ধানমন্ডি লেক, অবসরের প্রান কেন্দ্রের জানা অজানা কিছু কথা
- ওমেন্সকর্নার ডেস্ক
- নভেম্বর ১৮, ২০১৭
নগর জীবনের প্রতিটি দিন কাটে ব্যস্ততায়। অবসর বলতে সাপ্তাহে শুধু একদিন ছুটি। কিন্ত সেখানেও খুব একটা শান্তি নেই, রয়েছে হরেক রকম পারিবারিক- সামাজিক ব্যস্ততা। এভাবেই একসময় মন হয়ে যায় বিষণ্ন। সময় স্বল্পতার কারণে দূরে কোথাও যাওয়াও হয় না।
ইচ্ছে থাকলে আর কিছু সময় বের করতে পারলে শহরের মধ্যেও কিন্তু কাটাতে পারেন মন ভালো করার কিছু সময়। ছেড়ে আসতে পারেন স্বস্তির নিশ্বাস। ছুটির দিনে পরিবার-পরিজন নিয়ে নির্মল বাতাসে, সবুজের স্পর্শে ঘুরে আসতে পারেন ধানমন্ডি লেক থেকে। লেক এলাকায় পা রাখা মাত্রই সবুজ মনোরোম পরিবেশ অনেকটা স্বস্তি দেবে আপনাকে, যেখানে পাবেন স্নিগ্ধ বাতাসের সঙ্গে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের উদ্বেলিত মিশ্রণ।
লেককে ঘিরে রয়েছে অনেকগুলো বসার স্থান। প্রত্যেকটির আবার রয়েছে ভিন্ন নাম। যেমন ব্যাচেলর পয়েন্ট, জিয়া চত্বর, শুটিং পয়েন্ট, জাহাজবাড়ি পয়েন্ট, দ্বীপ চত্বর, লেক ভিউ সাইড, রবীন্দ্র সরোবর, ডিঙ্গি চত্বর, সুরধনী চত্বর, শতায়ু অঙ্গন ইত্যাদি। সবগুলো স্থানই লেকটির তীর ঘেঁষে তৈরি। যেখানে বসে খোলা হাওয়ায় মিশে পরিবার, বন্ধু কিংবা প্রিয়জনের সঙ্গে আড্ডায় মেতে উঠতে পারেন আপনিও।
ধানমন্ডি লেকের ইতিহাস :
ব্রিটিশ শাসন অবসানের পর ১৯৫৬ সালে উপযুক্ত পরিবেশ ও আবাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে ধানমন্ডি লেকের জন্ম। সর্বমোট ২৪০.৭৪ হেক্টর জমিতে ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা গড়ে তোলা হয়। সমগ্র ধানমন্ডি এলাকার প্রায় ১৬ শতাশং জুড়ে রয়েছে এই লেকটি। এর বর্তমান দৈর্ঘ্য ৩ কি.মি, প্রস্থ ৩৫ থেকে ১০০ মিটার, গভীরতা ৪.৭৭ মিটার, জলাশয়ের মোট আয়তন ৩৭.৩৭ হেক্টর।
ধানমন্ডি লেকটি ২ নম্বর সড়ক থেকে শুরু করে ধানমন্ডি ২৭ নম্বর সড়কে এসে শেষ হয়েছে। বিশাল এই জলধারে সৌখিন মাছ শিকারিরা এখানে অর্থের বিনিময়ে মাছ শিকার করতে পারেন। নৌকা ভ্রমণের শখটাও মেটাতে পারেন এই লেকের পানিতে। ভ্রমণের স্বাদ পেতে আপনাকে যেতে হবে ডিঙি চত্বরে। গেলেই পেয়ে যাবেন নৌকা।
নৌকাভ্রমণের প্রথম ৩০ মিনিটের জন্য আপনাকে ১০০ টাকা ভাড়া গুণতে হবে, পরবর্তী ১৫ মিনিটের জন্য ভাড়া হবে ৫০ টাকা। নৌকায় চড়তে হলে আপনাকে মেনে চলতে হবে কিছু নির্দেশনা। যেমন প্রতি নৌকায় শিশুসহ সর্বোচ্চ তিনজন, শিশু ছাড়া দু’জন চড়তে পারবেন। অভিভাবক ছাড়া ১০ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুদের নৌকাভ্রমণ নিষিদ্ধ। লেক এলাকার অন্যতম আকর্ষণ রবীন্দ্র সরোবর।
এখানের খোলা মঞ্চে সারা বছরই থাকে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ছুটির দিনগুলোতে নাটক, গান, আবৃত্তিসহ হয় নানা ধরনের অনুষ্ঠান। সরোবরের পাশে বসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আড্ডা দেওয়াও অনেকের পছন্দ। এটুকুর জন্যও অনেকে ছুটে যান রবীন্দ্র সরোবর।
জলাধার ঘেরা সবুজের সমারোহ এ জায়গাটিতে পাখির কিচিরমিচির শব্দে মাঝে মাঝে নিজেকে হারিয়ে ফেলতে পারেন অজানায়। এখানে রয়েছে কৃষচূড়া, বটগাছ, রেইনট্রি, আমগাছ, কাঁঠালগাছ, বকুলগাছ, কদমগাছসহ নানা প্রজাতির গাছ। তাই পাখিদের আনাগোনাও এখানে অনেকটা বেশি।অবকাশ অথবা আড্ডা শেষে খাবারের প্রয়োজন হলে লেকের ভেতরেই অনেক খাবারের দোকান পেয়ে যাবেন।
লেকে রয়েছে কয়েকটি ব্রিজ। এগুলো আপনার ভ্রমণে আনবে ভিন্নতা। লেকের জলে নিজের ছায়াটুকু দেখার খুব বেশি মেলে না শহুরে মানুষের। সুযোগটি হাতছাড়া করবেন না!
তথ্য এবং ছবি : গুগল