
গোলাপ গ্রাম , যেখানে একই সাথে পাবেন গোলাপের সুবাস আর কাঁটার আঘাত।
- ওমেন্সকর্নার ডেস্ক
- অক্টোবর ২১, ২০১৭
শহরের কোলাহল জীবন এবং কাজের অবসাদ থেকে মুক্তি পেতে আমরা তো অনেক জায়গাতেই ঘুরতে যাই। তবে সবসময় দূরে ঘুরতে যাওয়া যায় না। সময়ের যেমন ব্যাপার থাকে আবার খরচের চিন্তাও করতে হয়। খরচের চিন্তা যতটা করতে হয়, তার থেকে বেশি কষ্ট সময় ম্যানেজ করা। কম সময়ে এবং কম খরচে ঢাকার আশেপাশে এমন কিছু জায়গা আছে যা আপনি চাইলেই ঘুরে আসতে পারেন।
অনেক জায়গার মধ্যে একটি জায়গা হলো গোলাপ গ্রাম (Golap Gram, Sadullahpur) যা ঢাকার অদূরে সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নে অবস্থিত। ঢাকার খুব কাছেই সাভারের তুরাগ নদীর তীরে সাদুল্লাপুরের অবস্থান। চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস রাখতে পারেন, এই গ্রাম আপনার যান্ত্রিক জীবনের অনেকটা ক্লান্তিই দূর করে দিবে।
পুরো গ্রামটাই যেনো গোলাপের গ্রাম। উঁচু জমিগুলোতে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছে মিরান্ডি জাতের গোলাপ। লাল, হলুদ , সাদা – কত বর্ণের গোলাপ যে আছে তা লিখে বা বলে শেষ করা যাবে না। যতদূর যাবেন গোলাপের সুবাস আপনাকে মুগ্ধ রাখবে। সকালের শিশির ভেজা গোলাপের নরম আলো গ্রামের বুক চিরে আঁকাবাঁকা সরু পথ ধরে হেঁটে যাচ্ছে। চারপাশে ফুটে আছে টকটকে লালা গোলাপ। এখানের যে কোনো বাগান থেকে আপনি গোলাপ কিনতে পারবেন। তবে তারা ১০০-১৫০-এর কম গোলাপ বিক্রি করতে চায় না।
কিভাবে যাবেন :
কয়েকটি রুটে আপনি গোলাপ গ্রাম ভ্রমণ করতে পারেন।
রুট -১ঃ মিরপুর -১ অথবা মিরপুর – ১০ কিংবা গাবতলী থেকে রিকশায় করে সহজেই দিয়াবাড়ি বটতলার ঘাটে চলে যেতে পারেন। মনে রাখবেন এই দিয়াবাড়ি কিন্ত উত্তরার দিয়াবাড়ি না। আপনি সিএনজি চালিত অটোরিকশা অথবা ট্যাক্সিক্যাবেও দিয়াবাড়ি বটতলা ঘাটে যেতে পারেন। সেখান থেকে শ্যালো ইঞ্জিনের নৌকা ১০ মিনিট পরপর ছেড়ে যায় সাদুল্লাপুরের দিকে। তাছাড়া সেখানে স্পিডবোট, কোষা নৌকাও রয়েছে। আপনি ইচ্ছে করলে চুক্তিতে ভাড়া নিয়েও সাদুল্লাপুর যেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে কোষা নৌকার ভাড়া ৩০০ টাকা, শ্যালো নৌকা ২৫০ টাকা, স্পিডবোট ৫০০ টাকা পড়বে। আপনি হেঁটেই পুরো সাদুল্লাপুর চক্কর দিতে পারবেন। গ্রামের মাঝ দিয়ে চলে যাওয়া পিচঢালা পথে রিকশা নিয়েও ঘুরতে পারেন।
রুট -২ঃ
টঙ্গি ষ্টেশন থেকে আপনি সি এন জি রিজার্ভ করে কামারপাড়া হয়ে বিরুলিয়া ব্রিজে যেতে পারেন। সেখান থেকে ২০০টাকা ভাড়া পড়বে আপনার। বিরুলিয়া ব্রিজ থেকে অটোতে করে আরকান বাজারে যেতে আপনার ১০টাকা লাগবে, সেখান থেকে অটোতে ১০ টাকায় সাদুল্লাহপুর বা সরাসরি ২০ টাকায় বিরুলিয়া ব্রিজ থেকে সাদুল্লাহপুর যেতে পারেন ।
রুট ৩ : আপনি উত্তরা থেকে যেতে চাইলে উত্তরা হাউজ বিল্ডিং, নর্থ টাওয়ার বা মাসকট প্লাজা থেকে সোনারগাঁ জনপথ ধরে লেগুনাতে দিয়াবাড়ি, তারপর সামনে একটু হেঁটে মেইনরোড, লোকাল গাড়িতে বিরুলিয়া ব্রিজ যেতে পারেন। বিরুলিয়া ব্রিজ থেকে আরাকান বাজার যেতে ১০টাকা অটো ভাড়া, সেখান থেকে অটোতে ১০ টাকায় সাদুল্লাহপুর বা সরাসরি ২০ টাকায় বিরুলিয়া ব্রিজ থেকে সাদুল্লাহপুর যেতে পারবেন।
আপনি ইচ্ছে করলে এখন থেকে নৌকা ভাড়া করে যেতে পারেন। সেক্ষেত্রে রিজার্ভ ভাড়া পর্বে ৫০০টাকার মতো। একটি নৌকাই ২৫জনের মতো বসতে পারে। আমি আপনাদের পরামর্শ দিবো বিরুলিয়া ব্রিজ এর রুট ধরে যেতে। রাস্তার দুইপাশ জুড়েই গোলাপের ক্ষেত। অটো থামিয়ে থামিয়ে আপনি গোলাপের বাগান কভার করতে পারবেন। নৌকা চলাচল ৬টার পর বন্ধ হয়ে যায়।
কোথায় খাবেনঃ
সাদুল্লাপুর ঘাটের কাছে খাবারের হোটেল আছে। সেখানেই খেয়ে নিতে পারেন। সাহদুল্লাপুর ঘাটে পৌঁছানোর পর ঘাটের বট গাছের নিচে বসে চা-নাস্তা করে নিতে পারেন। দল বেঁধে গেলে হোটেলের লোকদের আগেই রান্নার কথা বলতে হবে।