রহস্যে ঘেরা আলুটিলা সুড়ঙ্গ! 

  • রেজবুল ইসলাম 
  • ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৮

খাগড়াছড়ি শহর থেকে আট কিলোমিটার পশ্চিমে মাটিরাংগা উপজেলার আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র- এ রয়েছে এক রহস্যময় গুহা বা সুড়ঙ্গ। মাতাই হাকর বা দেবগুহা নামে স্থানীয় অধিবাসীদের কাছে যার পরিচিতি সেটি এক রহস্যময় পাহাড়ি সুড়ঙ্গ। আলুটিলা সুড়ঙ্গ। নাম টিলা হলেও আলুটিলা কিন্ত মোটেও টিলা নয়। বরং আলুটিলা খাগড়াছড়ি জেলার সবচেয়ে উঁচু পর্বত। আলুটিলার আগের নাম ছিল আরবারী পর্বত। ইতিহাস থেকে জানা যায়, খাগড়াছড়িতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় খাদ্যের অভাব প্রচণ্ডভাবে দেখা দিলে এলাকার মানুষজন খাদ্যের সন্ধানে এই পর্বত থেকে বুনোআলু সংগ্রহ করে তা খেয়ে বেঁচে ছিল। সেই থেকে পর্বতটির নাম হয়ে যায় আলুটিলা।

এই পর্বতের সীমানা বেশ বড়। উত্তরে মাহজনপাড়া, দক্ষিণে তইকাথাং মৌজা, পুর্বে মালছড়া ও ঠাকুরছড়া গ্রাম এবং পশ্চিমে সাপমারা পর্বতশ্রেণি। আলুটিলার উচ্চতা সমুদ্র সমতল থেকে তিন হাজার ফুট। মং সার্কেলের অধীনে এই আলুটিলা। রহস্যময় গুহা বা সুড়ঙ্গে  যেতে হলে প্রথমেই দরকার হবে পর্যটন কেন্দ্রের নির্ধারিত মুল্যের টিকিট কাটা। টিকেটের মুল্য ১০ টাকা। এরপর নিতে হবে মশাল। মশালের মূল্য ১০ টাকা। ভিতরে প্রবেশের শুরুতেই দেখা যায় গেটের দুইপাশে শতবর্যী দুটি বিশাল বটগাছ ঠায় দাঁড়িয়ে। এ যেন দর্শনার্থীদের স্বাগত জানানোর প্রকৃতির পদ্ধতি। পর্যটন কেন্দ্রের মূল গেটের ভিতরে ডান ও বাম দুই দিকে, দুটি  রাস্তা গেছে। বামদিকের রাস্তার শেষ প্রান্তে কাঙ্ক্ষিত আলু টিলা সুড়ঙ্গ। আর ডানদিকের রাস্তা দিয়ে কিছুটা সময় হাটলে চোখে পড়বে সরু একটি পাহাড়ি পথ। পাহাড়ের ঢাল বেয়ে এই পথটি নিচের দিকে নেমে গেছে। এই পথ বেয়ে আরেকটু নিচে নামলেই রয়েছে এক অপূর্ব ঝরনা। ঝর্নার পানি নেমে যাচ্ছে ঝিরি বরাবর। অবশ্য এই জায়গাতে একটি বাঁধ দিয়েছে পাহাড়ি লোকজন। ঝরনার পানি আটকে রাখার জন্য। ঝরনার পানি তারা খাবার ও অন্যান্য কাজে ব্যবহার করে। গুহার ভেতর প্রবেশ করার পর যে কারোরই মনে ভয় লাগতে পারে। এই গুহার বুঝি শেষ নেই। এই অন্ধকার পাতালের বুঝি শেষ নেই। কিন্ত আরো কিছুদুর এগিয়ে যাওয়ার পর যখন আলোর রেখা দেখা যাবে তখন মনে হবে। আহা জীবনটা কতই না রোমাঞ্চের। কতই না আনন্দের!  আতঙ্ক, আনন্দ. রোমাঞ্চ এর মিশ্র অনুভূতির এক অপূর্ব আনন্দচ্ছটা পেতে প্রবেশ করতে হবে আলুটিলার এই পাতাল সুড়ঙ্গে।

যেভাবে যাবেনঃ রাজধানী ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ির উদ্দেশ্যে বিভিন্ন আরামদায়ক বাস ছাড়ে প্রতিদিন কমপক্ষে ১০-১৫টি। সাইদাবাদ, কমলাপুর, গাবতলী, ফকিরাপুল, কলাবাগান ও টিটি পাড়া থেকে টিকেট সংগ্রহ করে এস আলম, স্টার লাইন, শ্যামলী, সৌদিয়া, শানিত্ম স্পেশাল ও খাগড়াছড়ি এক্সপ্রেসযোগে খাগড়াছড়ি যাওয়া যায়। ঢাকা থেকে ট্রেনে ফেনী এসেও হিলকিং অথবা হিল বার্ড বাসে চড়ে খাগড়াছড়ি যাওয়া যায়। চট্টগ্রামের অক্সিজেন থেকেও শানিত্ম স্পেশাল ও লোকাল বাসে উঠে যাওয়া যায় খাগড়াছড়িতে।

তথ্য এবং ছবি : গুগল 
 

Leave a Comment