মাইক্রোসফটের ইঞ্জিনিয়ার হলেন জিপিএ-৫ না পাওয়া মাহজাবিন চৌধুরী!
- কবিতা আক্তার
- জুলাই ২৮, ২০২১
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করেছেন ফাহিমা মেহজাবিন চৌধুরী। অগ্রণী স্কুল এন্ড কলেজে পড়ার সময় মাঝারি মানের ছাত্রী ছিলেন তিনি। S.S.C - H.S.C তেল জিপিএ-৫ পাননি তিনি। এ নিয়ে পরিবারের সদস্যদের কাছে লজ্জার মুখে পড়তে হয়েছিল তাকে। তবে জিপিএ-৫ যে সফলতার চাবিকাঠি নয় এটা প্রমাণ করেছেন মাহজাবিন। ক্লাসের পেছনের সারিতে থাকা সেই মাহজাবিন এখন মাইক্রোসফটের ইঞ্জিনিয়ার।
আরো পড়ুনঃ কড়াই মাংস
'সারফেস ল্যাপটপ' দলে 'ডিজাইন ভেরিফিকেশন ইঞ্জিনিয়ার' পদে আছেন মাহজাবিন। তিনি এখন পরিবারের গর্ব। সাধারণত মাইক্রোসফটের ১ জন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার বছরে ৮০ লক্ষ থেকে ১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা পেয়ে থাকেন। সেই অনুযায়ী মাহজাবিন ও বছরে ১ কোটি টাকার আশেপাশে বেতন পাবেন। জানা গেছে, নর্থ-সাউথ ইউনিভার্সিটি থেকে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশলী অনার্স করেছেন ফাহিমা মাহজাবিন চৌধুরী। তবে তেমন একটা ভালো ছাত্রী ছিলেন না তিনি। যদিও ক্লাসের সব সময় সামনের দিকে বসতেন। আগ্রহ নিয়ে টিচারদের সঙ্গে কথা বলতেন।
গবেষণায় ভাল ছিলেন বলে শিক্ষকরা তাকে পছন্দ করতেন। তবে পরীক্ষা ছাড়া সবকিছুই তাঁর কাছে ভালো লাগতো। মেহজাবিনের অনার্সের থিসিসের বিষয় ছিল সোলার সেল ( সৌর-কোষ ) তাই ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিস্কো স্টেট ইউনিভার্সিটি তে ভর্তি হওয়ার পর ক্যাম্পাসের সৌর চালিত গাড়ি নিয়ে কাজ করার সুযোগটা লুফে নিয়েছিলেন। হাতে কলমে কাজ শেখার, কাজ করার এমন আরও যত সুযোগ পেয়েছেন, সবই কাজে লাগাতে চেষ্টা করেছেন তিনি।
আরো পড়ুনঃ ‘বিয়ের পর তো চাঁদনী চকেই নিয়ে যেতে পারলা না?’
২০১৮ সালের মাস্টার্স শেষ করে মাহজাবিন চাকরি খোঁজা শুরু করলেন। অনেকগুলো জায়গায় আবেদন করার পরও বেশির ভাগ জায়গা থেকেই সাড়া পাননি। কারণ তার অভিজ্ঞতা ছিলনা। আবার তিনি তখনও স্টুডেন্ট ভিসায় আমেরিকায় ছিলেন। স্টুডেন্ট ভিসায় চাকরি করতে হলে কোম্পানির স্পনসরশিপ নিতে হয়। যুক্তরাষ্ট্রে যেহেতু এখন নানা রকম কড়াকড়ি আছে, বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান স্পন্সর হতে চায় না।
যুক্তরাষ্ট্রের একটি মেডিকেল সরঞ্জাম তৈরির প্রতিষ্ঠান যোগ দেন মাহজাবিন। ছয় মাস সেখানে কাজ করার পর আসে মাইক্রোসফটের কাজ করার প্রস্তাব। শুরুতে মাহজাবিন খুব একটা উৎসাহ দেখাননি। কারণ ক্যালিফোর্নিয়া ছেড়ে সিয়াটলে যাওয়ার ইচ্ছা তার ছিল না। তার ওপর অফিসেও তখন বেশ কাজের চাপ। তবে ইন্টারভিউ দিলেন। মাইক্রোসফটের একজন ম্যানেজার তার ইন্টারভিউ নিলেন। পরে তাকে দ্বিতীয়বার ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাকা হল।
আরো পড়ুনঃ ঘরোয়া পদ্ধতিতে ত্বকে নিয়ে আসুন এক্সট্রা গ্লো
মাইক্রোসফট থেকে জানানো হলো, চার ঘণ্টার ইন্টারভিউ হবে। আবার ইন্টারভিউ হলো। কদিন পর মাইক্রোসফট কর্তৃপক্ষ ও মাহজাবিনকে জানালো, তাকে ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে সিলেক্ট করা হয়েছে। এসএসসি ও এইচএসসি তে জিপিএ-৫ না পেয়েও মাহজাবিন প্রমাণ করলেন সফলতার জন্য জিপিএ-৫ মাপকাঠি হতে পারে না। তিনি এখন বাংলাদেশের গর্ব।