অলরাউন্ডার শুধু সাকিব আল হাসান না, রুমানা বৈশাখীও!
- ফারজানা আক্তার
- ফেব্রুয়ারি ৪, ২০১৮
বর্তমানে আমাদের দুইটা জগৎ, ভার্চুয়াল জগৎ এবং বাস্তব জগৎ। কিছু কিছু মানুষ রয়েছে যারা বাস্তব জগতের তারকা, কিছু মানুষ ভার্চুয়াল জগতের। তবে কিছু মানুষ রয়েছে যারা ভার্চুয়াল এবং বাস্তব দুই জগতেরই তারকা। রুমানা বৈশাখী সেই দুই জগতের তারকাদের অন্যতম একজন। বর্তমানে যারা সোশ্যাল মিডিয়াতে একটিভ তারাও রুমানা বৈশাখীকে চিনে এবং জানে, বাস্তব জগতে যারা মুখ গুঁজে বই পড়ে (পড়ার বই না, গল্পের বই ) তারাও চিনে রুমানা বৈশাখীকে।
শুধু বই পোকারাই কি রুমানা বৈশাখীকে চিনে? ভোজন রসিক মানুষেরাও রুমানা বৈশাখীকে চিনে। শব্দ দিয়ে মানুষের মন ছুঁয়ে এই মেয়েটির মন ভরে নি, তাই রান্নাতে হাত দিয়েছে। সেখানেও সফল রুমানা বৈশাখী। নিজের সৃষ্টিশীলতা দিয়ে মানুষের মন ছোঁয়ার আনন্দ যে পেয়েছে , তাকে ধরে রাখার সাধ্য কার ! রান্নাতেও নিজের এক্সপেরিমেন্ট এবং ফলাফল স্বরূপ ভোজন রসিকদের প্রিয় হয়ে গেলেন তিনি। কোনো এক অনলাইন ম্যাগাজিনের লাইফস্টাইল বিভাগ খুব জনপ্রিয়। মানুষ যখন কোনো কিছু থেকে উপকৃত হয়, সেই উপকৃত কাজটি কে বা করা করেছে তাদের তারা খুঁজে বের করে নেন। তখন কৃতজ্ঞতাস্বরূপ মানুষ সেই প্রিয় ম্যাগাজিনের লাইফস্টাইল বিভাগে কে বা কারা কাজ করছে সেটা খুঁজতে যেয়ে দেখে রুমানা বৈশাখী। অলরাউন্ডার শুধু সাকিব আল হাসান না, রুমানা বৈশাখীও।
আমরা কৃষক চিনি, মালি চিনি, মাঠ চিনি এবং বাগান চিনি কিন্তু শহরের কোনো এক বিলাসিতাময় ফ্ল্যাটে বসে ঝাকঝমকময় বারান্দাকে একইসাথে বাগান এবং মাঠ বানানো কৃষাণীকে কি চিনি ? আপনাদের কাছে নিশ্চয় রসিকতা মনে হচ্ছে আমার এই কথা ? কিন্তু সত্যি বলছি রুমানা বৈশাখী নামের মানুষটি সেই কৃষাণী। সে বিলাসিতাময় ফ্ল্যাটের বারান্দায় সবজি চাষ করেন এবং একই সাথে ফুলের চারা রোপণ করেন। সবজি এবং ফুল একই সাথে পাশাপাশি হাসাহাসি করেন। তিনিও তাদের সেই হাসিতে যোগদান করেন এবং জীবন যে কতটা সুন্দর সেটা নিজে অনুভব করেন এবং অন্যকে অনুভব করান।
রুমানা বৈশাখীকে নিয়ে লেখার আগে আমি রুমানা বৈশাখী নামের অর্থ খুঁজলাম। গুগল আমাকে যে অর্থ দিলো সেটা হলো, "রুমানা অর্থ: মনোযোগী, উদার, স্বাভাবিক, গুরুতর, উপযুক্ত" আর "বৈশাখী অর্থ: সক্রিয়, ভাগ্যবান, স্বাভাবিক, উদার, অস্থির" । আমি জানি না এই অর্থ কতটা সঠিক কিন্তু আমি মানি এই নামের প্রতিটা অর্থ আমি যে রুমানা বৈশাখীকে নিয়ে লিখছি তার জন্য ১০০% সঠিক। রুমানা বৈশাখীকে নিয়ে ছোট্ট একটি উদাহরণ আমি দেই। ওমেন্সকর্নার যার মুখে এখনো দুধের গন্ধ মানে যার বয়স এখনো ৬মাস হয় নি, সেখান থেকে আমি রুমানা বৈশাখীর সাথে যোগাযোগ করলাম একটা ইন্টারভিউয়ের জন্য। কথা বলার সময় আমি তাকে বললাম 'প্লিজ না বলবেন না কিন্তু আপু'।
তিনি আমাকে চিনেন না, জানেন না শুধু আমার এই কথাটাতেই তিনি হা বললেন। আমি বললাম মুখোমুখি ইন্টারভিউ নিবো। তিনি বললেন, "বাসায় চলে আসো। " সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো এতটা ব্যস্ত একজন মানুষ আমাদের জন্য পুরো একটি দিন ফ্রি রাখলেন। জ্যাম ঠেলে ঠুলে যখন আমরা (আমি আর তানজিলা আক্তার)তার বাসায় গেলাম তার অতিথি আপ্যায়ণ দেখে আমরা মুগ্ধ এবং বিমোহিত। কিসের ইন্টারভিউ আর কিসের কাজ ! আমাদের গল্প চলছে তো চলছেই। তিনি আমাদের সাথে এমনভাবে গল্প করছেন , মনে হচ্ছে আমাদের জনম জনমের পরিচয়। এই মানুষদের কাছ থেকে আমরা শিখি, অনেক কিছু শিখি। ব্যবহার শিখি, ভালোবাসা শিখি, মানুষকে আপন করে নেওয়া শিখি। আসার সময় তিনি আমাদের অনেক কিছু উপহারও দিয়ে দিলেন।
আমি যে ছোট্ট উদাহরণ দিলাম সেটার সাথে তার নামের অর্থগুলো মিলিয়ে নিয়ে আপনারা ঠিক করে নেন তার নামের অর্থ তার সাথে যায় কিনা। নাম কখনো মানুষকে বড় করে না, মানুষই নামকে বড় করে। রুমানা বৈশাখী তার নামের অর্থ গুলোকে অন্য এক উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। এই মানুষটিকে নিয়ে আমার মনে যতটা কনফিউশন ছিলো, দেখা হওয়ার পর সেটা সম্পূর্ণ দূর হয়েছে। এখন তার জন্য মনে শুধু সম্মান, ভালোবাসা এবং দোয়া। আমরা দ্বিতীয় রুমানা বৈশাখী চাই না, তবে রুমানা বৈশাখীর উচ্চতায় অন্য নানা গুনে গুণান্বিত আরো অনেক মানুষ দেখতে চাই।