কম খরচে দেখে আসুন সিলেটের শিমুল বাগান
- ফারজানা আক্তার
- জানুয়ারি ২০, ২০১৮
ঘুরাঘুরি করতে কে না পছন্দ করে কিন্তু বাজেটের কথা চিন্তা করে অনেকেই চুপসে যায়। মনের ভিতর মনের কষ্ট পুষে রাখে। কিন্তু অনেকেই জানে না অল্প টাকায়ও অনেক সুন্দর সুন্দর জায়গায় ঘুরে আসা যায়। আজ থাকছে তেমনি সুন্দর একটি জায়গায় কথা।
কিভাবে যাবেন : রাতের ট্রেনে কমলাপুর থেকে চলে যাবেন সিলেট। শোভন চেয়ার ভাড়া নিবে ৩২০ টাকা। সিট পেতে হলে অবশ্যই কষ্ট করে ২-১ দিন আগে যেয়ে টিকেট কেটে নিয়ে আসবেন। অনলাইনেও সম্ভবত টিকেট কাটা যায়। ভোর বেলা আপনাকে সিলেট নামিয়ে দিবে । একটা রিকশা নিয়ে (ভাড়া ৩০ টাকা) ক্বীন ব্রীজ ক্রস করে পানসী/পাচ ভাই / ভোজনবাড়ি (সব একই জায়গায় অবস্থিত) রেস্টুরেন্টে সকালের নাস্তা সেরে নিবেন। আরেকটা রিকশা নিয়ে চলে যাবেন আম্বরখানা। রেস্টুরেন্ট থেকে ১৫ টাকা করে ভাড়া নিবে । আম্বরখানা পয়েন্ট থেকে সুনামগঞ্জ এর বাস যেখান থেকে ছাড়ে সে পর্যন্ত শেয়ারে সি এন জি নিয়ে যাবেন । ভাড়া জনপ্রতি ১৫ টাকা করে । বাসস্ট্যান্ডের নাম কুমারগাও। সি এন জি থেকে নেমে হাতের ডানে টিকেট কাউন্টার আছে সুনামগঞ্জগামী বিরতিহীন বাসের। ভাড়া ৯০ টাকা। সময় লাগবে দেড় থেকে ২ ঘন্টা।
সুনামগঞ্জ নেমে নতুন ব্রীজের ওই পাড়ে মোটরবাইক দাঁড়িয়ে থাকে অনেক। কথা বলে বারেক টিলা নদীর এই পাড় পর্যন্ত ভাড়া নিবে ২০০ টাকা ( দামাদামি করে ১৫০ তেও নাকি যাওয়া সম্ভব!) একটাতে ২ জন চড়া যায়। জনপ্রতি তাহলে পরল ১০০ করে। জাদুকাটা নদীর সামনে নামিয়ে দিবে। ৫ টাকা দিয়ে খেয়া অতিক্রম করে ওইপাড়ে গেলেই বারেক টিলা , যা থেকে সুন্দর পুরো জাদুকাটা নদী দেখা যায়। পাশেই সীমান্ত ,তাই উত্তর দিকে বেশীদূর না যাওয়াই ভাল। বারেক টিলা থেকে নেমে চায়ের দোকান আছে কিছু ,তাদের জিজ্ঞেস করলেই শিমুল বাগান যাওয়ার পথ দেখিয়ে দিবে। বিকেল পর্যন্ত হেঁটে হেঁটে ঘুরে ,ছবি তুলে আবার বারেক টিলার সামনে থেকে মোটরবাইক নিয়ে সুনামগঞ্জ ফেরত আসতে পারবেন । সুনামগঞ্জ থেকে সরাসরি বাস আছে ,চাইলে রাতের বাসে করে ডিনার সেরে ঢাকা ফেরা সম্ভব, বা কম পয়সায় আসতে চাইলে অথবা বাসে হালকা এলার্জি থাকলে আবার সিলেট এসে ট্রেনে করেও ঢাকা ফেরা সম্ভব। আর যাদের ট্রেনে যেতে আপত্তি তারা সরাসরি সুনামগঞ্জের বাসে যেতে ও আসতে পারেন। ভাড়া ৫০০ টাকা।
কোথায় থাকবেন : একদিন ঘুরে যাদের পোষাবে না ,তারা শিমুল বাগান ঘুরে আরেকটা মোটরবাইক নিয়ে তাহিরপুর উপজেলা চলে যেতে পারেন। সেখানে ডাক বাংলোতে অল্প খরচে থাকা যায়। যাবার পথে ট্যাকেরঘাট ,নীলাদ্রি লেকও ঘুরে গেলেন। আবার তাহিরপুর রাতে থেকে ভোরবেলা মোটরবাইক বা ট্রলারে টাঙ্গুয়ার ভেতর পর্যন্ত ঘুরে আসতে পারেন। এখন প্রচুর অতিথি পাখি আছে হাওড়ে। পানি কম থাকলেও পাখি দেখে মন ভরবে। তাহিরপুর বা হাওড়ের আশে পাশে এলাকার রেস্তোরাঁয় গিয়ে পাখি খাওয়ার লোভ দেখালেও খাবেন না। মনে রাখবেন ,আমরা না খেলেও কিন্ত তারা আর পাখি শিকার করবে না। বিক্রি করতে না পারলে তাদের আর মেরে লাভ কি?! " অতিথি পাখি শিকার বন্ধ কর" টাইপ মানববন্ধন করা থেকে এটা হাজার গুনে কার্যকর তরিকা। হাওড়ের মানুষ খুবই সাধারন, সাধারন ভাবেই তাদের সাথে মিশুন ,আখেরে লাভ আপনারই! চিপ্স/ বিস্কুট/চকলেট এর প্যাকেট ,খালি পানির বোতল ফেলে আসবেন না প্লিজ। ব্যাগের একটা পকেটে রেখে দিন। শহরে এসে ফেলুন ,হাওড়ে না। একদিনের এই ট্রিপে এইভাবে ২ জন গিয়ে ঘুরে আসলে সময় লাগবে ২ রাত-১ দিন। খরচ হবে সর্বোচ্চ ১৫০০ টাকা ( ঢাকা সিলেট -যাওয়া আসা ট্রেনে) । সবার ভ্রমন আনন্দময় আর নিরাপদ হোক।
ছবি ও তথ্য : গুগল