলাফলেই প্রমাণ মেলে অনার্সে সিজিপিএ-৩.৫২ পেয়ে বিভাগে নবম স্থান লাভ করেন, মাস্টার্সে সিজিপিএ-৩.৭৫ পেয়ে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন। তারপর জীবনের প্রথম বিসিএস পরীক্ষা দিয়েই মেধায় প্রশাসন ক্যাডার হয়েছেন। আসমা বলেন, বিজ্ঞান, বাণিজ্য, মানবিক কে কোন্ বিষয়ে পড়ছে সেটা জরুরি না, জরুরি হচ্ছে আমি যা নিয়ে পড়ছি আমাকে খেয়াল রাখা এই পর্যায়ের সর্বোচ্চ জায়গায় যেন আমি নিজেকে নিয়ে যেতে পারি। প্রথম বিসিএস-এ মেধায় প্রশাসন ক্যাডারপ্রাপ্তির অনুভূতি কী? এমন প্রশ্নের জবাবে আসমা বলেন, বিসিএস প্রশাসন আমার কাছে আসলেই একটি স্বপ্নের নাম ছিল।
আমি আমার স্বপ্ন পূরণে কঠোর পরিশ্রম করেছি আর আজ আমার সেই স্বপ্ন সত্যি হয়েছে। এখন আমার স্বপ্ন, আমি সচিব হতে চাই। পরিবারের সদস্যরা যেন আমাকে নিয়ে গর্ব করে বলতে পারে আমাদের মেয়েটি আমাদের পরিবারকে, সমাজকে অনেক কিছু দিয়েছে। সফলতা পেতে কোন্ বিষয়গুলো নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে?
আরো পড়ুনঃ মোবাইল ফোনের কারণে বাড়তে পারে বন্ধ্যাত্ব
জানতে চাইলে আসমা জানান, সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য, কঠোর পরিশ্রম আর আত্মবিশ্বাস— এই তিনটিই আমাকে আজকের এই সফলতা এনে দিয়েছে। আগামীদিনের বিসিএস স্বপ্ন প্রত্যাশীদের জন্য পরামর্শ দিয়ে আসমা বলেন, আমার আহবান রইল, আপনারা আগে নিজের লক্ষ্য ঠিক করুন, কঠোর পরিশ্রম করুন, নিজের ওপর আত্মবিশ্বাস রাখুন।