আজমির শরিফ ঘুরতে যাবেন কি?
- ওমেন্সকর্নার ডেস্ক
- জানুয়ারি ২৪, ২০১৮
ভ্রমণ করতে মন চায় না এমন লোক খুঁজে পাওয়া সত্যি অনেক কঠিন ব্যাপার। ঠিক তেমনি অনেকের অনেক কিছুই কাছ থেকে দেখার জন্য চেষ্টা করে কেউ পারে আর কেউ হয়তো পারে না শুধু অতৃপ্তিই রয়ে যায়। প্রথমে জেনে নি আজমির শরিফ কী ?
খাজা মইনুদ্দিন চিশতী হলেন চিশতীয় ধারার ভারতীয় উপমহাদেশের সবচেয়ে বিখ্যাত সুফি সাধক। তিনি ১১৪১ সালে জন্মগ্রহণ করেন ও ১২৩৬ সালে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি গরিবে নেওয়াজ নামেও পরিচিত। মইনুদ্দিন চিশতীই উপমহাদেশে প্রথম এই ধারা প্রতিষ্ঠিত ও পরিচিত করেন। তিনি ভারতে চিশতী ধারার মাধ্যমে আধ্যাত্মিক ধারা বা সিলসিলা এমনভাবে পরিচিত করেন ;পরবর্তীতে তাঁর অনুসারীরা যেমন, বখতিয়ার কাকী, বাবা ফরিদ, নাজিমদ্দিন আউলিয়াসহ (প্রত্যেকে ক্রমানুযায়ী পূর্ববর্তীজনের শিষ্য) আরো অনেকে ভারতের ইতিহাসে সুফি ধারাকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যান।
ধারনা করা হয়,খাজা মইনুদ্দিন চিশতী ৫৩৬ হিজরী/১১৪১ খ্রিস্টাব্দে পূর্ব পারস্যের সিসটান রাজ্যের চিশতীতে জন্মগ্রহণ করেন।তিনি পারস্যে বেড়ে উঠেন। পনেরো বছর বয়সে তার পিতা-মাতা মৃত্যুবরণ করেন। তিনি তাঁর পিতার কাছ থেকে একটি বাতচক্র (উইন্ডমিল) ও একটি ফলের বাগান উত্তরাধিকারসূত্রে লাভ করেন। কিংবদন্তী অনুসারে, একদিন তিনি তাঁর ফলবাগানে পানি দিচ্ছিলেন তখন তার ফলবাগানে আসেন বিখ্যাত সুফি শেখ ইবরাহিম কুন্দুজী (কুন্দুজী নামটি জন্মস্থান কুন্দুজ থেকে এসেছে)। যুবক মইনুদ্দিন তটস্থ হয়ে যান এবং কুন্দুজীকে কিছু ফল দিয়ে আপ্যায়ন করেন। এর প্রতিদানস্বরূপ কুন্দুজী মইনুদ্দিনকে এক টুকরা রুটি দেন ও তা খেতে বলেন। এই পর তিনি তার সম্পত্তি এবং অন্যান্য জিনিসপত্র গরীবদের মাঝে বিতরণ করে দেন। এরপর তিনি বিশ্বের মায়া ত্যাগ করে জ্ঞানার্জন ও উচ্চ শিক্ষার জন্য বুখারার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন।
কিভাবে যাবেন?
আজমীর শরীফ যেতে হলে প্রথমে যেতে হবে ঢাকা থেকে কলকাতা।কলকাতার শিয়ালদহ স্টেশন থেকে সরাসরি আজমীরের ট্রেন পাওয়া যায়। এর মধ্যে অনন্যা এক্সপ্রেস উল্লেখযোগ্য।এই ট্রেনে যেতে সময় লাগবে প্রায় ৩৪ ঘণ্টা।এছাড়াও শিয়ালদহ স্টেশন থেকে আজমীর সুপার ফাস্ট এক্সপ্রেসে যেতে পারেন।সময় লাগবে ২৭ ঘন্টা ৪০ মিনিট।ভাড়া এসি থ্রী-টায়ার ২৮০০ রুপি।শিয়ালদহ স্টেশন থেকে রাত ১১.০৫ মিনিটে ছেড়ে যায়।। ক্ষেত্রবিশেষে সময় বেশিও লাগতে পারে। ট্রেনটি আজমীরের রেল স্টেশনে নামিয়ে দেওয়ার পর মাজার সড়কে যেতে অটো রিকশায় ৩০ রুপি, রিকশায় ২০ রুপি লাগবে।এছাড়াও জয়পুর থেকে প্রাইভেট গাড়ী ভাড়া করে যেতে পারেন।সময় লাগবে ২ ঘন্টা।
আর পারলে আজমির শরিফ দেখে আগ্রার তাজমহল আর আগ্রা ফোরট দেখে আসতে পারেন। মাত্র ৩৬৫ কিমি. দূরে। আজমির থেকে ট্রেনে করে গেলে ৭/৮ ঘণ্টা লাগবে। আজমির শরিফ দেখে রাতেই ট্রেনে উঠবেন আর ভোর বেলা আগ্রা ফোরট বা আগ্রা ক্যান্টনমেন্ট নামবেন। তারপর একটা অটো ভাড়া করে সরাসরি তাজমহল চলে যাবেন ,অটো ভাড়া নিবে ১০০ রুপির মত। এরপর ৫৩০ রুপি দিয়ে টিকিট কেটে প্রবেশ করবেন আর দেখা শেষ হলে বের হয়ে আগ্রা ফোরট দেখতে যাবেন মাত্র ২ কিমি. দূরে । ৩০ রুপি দিয়ে টিকিট কেটে প্রবেশ করবেন। এরপর রাতের ট্রেনেই আগ্রা টু কলকাতা চলে আসবেন, তাহলে আগ্রা আর এক্সট্রা দিন থাকার দরকার নেই। এই সব কিছুই আগে থেকে টিকিট কেটে নিয়ে তারপর ভ্রমণ করতে হবে নতুবা সম্ভব না কারণ টিকিট পেতে একদিন/দুইদিন থাকা লাগতে পারে।
ওমেন্সকর্নার ডেস্ক / আরআই