ঘুরে আসুন আহসান মঞ্জিল 

  • ওমেন্সকর্নার ডেস্ক 
  • ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৮

আহসান মঞ্জিল বুড়িগঙ্গা নদীর উত্তর তীরে পুরান ঢাকার ইসলামপুর এলাকায় অবস্থিত। এটি ব্রিটিশ ভারতের উপাধিপ্রাপ্ত ঢাকার নবাব পরিবারের বাসভবন ও সদর কাচারি ছিল। সুরম্য এ ভবনটি ঢাকার অন্যতম শ্রেষ্ঠ স্থাপত্য নিদর্শন। ঢাকা মহানগরীর উন্নয়ন ও রাজনৈতিক ক্রমবিকাশের বহু স্মরণীয় ঘটনাসহ অনেক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্মৃতি বিজরিত এই ‘আহসান মঞ্জিল’। অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথমদিকে জালালপুর পরগনার (বর্তমান ফরিদপুর-বরিশাল) জমিদার শেখ ইনায়েত উল্লাহ আহসান মঞ্জিলের বর্তমান স্থানে একটি বাগান বাড়ি তৈরি করেন। পরবর্তীকালে তাঁর পুত্র বাগান বাড়িটি এক ফরাসি বণিকের কাছে বিক্রি করে দেন। ফরাসিরা বাণিজ্য কুটির হিসেবে এটি ব্যবহার করতেন। ১৮৩০ সালে বেগমবাজারে বসবাসকারী নওয়াব আবদুল গণির পিতা খাজা আলীমুল্লাহ এই কুঠিটি ক্রয় পূর্বক সংস্কার করে বসবাস শুরু করেন। নওয়াব আবদুল গণি ১৮৬৯ সালে প্রাসাদটি নতুন করে নির্মাণ করেন। ভবনটির অনেক পরিবর্তন ও পরিবর্ধনের ফলে পুরনো সেই ভবনের কোনো অস্তিত্ব বর্তমানে নেই। নতুন ভবন নির্মাণের পর তিনি তাঁর প্রিয় পুত্র খাজা আহসান উল্লাহর নামানুসারে এর নামকরণ করেন আহসান মঞ্জিল। বর্তমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল, সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ বা বুড়িগঙ্গা সেতু থেকে প্রায় একই সময় লাগে এই আহসান মঞ্জিল এ আসতে। পায়ে হেঁটে এর প্রত্যেকটা জায়গা থেকে আহসান মঞ্জিল এ আসতে প্রায় দশ থেকে পনের মিনিট সময় লাগবে। আহসান মঞ্জিল এর গা ঘেষে রয়েছে দেশের বৃহত্তম ফলের আড়ত।

পরিদর্শনের সময়সূচী :

গ্রীষ্মকালীন সময়সূচী: (এপ্রিল-সেপ্টেম্বর) – (শনিবার-বুধবার) সকাল ১০.৩০ টা – বিকাল ৫.৩০ টা। শুক্রবার- বিকেল ৩.০০ টা – সন্ধ্যা ৭.৩০ টা।

শীতকালীন সময়সূচী: (অক্টোবর –মার্চ) – (শনিবার-বুধবার) সকাল ৯.৩০ টা – বিকাল ৪.৩০ টা। শুক্রবার – দুপুর ২.৩০ টা – সন্ধ্যা ৭.৩০ টা।
বৃহস্পতিবার – সাপ্তাহিক ছুটি ও অন্যান্য সরকারি ছুটির দিন জাদুঘর বন্ধ থাকবে।

একজন গাইড লেকচারার দর্শকদের প্রদর্শনী বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য সর্বদা নিয়োজিত থাকেন। আহসান মঞ্জিল জাদুঘরের গ্যালারিতে মিষ্টি মধুর সংগীতের সুর বাজতে থাকে সবসময়। প্রাপ্ত বয়স্ক বাংলাদেশি দর্শকের জন্য প্রবেশ মূল্য ২০ টাকা, বাংলাদেশি শিশু দর্শক পাঁচ টাকা আর বিদেশি দর্শকের জন্য ৭৫ টাকা। প্রতিবন্ধীদের কোনো টিকিট ক্রয় করতে হয় না। আগে থেকে আবেদন করলে ছাত্রছাত্রীদের বিনা মূল্যে জাদুঘর দেখতে দেওয়া হয়। বহিরাঙ্গনে ভাড়ার বিনিময়ে চলচ্চিত্রায়ণ করা যায়। একজন দর্শক এখানে এসে ভ্রমণের মাধ্যমে চিত্তবিনোদনের পাশাপাশি ঐতিহাসিক জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন।
 
টিকেট কাউন্টার : আহসান মঞ্জিলের পূর্ব পাশে যে ফটকটি উন্মূক্ত, তার ডান পাশে টিকেট কাউন্টার অবস্থিত। কাউন্টার হিসেবে যেসব কক্ষ ব্যবহৃত হচ্ছে , পূর্বে এগুলো সৈনিকদের ব্যারাক ও গার্ডরুম ছিল।
 
টিকেটের মূল্য তালিকা : প্রাপ্ত বয়স্ক বাংলাদেশি দর্শক = ৫ টাকা জনপ্রতি, অপ্রাপ্ত বয়স্ক বাংলাদেশি শিশু দর্শক (১২ বছরের নিচে) = ২ টাকা জনপ্রতি, সার্কভুক্ত দেশীয় দর্শক = ৫ টাকা জনপ্রতি, অন্যান্য বিদেশি দর্শক = ৭৫ টাকা জনপ্রতি, উল্লেখ্য যে, প্রতিবন্ধি দর্শকদের জন্য কোন টিকিটের প্রয়োজন হয় না ও পূর্ব থেকে আবেদনের ভিত্তিতে ছাত্র-ছাত্রীদের বিনামূল্যে জাদুঘর দেখতে দেয়া হয়। আহসান মঞ্জিল জাদুঘর ছাত্র-ছাত্রীদের বিনা টিকিটে প্রবেশ করতে দেয়া হয়ে থাকে। অগ্রিম টিকিটের কোন ব্যবস্থা নেই। তবে উল্লিখিত দিনগুলোতে আহসান মঞ্জিল বন্ধ হওয়ার ৩০ মিনিট আগ পর্যন্ত টিকেট সংগ্রহ করা যায়।

তথ্য এবং ছবি : গুগল 

Leave a Comment