ভারতের অজন্তা গুহা
- ইয়াসিন প্রধান সাজিদ
- মার্চ ৩০, ২০২১
যখনই ভারত সম্পর্কিত তথ্যাদি জানার আগ্রহ প্রকাশ করা হয়, তখন ভারতের বিভিন্ন বিষয়াদির মধ্যেই দর্শনীয় অথবা তথ্যবহুল একটি বিষয় হলো ভারতের অজন্তা গুহাসমূহ। এই গুহা সম্পর্কিত অনেক কিছু জানার আছে আর তাছাড়া এই গুহা ভারতসহ আরো কিছু দেশের কাছে বিশেষ করে পর্যটনকেন্দ্র এবং দর্শনীয় স্থান হিসেবেই বেশি পরিচিত।
অজন্তা গুহাগুলো মূলত ভারতের মহারাষ্ট্রীয় গভীর খাড়া গিরিখাতের পাথর কেটে খোদাই করা প্রায় ৩০টি গুহা-স্তম্ভ। গুহাগুলো আসলে খ্রিষ্টপূর্ব দোসরা শতাব্দী থেকে খ্রিষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীর মধ্যে নির্মিত হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। এই গুহাগুলোতে পাওয়া ছবি ও ভাস্কর্য, তৎকালীন বৌদ্ধধর্মীয় শিল্পের উৎকৃষ্ট নিদর্শন।
আরো পড়ুনঃ ঘরের কাজের মাধ্যমেই গড়ে তুলন আকর্ষণীয় ফিগার
অজন্তার দেয়ালের চিত্রগুলিতে বুদ্ধের জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ের কাহিনি বর্ণিত রয়েছে, যেগুলো দেখেই বুদ্ধের জীবন সম্পর্কিত অনেক কিছু জানা যায়। ফ্রেস্কো ধাঁচের এই দেয়ালচিত্রগুলোর জীবন্তরূপ এবং এগুলো তে নানা রঙের সমৃদ্ধ ও সূক্ষ্ম প্রয়োগ এগুলোকে ভারতের বৌদ্ধ চিত্রশিল্পের সর্বোৎকৃষ্ট নিদর্শনে পরিণত করেছে। আর এমন আরো অনেকগুলো নিদর্শন এবং কার্যকলাপের জন্যই অনেক মানুষ এই গুহা পরিদর্শনে আসে। গুহাগুলো মহারাষ্ট্রের আওরঙ্গবাদ জেলার জলগাঁও রেলস্টেশনের কাছে, আজিন্তা বা অজন্তা গ্রামের প্রান্তে অবস্থিত।
১৯৮৩ সাল থেকে এই স্থানটি একটি ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট। অজন্তাশৈলী ভারতে এবং অাশেপাশের প্রায় অনেক দেশগুলোতে ইতিমধ্যেই যথেষ্ট প্রভাব ফেলেছে, বিশেষ করে জাভাতে। সংশ্লিষ্ট দুই মিনার গোষ্ঠীর সঙ্গে,ভারতীয় ইতিহাসের দুই গুরুত্বপূর্ণ সময় জড়িয়ে আছে। সামগ্রিক অজন্তা গুহা, ভারতীয় শিল্পবিবর্তনের ব্যতিক্রমী সাক্ষ্য বহন করে, সেইসাথে বৌদ্ধসম্প্রদায়ের ভূমিকা নির্ধারণ করে, বুদ্ধিজীবী ও ধর্মীয় প্রেক্ষাগৃহগুলো, ভারতে গুপ্ত এবং তাদের তাৎক্ষণিক উত্তরাধিকারীর বিদ্যালয়গুলো ও অভ্যর্থনা কেন্দ্রগুলো। তাছাড়াও জানা অজানা অনেক ইতিহাস ও জীবনী সম্পর্কে ধারনা লাভ করা যায় শুধুমাত্র ঐ গুহাগুলো সুন্দরভাবে পরিদর্শনের মাধ্যমে।
অজন্তা গুহাসমূহের ২৯টি গুহা প্রায় ২০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে খনন শুরু করা হয়েছিল, কিন্তু তারা ইলোরার অণুকূলে ৬৫০ খ্রিষ্টাব্দে পরিত্যক্ত হয়। পাঁচটি গুহাতে মন্দিরগুলো ছিল এবং চব্বিশটি গুহাতে মঠ ছিল যেগুলো প্রায় ২০০ বৌদ্ধ সন্ন্যাসী ও শিল্পীদের দ্বারা অধিকৃত ছিল বলে মনে করা হয়।
আরো পড়ুনঃ ‘ওয়াটার থেরাপি’ -তে আপনার ওজন কমিয়ে নিন খুব সহজে
অজন্তা গুহাসমূহ একালে এসে জনপ্রিয় হলেও এর ইতিহাস শুরু হয়েছিল আরো অনেককাল আগে থেকেই। চীনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাং-এর ভ্রমণলিপিতে অজন্তার সম্পূর্ণ বর্ণনা আছে। গুহাগুলো দীর্ঘকাল অরণ্যের আড়ালে বিস্মৃত অবস্থায় পড়ে ছিল। ১৮১৯ সালে, এগুলো নতুন করে আবিষ্কৃত হয়। অজন্তা ও অদূরবর্তী ইলোরা ভারতের অন্যতম প্রধান পর্যটনকেন্দ্র। আর অনেকদেশ থেকেই অজন্তা গুহাসমূহ থেকে ঐতিহাসিক সকল ঘটনা জানতে পর্যটনরা সারা বছর ধরে ভিড় জমাতে থাকে।
তথ্যঃগুগল