নিঝুম দ্বীপ সম্পর্কে বিস্তারিত
- ইয়াসিন প্রধান সাজিদ
- জানুয়ারি ২৭, ২০২১
নিঝুম দ্বীপ বাংলাদেশের একটি ছোট্ট দ্বীপ। এটি নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার অন্তর্গত। নিঝুম দ্বীপের পূর্ব নাম ছিলো চর-ওসমান, আবার কেউ কেউ একে ইছামতীর চর বলত। এ চরে প্রচুর ইছা মাছ (চিংড়ীর স্হানীয় নাম) পাওয়া যেত বলে একে ইছামতির চরও বলা হত। নিঝুম দ্বীপের আয়তন মোট ১৬৩.৪৫ বর্গকিমি। দ্বীপের মোট জনসংখ্যা 25,000। নিঝুম দ্বীপে ৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং একটি উচ্চ-মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো দ্বীপের ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থিত। ১৯৭০ এর ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে দ্বীপটিতে কোন প্রানের অস্তিত্ব ছিলনা।
সব তছনছ হয়ে যায় ভয়াবহ সেই ঘূর্ণিঝড়ে। ঘূর্ণিঝড়ের পরে তৎকালীন হাতিয়ার জননন্দিত নেতা আমিরুল ইসলাম কালাম সাহেব দ্বীপটিতে পরিদর্শনে গিয়ে দেখেন যে কোন প্রানের অস্তিত্ব নাই, তাই তিনি আক্ষেপের সুরে বলে ছিলেন হায় নিঝুম! সেখান থেকেই দ্বীপটির নতুন নামকরণ হয় নিঝুম দ্বীপ। দ্বীপের মাটি চিকচিকে বালুকাময়, তাই জেলেরা নিজ থেকে দ্বীপের নামকরণ করে দেয় বালুর চর। এই দ্বীপটিতে মাঝে মাঝে বালুর ঢিবি বা টিলার মতো ছিল বিধায় স্থানীয় কিছু সংখ্যক লোকজন এই দ্বীপকে বাইল্যার ডেইল বা বাল্লারচর বলেও ডাকত।
আরো পড়ুনঃ ‘ওয়াটার থেরাপি’ -তে আপনার ওজন কমিয়ে নিন খুব সহজে
নিঝুম দ্বীপের এক দিকে মেঘনা নদী আর তিন দিকে বঙ্গোপসাগর ঘিরে রেখেছে। নিঝুমদ্বীপের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হলো মাইলের পর মাইল জুড়ে কেওড়া বন আর সেই বনের পাতার আড়ালে লুকিয়ে থাকা চিত্রা হরিণ। নিঝুম দ্বীপে হরিণ এবং মহিষ ছাড়া অন্য কোনো হিংস্র প্রাণী নেই। পরিসংখ্যান অনুযায়ী দ্বীপে হরিণের সংখ্যা প্রায় ২২,০০০। নিঝুম দ্বীপে রয়েছে প্রায় ৩৫ প্রজাতির পাখি। এছাড়াও শীতের মৌসুমে অজস্র প্রজাতির অতিথির পাখির অভয়ারণ্যে পরিণত হয় নিঝুম দ্বীপ। নিঝুম দ্বীপে বিশাল এলাকা পলিমাটির চর।
তাছাড়াও নিঝুম দ্বীপের পাড়গুলোতে উচু সারিবদ্ধ তালগাছ এবং মৃত অনেক গাছের অস্তিত্ব ও পাওয়া যায়। বাংলাদেশের অন্যতম ৫-৭ টি ভ্রমণ স্থানের মধ্যে নিঝুম দ্বীপ বহুল পরিচিত একটি স্থান। শুধু দেশের পর্যটক নয়, দেশ বিদেশ থেকেও অনেক পর্যটক ছুটে আসে এই দ্বীপে নিঝুম সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য।
তথ্যঃ গুগল