এলজেবরার (Algebra) জনক ছিলেন আল খাওয়ারিজমী
- ইয়াসিন প্রধান সাজিদ
- জুন ২, ২০২১
গণিত বিষয়টি স্বাভাবিক ভাবেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আমাদের জীবনে সর্বত্রই গণিতের প্রভাব দেখা যায়। এ গণিতের একটি অংশ হলো বীজগণিত। আর এই বীজগণিতের জনকের নাম হলো আবু আব্দুল্লাহ মোহাম্মাদ।
সবদিক থেকেই জ্ঞান চর্চ্চায় ইসলামের মতো উৎসাহ আর কোন ধর্মে পাওয়া যায়না। কুরআনের বিভিন্ন আয়াতে কুরআনের কথা নিয়ে চিন্তা করার ও গবেষণা, এমনকি সত্যতার যাচাই করা হয়েছে। ইসলামে বিভিন্ন জায়গা সফর করে আল্লাহর নিদর্শন দেখার ও তা নিয়ে চিন্তা করার নির্দেশ এসেছে। আমাদের জীবনের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রের বিষয়াদির কথা ও তার বিশ্লেষন কোরআনে সঠিক ভাবে দেওয়া হয়েছে।
আরো পড়ুনঃ কাঁচা হলুদ এবং মধু খেলে কি কি উপকার পাবেন জেনে নিন
বীজগণিতের জনকের নাম আবু আব্দুল্লাহ মোহাম্মাদ। পুরো নাম আবু আবদুল্লাহ মোহাম্মদ ইবনে মুসা আল খাওয়ারিজমী।
তার জন্ম সোভিয়েত রাশিয়ার আরব সাগরে পতিত আমু দরিয়ার নিকটে একটি দ্বীপের নিকটে অবস্থিত খোয়ারিজম নামক শহরে। এটি ছিলো পারস্যের অন্তর্গত খিভা প্রদেশে। আল খাওয়ারিজমী তাঁর বাল্যকাল ও কৈশোর সম্পর্কে কিছুই স্পষ্টভাবে জানা যায় নি। তবে আনুমানিকভাবে কিছু বইয়ের মধ্য থেকে তথ্যমতে ৭৮০ খ্রিস্টাব্দে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।
খলিফা মামুনের বিশাল লাইব্রেরীতে আল খাওয়ারিজমী চাকুরী গ্রহণ করেন। ঐখান থেকেই তিনি বিজ্ঞানের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। অসীম ধৈর্য সহকারে অধ্যয়ন করে তিনি বিজ্ঞানের যাবতীয় বিষয়ের সঙ্গে পরিচিতি লাভ করেন। ধীরে ধীরে তিনি বিজ্ঞানের যাবতীয় জ্ঞান অর্জন করতে থাকেন। আর সে থেকেই তিনি গণিত বা অন্যান্য বিষয়ে গবেষণা করেন।
আরো পড়ুনঃ গর্ভকালীন অবস্থায় ডায়াবেটিস থাকলে আবার কি হতে পারে?
আল-খাওয়ারিজমী ছিলেন একজন জগতবিখ্যাত গণিতবিদ। তার সময়ের গণিতের জ্ঞানকে তিনি এক অভাবনীয় সমৃদ্ধতর পর্যায়ে নিয়ে তুলেন। তার অমায়িক জ্ঞান এবং ধৈর্য দিয়ে তিনি তার জ্ঞানের বাস্তব চিত্র তুলে ধরেন। একজন গণিতবিদ হওয়ার পাশাপাশি খাওয়ারিজমী ছিলেন একজন উল্লেখযোগ্য জ্যোতির্বিদ।
এত সাধনা আর গবেষনা শেষে তিনি হয়ে উঠেন বীজগণিত তথা এলজেবরার (Algebra) জনক। তিনি প্রথম তাঁর একটি বইয়ে এই এলজাবরার নাম উল্লেখ করেন। বইটির নাম হলো “আল–জাবর ওয়া–আল–মুকাবিলা”। তার বই নিয়ে নিবন্ধটির শেষ অংশে থাকবে। তিনি বিজ্ঞান বিষয়ক বহু গ্রিক ও ভারতীয় গ্রন্থ আরবীতে অনুবাদ করেছেন। আর প্রায় সবগুলোই একেক সময়ে অনেক বেশি নাম করেছে।
বীজগণিত-এর ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান খাওয়ারিজমীর।এ ক্ষেত্রে তিনি সবচেয়ে বেশী উত্কর্ষতা লাভ করেছিলেন। তার হাতেই গণিতের এই শাখাটি পরবর্তী সময়ে আরও সমৃদ্ধতর হয়। বর্তমান যুগ পর্যন্ত গণিত বিদ্যায় যে উন্নয়ন এবং এর সহায়তায় বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় যে উন্নতি ও আবিষ্কার সম্ভব হয়েছে তার মূলে রয়েছে আল-খোয়ারিজমী’র উদ্ভাবিত গণিত বিষয়ক নীতিমালারই বেশী অবদান। গণিত বিষয়ের অনন্য এক অংশ বীজগণিত। আমাদের মানবজাতির চলাফেরার বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই বীজগণিত অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আবার বিজ্ঞান বিষয়ক বিভিন্ন গবেষনায় ও বীজগণিতের অবদান রয়েছে।
আরো পড়ুনঃ এই গরমে সৌন্দর্য ধরে রাখবে অ্যালোভেরা
তার রচিত বই “কিতাব আলজিবর ওয়াল মুকাবিলা’ হতে বীজগণিতের ইংরেজী নাম অ্যালজেবরা (Algebra) উত্পত্তি লাভ করে। Algorithm শব্দটি Alkhwarizmi নামের ল্যাটিন অপভ্রংশ algorismi হতে উত্পত্তি লাভ করেছে। এলজাবরায় লিনিয়ার বা একঘাত এবং কোয়াড্রেটিক বা দ্বিঘাত সমীকরণ আছে। আমরা সাধারণত কোন সমীকরণ সমাধান করে যখন x অথবা y-এর একটি করে মান পাই। যেগুলো এক ঘাত সমীকরণ নামে পরিচিত।আবার দ্বিঘাত সমীকরণে দুটি মান পাওয়া যায়।এই দুই ধরণের সমীকরণের বিশ্লেষণধর্মী ব্যাখা তুলে ধরেন আল-খাওয়ারিজমী।
এ মহান বৈজ্ঞানিক ৮৪৭ বা ৮৪০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে মৃত্যুমুখে পন্ডিত হন। খলিফা মামুনের মৃত্যুর পরও তিনি এক যুগের অধিক জীবিত ছিলেন।বিজ্ঞানে মৌলিক অবদানের জন্য আল-খাওয়ারিজমী চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন। আমরাও কুরআন ও সহীহ অনুসরণ করার পাশাপাশি তা নিয়ে গবেষণা ও চিন্তা করলে এমন অনন্য কিছু আমরাও করতে পারবো ইনশা-আল্লাহ । আল্লাহ আমাদের সহায় হোক।
আরো পড়ুনঃ শরীরের কালচে দাগসহ, ব্রণ দূর করবে কলার খোসার এই ফেসপ্যাকটি
তথ্যঃ গুগল